পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা হুশামুদ্দিন চৌধুরী ফুলতলীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি ও বিশেষজ্ঞ আলিম-উলামার সমন্বয়ে মাদরাসার জন্য অবশ্যই স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা। অনতিবিলম্বে একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করে এ কাজ শুরু করা প্রয়োজন বলে দাবি জানানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে তারা এ সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তারা কারিকুলাম ও শিক্ষা ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। স্কুল ও মাদরাসার বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে মুসলিম সভ্যতার গৌরব না থাকার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের কথা শোনেন এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।নতুন শিক্ষাক্রমের অসঙ্গতি ও পাঠ্যপুস্তকে উল্লেখিত কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী ও আপত্তিকর বিষয় নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেছেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।
প্রতিনিধিদল নিয়ে প্রায় ঘন্টাব্যাপী বৈঠকে তিনি মাদরাসার জন্য স্বতন্ত্র কারিকুলাম প্রণয়ন, সাধারণ বিষয়সংখ্যা কমিয়ে ১০০০ নম্বর নির্ধারণ, স্বকীয়তা রক্ষা, পাঠ্যপুস্তক সংশোধনসহ বিবিধ দাবি উপস্থাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মনযোগ সহকারে বক্তব্য শুনেছেন, পাঠ্যপুস্তকের অসঙ্গতি দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এবং সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেছেন।
সাথে সাথে তিনি মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা রক্ষার প্রতি গুরুত্বও প্রদান করেছেন। প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী, দারুননাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আ.খ.ম আবূ বকর সিদ্দীক, ফরিদগঞ্জ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান ও বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা নজমুল হুদা খান।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, এনসিটিবি ও বিশেষজ্ঞ আলিম-উলামার সমন্বয়ে মাদরাসার জন্য অবশ্যই স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন করা। অনতিবিলম্বে একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করে এ কাজ শুরু করা প্রয়োজন। প্রতিটি পুস্তক রচনায় মাদরাসা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ও বিশেষজ্ঞ আলিম-উলামাকে কমিটিতে রাখা এবং বিষয় নির্বাচন ও কন্টেন্ট তৈরিতে তাদের অভিমতকে প্রাধান্য দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। মাদরাসার জন্য স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের পূর্ব পর্যন্ত গত বছরের পাঠ্যপুস্তক পাঠদানের অনুমতি প্রদান করা। মাদরাসা শিক্ষার জন্য মাদরাসার মূল পাঁচটি বিষয় (কুরআন, হাদীস, আরবি ১ম পত্র, আরবি ২য় পত্র এবং আকাইদ ও ফিকহ) ঠিক রেখে সাধারণ বিষয়সমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে ১০টি বিষয়ে ১০০০ নম্বর নির্ধারণ করা। উল্লেখ্য, সাধারণ শিক্ষায়ও দশটি বিষয়ে ১০০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের বিশ^াস, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির আলোকে জাতীয় শিক্ষাক্রম তথা স্কুলের শিক্ষাক্রম, পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও পরিমার্জন করা। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ আলিম-উলামার সমন্বয়ে উক্ত কার্যাবলি কাজ সম্পাদন করা, যাতে ইসলামী বিশ^াস ও আদর্শবিরোধী এবং সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের জীবনাচারের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো বিষয় স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত না হয়।
স্কুল ও মাদরাসার পাঠ্যপুস্তক থেকে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী বিবর্তনবাদসহ বিতর্কিত ও আপত্তিকর সকল বিষয় বাদ দেওয়া। ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের নতুন বইগুলো বাদ দিয়ে বিজ্ঞ আলিম-উলামা ও ইসলামী চিন্তাবিদ সমন্বয়ে পুনর্লিখন করে প্রকাশ করা। যেহেতু দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষ মুসলমান সেহেতু মুসলিম সভ্যতা ও ইসলামী আদর্শের বর্ণনাকে এক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন।
বিভিন্ন সভ্যতার দেব-দেবীরা কে কোন কর্মের তা বইয়ে যেভাবে উল্লেখ করা হয়েছে তা সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম শিক্ষার্থীর মন-মানসকে বিভ্রান্ত করবে। তাই এগুলো বাদ দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষার্থী মূলায়নে ধারাবাহিক মূল্যায়নের পরিবর্তে পূর্বের পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রাখা। কারণ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি উপযোগী নয়। জাতীয় শিক্ষাক্রমে ১০টি বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ম শিক্ষাকে ধারাবাহিক মূল্যায়নে রাখা হয়েছে। ইসলামি শিক্ষা মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য ফরয, যা কোন অবস্থাতেই গুরুত্বহীন করা যায় না। তাই স্কুলের ইসলাম শিক্ষা বিষয়কে বোর্ড পরিক্ষায় স্থান দেওয়া জরুরী। মাদরাসার ইবতেদায়ী স্তরে বিদ্যমান সমস্যাসমূহ সমাধান করা। জনবল কাঠামোতে বিদ্যমান সমস্যাসমূহ দূরীকরণের ব্যবস্থা করা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।