পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে বঙ্গোপসাগর কোল ঘেঁষে অবস্থিত বৃহৎ ব-দ্বীপ জেলা ভোলার দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন চরফ্যাশন খামারবাড়ী রিসোর্ট। এই রিসোর্ট ইতোমধ্যে পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। আধুনিক মানের ২৩টি কটেজ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে পর্যটকদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন রিসোর্টের জিএম লিনাজ রোজারিও।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য চরাঞ্চল। এখানে রয়েছে পর্যটন শিল্প বিকাশের অপার সম্ভাবনা। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে ইতোমধ্যে চরফ্যাশন উপজেলা পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এখানকার জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের নজর জেনিক ফিশারিজ খামারবাড়ি রিসোর্ট। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা চর কুকুরি-মুকরি, তারুয়া, ঢালচর এলাকায় মানবসৃষ্ট ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের পাশেই নতুন ভাবে সংযোজন হয়েছে দৃষ্টিনন্দন খামারবাড়ী।
ভোলা জেলা সদর থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে চরফ্যাশন উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে প্রিন্সিপাল নজরুল নগর ইউনিয়নে ‘শারেক খালি’ গ্রামে ২০০৯ সালে ১৪ একর জমিতে খামারবাড়ি চালু হয়। পর্যায়ক্রমে বর্ধিত পরিসরে এখন ৫০ একর জমির ওপর এ দর্শনীয় স্থানটি অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দৃষ্টিনন্দন চরফ্যাশন খামারবাড়ি রিসোর্ট পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ভ্রমণ পিপাশুরা ঘুরতে এসেই তারা প্রথম দর্শনীয় স্থান হিসেবে বেঁচে নিচ্ছে খামারবাড়ি রিসোর্ট। প্রতিদিন শতশত মানুষ দুর-দুরান্ত থেকে এখানে ঘুরতে আসেন। বাহারি প্রজাতির গাছ আর শীত মৌসুমী ফুলের সমারোহ পুরো এলাকা জুড়ে নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ঘেরা। পুরো খামারবাড়ির অভ্যন্তরে শুধু সবুজের অরণ্য। খামারবাড়ী রিসোর্টে পিকনিক পার্টিদের জন্য স্বল্প খরচে আলাদা-আলাদা প্যাকেজের ব্যবস্থা রয়েছে।
খামার বাড়িতে রয়েছে ২টি মিনি হ্যালিপেড। পাহাড়ের আদলে কৃতিম ঝর্না, সু-উচ্চ আধুনিক কিল্লা, দেশি ও বিদেশি খাবারের রেস্টুরেন্ট, ২৩টি কটেজ, ১টি বাংলো, ১টি কনফারেন্স রুম, ২টি সুইমিংপুল ও আধুনিক মানের রিসিপশন সেন্টার। এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের।
খামার বাড়ী রিসোর্টের পরিচালক কামাল উদ্দিন সৈকত বলেন, ১৬ ডিসেম্বর খামার বাড়ী রিসোর্ট চালু হয়। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা ইতোমধ্যে রিসোর্টে আসতে শুরু করেছে।
দৃষ্টিনন্দন ‘জ্যাকব টাওয়ার’ : পর্যটনের অপার সম্ভাবনা দ্বীপ চরফ্যাশনে অবস্থিত জ্যাকব টাওয়ার। শহরের মূল প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই টাওয়ার। পর্যটকদের কাছে দিন দিন আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে কুইন আইল্যান্ড অব ভোলা খ্যাত পর্যটন এলাকা। পূর্বপ্রান্তে বেতুয়া মেঘনার পাড়ে অবস্থিত প্রশান্তি পার্ক ও দক্ষিণে তেঁতুলিয়ার পাড়ে অবস্থিত খেজুরগাছিয়া সি-বীচ। শঙ্খচিল আর মেঘ ছুয়ে যাওয়া বলাকাদের ডানা ঝাপটে দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছুটে চলা এবং মেঘনার অসীম জলরাশি আর নদীতটে ঢেউয়ের দোলায় ঝিকিমিকি বালি কণা ছুয়ে দেখতে যে কারোও মন ছুটে আসবে। নয়ন খুলে আকাশপানে তাকালেই শতশত প্রজাপতির ডানায় দিগন্তে মিশে যাওয়া নীল আকাশ ছুয়ে যাবে আপনার হারানো মনকে।
মেঘনার তীরে খেজুর গাছিয়া : হাজারীগঞ্জ ইউনিয়ন থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ খেজুর গাছিয়ায় রয়েছে দীর্ঘ আয়তনের বিচ এবং নদী সংলগ্ন পলাশ ও কৃষ্ণচ‚ড়ার ফুলসহ নানা রকমের উদ্ভিদের সবুজ আচ্ছন্নে ঘেরা কেওরা ও ম্যানগ্রোভ বন। পাশাপাশি সমুদ্রের পানে ছুটে চলা রং বেরঙ্গের নৌকা ও ট্রলারে করে মাঝিদের জাল ফেলার ছবিও যেন শিল্পীর তুলিতে জলচিত্রের মতো মনোমুগ্ধকর আঁকা এক প্রাকৃতিক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে।
বেতুয়া প্রশান্তি পার্ক : অন্যদিকে বেতুয়ায় মেঘনার পাড়ে গড়ে ওঠা প্রশান্তি পার্কের রেস্টিং বে আর গোলঘরসহ নদীর কিনারায় রেলিং ধরে চা ও কপি’তে চুমুক দিয়ে জলের আলতো ঢেউয়ে শতশত চিলের মাছ শিকারের চিত্র দেখতেও মন্দ লাগবে না কারোরই। এছাড়াও বেতুয়ায় ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর বাস্তবায়নে নির্মিত বেড়ি বাঁধের ঢালে ঘুরতে আসছে শতশত পর্যটক। প্রশান্তী পার্কে রয়েছে নানা রকমের পাকপাখালীসহ সামুদ্রিক বৈচিত্রময় পরিবেশ। বেতুয়া নদীবন্দর থেকে ঢাকা টু বেতুয়ার থেকে সরাসরি পর্যটকরা ঘুরতে আসছে চরফ্যাশনে। এছাড়াও সড়ক পথে পদ্মা সেতু পাড় হয়ে বরিশাল থেকে স্পীড বোটে ভোলা থেকে সরাসরি বাস যোগে চরফ্যাশন থেকে যাওয়া যায় এসব পর্যটন এলাকায়।
ম্যানগ্রোভ কুকরি-মুকরি : চরকুকরি-মুকরির সবুজ বন, সাগরের নির্মল বাতাস, চিত্রা হরিণের ছুটে চলার সঙ্গে অতিথি পাখির জলকেলির অপরূপ দৃশ্য মুগ্ধ করে প্রকৃতি প্রেমীদের শীতের শুরু থেকেই চর কুকরি-মুকরিতে ভিড় করছেন পর্যটকরা। বনের মধ্য দিয়ে বয়ে যায় সরুখাল। পর্যটকদের নৌকা-ট্রলার ছুটে চলে তখন মন হারিয়ে যায় সবুজের রাজ্যে। আর সবুজের বুক ছিড়ে এগিয়ে গেলেই সাগরতীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে নারিকেল বাগান, তাড়–য়া বিচসহ অসংখ্য চর। এসব চরে তাকালেই মনে হয় সাগর পাড়ের শুভ্রসাদা মেঘ আর দিগন্ত বিস্তৃত নীল আকাশ আলিঙ্গন করছে। এরই মাঝে অতিথি পাখির জলকেলি ভ্রমণ পিপাসুদের মন কেড়ে নেয় কিছু সময়ের জন্য। কুকরি-মুকরির কেওড়া ও ম্যানগ্রোভ বনে রয়েছে ২৭২ প্রজাতির উদ্ভিদ, চিত্রা হরিণ, বানর ও বুনো মহিশ সহ ৪৫ প্রজাতির প্রাণী এবং প্রায় ২০৯ প্রজাতির পাখি। এখানকার গহীন অরণ্যের বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া সুন্দরবনের আদলে খালের পাড়ে রয়েছে এক নৈসর্গিক দৃশ্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।