Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শর্তসাপেক্ষে সিলেটে পেট্রলপাম্প মালিকদের ধর্মঘট স্থগিত

আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে ঘোষিত দিন থেকেই ধর্মঘট

ফয়সাল আমীন, সিলেট থেকে | প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

সিলেটে চলছে জ্বালানি তেলের তীব্র সঙ্কট। মিলছে না চাহিদার এক তৃতীয়াংশ তেলও। সঙ্কট নিরসন না হলে আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে জেলার সব তেল পাম্প অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ডাক দিয়েছিল সিলেট জেলা পেট্রোল পাম্প মালিকরা। এতে টনক নড়ে সংশ্লিষ্টদের।

গতকাল সিলেট পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতি ও জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে এক বৈঠকে বসেন সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান। গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নাজমুল হক জানান, শর্তসাপেক্ষে আগামী ২২ জানুয়ারির অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন সিলেটের জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা।
তিনি আরো জানান, সিলেটের পাম্পগুলোর জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণে সরকার ভাড়া বহন করার শর্তে ভৈরব থেকে চাহিদা মতো তেল আনার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেছেন জেলা প্রশাসক। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ২২ তারিখ পর্যন্ত বিষয়টি বাস্তবায়ন হয় কি না দেখবো। যদি হয় তবে আর ধর্মঘটে যাবো না। আর যদি বাস্তবায়ন না হয় তবে আগামী ২২ জানুয়ারি থেকেই পালিত হবে ধর্মঘট।

বৈঠক সূত্র জানায়, সিলেটে জ্বালানি তেলের তীব্র সঙ্কট নিরসনে দীর্ঘদিন থেকে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছেন তেল ব্যবসায়ীরা। বার বার তারা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন এ সমস্যা সমাধানে। কিন্তু প্রতিবারই আমাদের আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল এ বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্টস এ্যান্ড পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং সিলেটে জ্বালানি তেল বিপণনকারী কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ডিপো কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে পারছে না রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন কোম্পানিগুলো। রেলের ওয়াগন সঙ্কটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জ্বালানি তেল না আসায় এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক মাস সিলেটের ব্যবসায়ীরা ভৈরব থেকে জ্বালানি এনে সচল রেখেছিলেন পাম্পগুলো। কিন্তু পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় সঙ্কট নিরসনে আন্দোলনের পথ বেছে নেন তারা।
এদিকে, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, সিলেট বিভাগে ১১৪টি পাম্পের মাধ্যমে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হয়। বিভাগে প্রতিদিন ১০ লাখ লিটার ডিজেল এবং ৩ লাখ লিটার পেট্রোল ও অকটেনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ওয়াগন সঙ্কটের কারণে গড়ে প্রতিদিন ডিজেল, অকটেন ও পেট্রোল মিলিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে ৫ থেকে ৬ লাখ লিটার। সপ্তাহে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে তেলবাহী একটি লরি আসার কথা থাকলেও আসছে মাত্র ২ থেকে ৩ দিন। যে কারণে সিলেটে তেলের সঙ্কট।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ডিপো ইনচার্জ এএফএম মারুফ বলেন, উচ্চ পর্যায়ে এই সমস্যার সমাধান না হলে আমাদের কিছু করার নেই। তেল ডিস্ট্রিবিউশন করা আমাদের কাজ। আমরা তেল পাব, তেল দেব। এছাড়া আমাদের কোনো কাজ নেই। কয়েক বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল না পেয়ে ক্ষোভ জানিয়ে আসছে পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন আহমেদ জানান, প্রশাসনের এবং সংশ্লিষ্ট জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের প্রতি আকুল আবেদন যদি সঠিকভাবে পর্যাপ্ত পরিবহনের ব্যবস্থা করা যায় তবে এই সঙ্কট আর থাকবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ