পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
সিলেট অফিস : সিলেটে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘বাউল শাহ আবদুল করিম জন্মশতবর্ষ উৎসব’। গত বুধবার রাতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর ও এড. সুলতানা কামাল। ওই উৎসব উদ্বোধন করতে এসে বাউল গান শুনে তারা মুগ্ধ হয়েছে। শুধু অতিথিরাও নয়, সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজারো দর্শকশ্রোতাও বাউল গানে মাতোহারা হন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় শাহ আব্দুল করিম জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় পর্ষদ এ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। সিলেট উৎসব কমিটির ব্যবস্থাপনায় বুধবার বিকেল ৪টায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে উৎসব উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হওয়াতে একটু দেরিতে ওই উৎসব শুরু হয়। বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হন অর্থমন্ত্রী। তিনি উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শতাধিক শিল্পীর বাউল গান পরিবেশন করা শুরু হয়। কন্ঠ শিল্পী জামাল উদ্দীন হাসান বান্নার নেতৃত্বে শতাধিক শিল্পীর কণ্ঠে উচ্চারিত হতে থাকে ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’/ ‘গ্রামের নজুয়ান হিন্দু মুসলমান’। এ সময় গান শুনতে শুনতে অর্থমন্ত্রী অতিথিদের নিয়ে মঞ্চে উঠেন। ওই গান পরিবেশন শেষে সিলেট উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে অতিথিদের বরণ করা হয়। এরপর আবারও করিমের গান। এবার ‘কোন মেস্তরী নাও বানাইছে কেমন দেখা যায়’। এরপর শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। সিলেট উৎসব কমিটির আহŸায়ক ও মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ সময় তিনি বাউল আব্দুল করিমের জীবনী সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেন। নিশ্চুপ নীরবতা উপস্থিত সকলেই অর্থমন্ত্রীর স্মৃতিচারণ শুনেন। শাহ আব্দুল করিমের স্মৃতি চারণ করে বলেন, ‘বৃটিশ বিরোধি অসহযোগ আন্দোলনে আব্দুল করিম স্বপ্রণোদিত হয়ে গান গেয়ে সাধারণ মানুষকে প্রেরণা দিয়েছেন। ৫৪’র নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট সমর্থন করেও তিনি গান গেয়েছেন, গেয়েছেন ভাসানীর কাগমারী সম্মেলনেও। এবং বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তিনি গান দিয়ে প্রেরণা যুগিয়েছেন।’ অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুও তার গানের ভক্ত ছিলেন এবং সুনামগঞ্জের এক সভা করিমের গান শুনে ওই সভা স্থগিত করে দেন। পরে তিনি সারা রাত করিমের গানের আসরে কাটান।’ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, শাহ আবদুল করিম জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহŸায়ক গোলাম কুদ্দুস, নাট্যব্যক্তিত্ব ঝুনা চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেটের জেলা প্রশাসক জয়নাল আবেদীন প্রমুখ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘বাউল আব্দুল করিম ছিলেন মানুষের কবি, মানুষের শিল্পী। তিনি তার গানে দেশ এবং বিশ্বমানবতার কথা বলেছেন। তাকে বুঝতে হলে তার গান এবং সৃষ্টি নিয়ে আরও গবেষণা করতে হবে। তিনি আব্দুল করিমকে শুধু শিল্পী বা সুরকার নয়, একজন কবি এবং দার্শনিক হিসেবেও অভিহিত করেন।’ সুলতানা কামাল বলেন, ‘বাউল করিমের সৃষ্টি ও দর্শনের সাথে রবীন্দ্রনাথের গানের অনেক মিল আছে। মানবতা ও মনুষ্যত্ববোধ বুকে ধারণ করেন বলে কিছু কিছু মানুষ বড় হয়ে যান। আব্দুল করিম তেমনি একজন বড় মানুষ ছিলেন।
তিনি তার গানে মানুষের জীবন কেমন হওয়া উচিৎ তাই বলেছেন, তাই শিখিয়েছেন।’
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব শিল্পী জামাল উদ্দীন হাসান বান্না। উপস্থাপনায় ছিলেন আমিনুল ইসলাম লিটন। প্রথম দিনের অনুষ্ঠান হাজারো দর্শক উপভোগ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আব্দুল করিমের গান পরিবেশন করেন বাউল শিল্পী সুষমা দাস, হিমাশু বিশ্বাস প্রমুখ।
এরপর শাহ আব্দুল করিমের জীবনী নিয়ে নৃত্যনাট্য পরিবেশন করেন- সিলেটের নৃত্যশৈলীর শিল্পীরা। নৃত্যনাট্যটি রচনা করেন- শাকুর মজিদ, নিদের্শনায় ছিলেন নিলাঞ্জনা জুঁই। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে ওই উৎসবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।