ক‚টনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলা উচিত বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে ক‚টনীতিবিদদের কথা বলা থেকে বিরত থাকাকে গুরুত্ব দিয়ে ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাসের বিবৃতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘বিদেশি ক‚টনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলা উচিত। রাশিয়ার দূতাবাস থেকে যে বিবৃতিটা দেওয়া হয়েছে সেখানে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে। কিছু দেশ যখন কোনো সরকারকে চাপে রাখার চেষ্টা করে তখন তারা সংশ্লিষ্ট দেশে মানবাধিকারের ধূয়া তোলে। অথচ দেখা যায় যারা মানবাধিকারের কথা বলে, সে সমস্ত দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। একইসাথে কোনো দেশের রাজনৈতিক বিষয়গুলো যা একেবারেই অভ্যন্তরীণ, সে সব বিষয়েও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা- সেটিও বিবৃতিতে উঠে এসেছে। আমি মনে করি, যারা ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করে নানা ধরনের কথাবার্তা বলছিলেন, এই বিবৃতি তাদের বোধদয় হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
স¤প্রচারমন্ত্রী বলেন, একসময় আমাদের বাজেট প্রণয়নের জন্য অর্থমন্ত্রীকে প্যারিস কনসোর্টিয়ামের মিটিংয়ে ছুটে যেতে হতো। বাজেটের বেশির ভাগ অংশ আসতো অনুদান এবং ঋণ থেকে। এখন পরিস্থিতি উল্টে গেছে। আমাদের বাজেটের বেশির ভাগ, প্রায় ৯০ শতাংশ আমরা নিজেরা যোগান দেই। অনেক ক্ষেত্রে আমরা বৈদেশিক ঋণ নেই না, প্রত্যাখান করি। আমরা এখন কারো মুখাপেক্ষী দেশ না। বাংলাদেশ এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে। আমি মনে করি যখন কোনো বিদেশি ক‚টনীতিক আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করেন, সেটি আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অনেক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের মতো দাঁড়ায়। তবে এই ক্ষেত্রে আমি তাদেরকেই দোষ দেবো যারা ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে ছুটে যায় এবং তাদের পদলেহন করে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে, তারাই প্রকৃত দোষী। আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দলে সভানেত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই এবং আওয়ামী লীগের প্রত্যেক কর্মী সমর্থক চায় শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে আছেন, ততদিন দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাবেন। শুধু তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাক সেটিই নয়, আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করার ক্ষেত্রেও শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প আজকে বাংলাদেশে নেই। তিনি যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, একটি অনুন্নত দেশকে আজ যেভাবে উন্নয়শীল দেশে উন্নীত করেছেন, উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার যে প্রাণান্তর প্রচেষ্টা, আজকে বিশ্ব স¤প্রদায় সেটির প্রশংসা করছে। তার বিকল্প আওয়ামী লীগে কেউ নেই। এসময় সাংবাদিকরা বারবার পদ নিয়ে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী, তিনিই আমাদের সুপ্রিম লিডার। কে কোন পদে থাকবেন তিনিই ঠিক করবেন।
ড. হাছান বলেন, বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রাম করার জন্যই ২০ দলীয় জোট করেছিল। তারা দেখতে পেল যে, ২০ দলীয় জোটের গাড়ি মোটেও আগায়নি। এখন ২০ দল ভেঙ্গে ১২ দল করলে আরো এগুবে না, পিছিয়ে যাবে। যে ১২ দলের কথা বলা হচ্ছে আর অনেকগুলো দল অনভিজ্ঞ এবং এই ১২ দলীয় জোটের সম্মিলিত শক্তি আমাদের একটা থানায় কিম্বা ঢাকা শহরের একটা ওয়ার্ডের শক্তির চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে কম। সুতরাং এগুলো আসলে জনগণ বিবর্জিত রাজনীতিবিদদের প্লাটফর্ম ছাড়া অন্য কিছু নয়। সাংবাদিকদের সাথে প্রশ্নোত্তরের আগে অর্জন প্রকাশন থেকে প্রকাশিত এবং এইচ এম মেহেদী হাসান গ্রন্থিত ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ শেখ হাসিনা’ এবং ‘বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ’ দু’টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্য ও স¤প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, প্রকাশক আবু হাশেম সরকার, উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও গণমাধ্যমকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।