পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট ভাঙা-গড়ার রাজনীতি চলছে৷ চলছে নতুন মেরুকরণ৷ বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বর্তমানে নিষ্ক্রিয়৷
কয়েকদিন আগে এই জোটের কয়েকটি দলের সঙ্গে নতুন কয়েকটি দল যুক্ত হয়ে গঠন করা হয়েছে ৭ দলের ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’৷ এখন ১২ দল মিলে গঠন করা হচ্ছে ‘জাতীয়তাবাদী ঐক্যজোট’৷
বৃহস্পতিবার এই জোটের আত্মপ্রকাশ হবে৷ এ মাসেই নতুন সাতটি দল মিলে ঘোষণা আসছে আরও একটি জোটের৷
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এখন আর নেই৷ ডয়চে ভেলের কাছে এমনটাই বললেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন৷ তিনি বলেন, নতুন জোট যেগুলো হচ্ছে আমরা তাদের স্বাগত জানাই৷ আমাদের সবার লক্ষ্য অভিন্ন৷ পৃথক প্লাটফর্ম থেকে আমরা ঐক্যভাবে আন্দোলন করব৷ সবার উদ্দেশ্য সরকারের পতন ঘটানো।
বৃহস্পতিবার যে জোটটি আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে, তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাতীয়তাবাদী ঐক্যজোট’৷ সমমনা ১২ দল মিলে গঠন করা হচ্ছে এই জোট৷ এই জোটের শরিক দলগুলোর সবাই বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে ছিল৷ এ ছাড়া আগামী ৩০ ডিসেম্বর সমমনা ৭ দল মিলে নতুন একটি জোট গঠন করছে৷ তবে এসব জোটের কোনোটিতেই থাকছে না প্রধান শরিক দল বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপি৷
নতুন জোটে যাচ্ছে যেসব দল
নতুন এই জোটের দলগুলো হচ্ছে- মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (জাফর), মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টি, সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল, কে এম আবু তাহেরের নেতৃত্বে এনডিপি, শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে এলডিপি (একাংশ), অ্যাডভোকেট জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, মুফতি মহিউদ্দিন ইকরামের নেতৃত্বে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, মাওলানা আবদুর রকীবের নেতৃত্বে ইসলামী ঐক্যজোট, নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, অ্যাডভোকেট আবুল কাসেমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি, শফিউল আলম প্রধানের মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা, একাংশ)৷
এই জোটের নেতৃত্বে থাকবেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার৷ মুখপাত্র হিসেবে থাকবেন মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক৷ গণমাধ্যম বিষয়ে সমন্বয় করবেন শাহাদাত হোসেন সেলিম৷
নতুন জোটের বিষয়ে জানতে চাইলে মুখপাত্র মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক বলেন, আমরা ১২টি দল মিলেই এই জোট গঠন করতে যাচ্ছি৷ বৃহস্পতিবার ইনশাল্লাহ আমরা জোটের নাম ঘোষণা করব৷ যুগপৎ আন্দোলনে আমাদের সবার অবদান থাকবে৷ কিন্তু সেটাকে আরও সুসঙ্গতভাবে করার জন্য একতাবদ্ধ হতে চাচ্ছি৷ মৌলিক লক্ষ্য হচ্ছে যুগপৎ আন্দোলন, শান্তিপূর্ণভাবে সরকার পতনের আন্দোলন৷ বিএনপি রাষ্ট্র মেরামতের যে ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেছে, তার সঙ্গে অনেকাংশে ঐকমত্য রয়েছে আমাদের৷ আমাদের সবার লক্ষ্য এক ও অভিন্ন৷
জানা গেছে, সম্প্রতি গঠিত গণতন্ত্র মঞ্চের আদলেই চলমান যুগপৎ আন্দোলনে পৃথক মঞ্চ থেকে অংশ নেবে সবাই৷ নতুন জোটের আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হবে ২০ দলীয় জোট৷ সূত্র মতে, নতুন কৌশল হিসেবে বিএনপির ‘গ্রিন সিগন্যাল’ নিয়েই জোট দুটি গঠিত হচ্ছে৷ জামায়াতে ইসলামীকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত থেকেই এ কৌশল নিয়েছে তারা৷ সে লক্ষ্যে এবার বিএনপি একক মঞ্চ থেকে আন্দোলন করছে৷ কোনো জোটভুক্ত আন্দোলন করছে না এবং নতুন জোটও গঠন করেনি৷ দলটির সে সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতারা নিজেদের পছন্দের মতো জোটবদ্ধ হচ্ছেন৷ তবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে অন্য দলগুলো জোটবদ্ধ হতে রাজি নয়৷
আসছে নতুন ৭ দলীয় জোট
জানা গেছে, ২০ দলীয় জোটের শরিক সাতটি দলের পৃথক জোট গঠনে শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে৷ সম্ভাব্য এ জোটের শীর্ষ নেতা হচ্ছেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ৷ বৃহস্পতিবার ১২ দলীয় জোট আত্মপ্রকাশের পর এ জোটটির নাম ও আত্মপ্রকাশের তারিখ চূড়ান্ত হবে৷ তবে প্রাথমিকভাবে ৩০ ডিসেম্বরকে মাথায় রেখেই তারা এগোচ্ছে৷
এই জোটে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ছাড়াও থাকবে অ্যাডভোকেট মাওলানা আবদুর রকীবের নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট, সাদেক শাওনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাপ, খন্দকার লুৎফর রহমানের নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা, একাংশ), অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ ভাসানী), সাইফুদ্দীন মনির নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল) ও অ্যাডভোকেট গরীবে নেওয়াজের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ পিপলস লীগ৷
বিএনপির এই জোটের রাজনীতিকে আওয়ামী লীগ কীভাবে দেখছে, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির প্রধান এখন কে? তার বিরুদ্ধে তো চুরি, লুটতরাজের মামলায় আদালত সাজা দিয়েছে৷ ফলে তাদের নিয়ে এখন আওয়ামী লীগ ভাবে না৷ তারা রাষ্ট্র সংস্কারের যে ২৭ দফার রূপরেখা দিয়েছে সেটা হাস্যকর৷ যে দল নিজেরাই সংস্কার হতে পারে না, তারা রাষ্ট্র সংস্কার করবে কীভাবে৷ দেশ থেকে টাকা পাচারের সঙ্গে তো তারাই জড়িত৷ ফলে তারা ক্ষমতায় গেলে আবারও দেশে লুটপাটের রাজনীতি করবে৷ আর তাদের সঙ্গে যারা আছে, তাদের তো আওয়ামী লীগ কোনো দল হিসেবেই মনে করে না৷
বিএনপির ডাকে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন৷ সেদিন বিএনপি ছাড়াও আরও ৩৬টি রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথে থাকবে৷ তারা চারটি প্ল্যাটফর্মে আলাদা মোর্চা গঠন করে বিএনপির সঙ্গে অভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে৷
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।