Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোট কেনার প্রতিযোগিতা

| প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : নাসিক নির্বাচনের বাকি একদিন। এরই মধ্যে সব প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। শুরু হয়েছে প্রার্থীদের টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার প্রতিযোগিতা। প্রার্থীরা তাদের লোক দিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ভোট সিপ্ল বিতরণ করাকালে হাতে নগদ দুই হাজার  টাকা দিয়ে নিজ নিজ প্রার্থীর প্রতীকে ভোটার দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। তবে ভোটাররা বলছেন, টাকার বিনিময়ে ভোট দিলে পাঁচ বছর ওয়ার্ডে কোনো উন্নয়ন হবে না। কাউন্সিলররা উন্নয়নের বিপরীতে নির্বাচনের খরচ উঠানোর মিশনে নজর দেবে। এদিকে টাকার বিনিময়ে ভোট কেনা বন্ধ করতে প্রশাসনের একাধিক গোয়েন্দা টিম মাঠে রয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন থেকে কয়েকটি গোয়েন্দা টিম সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গোয়েন্দা নজরদারী করছে বলে  জানা গেছে।
২২ ডিসেম্বর দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মেয়র প্রার্থীদের মাঝে কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হলেও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘাত হতে পারে। সিদ্ধিরগঞ্জের একাধিক ওয়ার্ডে সরকারি দলের অনেক দাগী, সন্ত্রাসী ও একাধিক হত্যা মামলার আসামি প্রার্থী হয়েছেন। ক্ষমতার দাপটে ৫ ডিসেম্বর প্রতীক পাওয়ার পর ভোটারদের হুমকি ধামকি ও প্রতিপক্ষের পোস্টার ছিড়ে ফেলা ও নির্বাচনের প্রচার-প্রচারনণয় বিঘœ সৃষ্টি, রাতের আধারের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নগদ টাকা, থ্রি-পিছ ও কুরআন শরিফে শপথ করিয়ে তাদের পক্ষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। কুরআন শরিফে শপথ না নিলে  ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দেয়া হয় বলে জানা গেছে। এদিকে নির্বাচনের প্রচারণা শেষ ওয়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভোট কেনার দর-দাম। একটি ভোট কিনছে এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকা করে। নাসিক ১ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ওমর ফারুক দুই হাজার টাকা করে ভোট কিনছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২ নং ওয়ার্ডে সাত খুনের মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া ইকবাল ওরফে হাতি ইকবাল  প্রতিটি ভোট কিনছেন দুই হাজার টাকা করে। ৩ নং ওয়ার্ডে বাদল ও তোফায়েল পাল্লা দিয়ে ভোট কিনছেন। ৪ নং ওয়ার্ডে হাসান ও রানা ভোট কিনছে এক হাজার টাকা করে। ৫ নং ওয়ার্ডে সাদলির, শফিকুল ও আনিছ ভোট কিনছে  দুই হাজার টাকা করে। ৬ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মতিউর রহমান মতির লোক ইউসুফ, আক্তার খান, কাদীর ওরফে মাইগা কাদির, সোনা মিয়া বণিক সমিতির সভাপতির সভাপতি সাইদুল হক, শামীম জমিদার, তেল নুরু আইলপাড়া, সুমিলপাড়া, সোনামিয়া বাজার রেল লাইন চোর রাস্তা, মুড়ি কারখানা এলাকায় মহিলাদের থ্রি-পিস ও এক হাজার টাকা দিয়ে ঠেলাগাড়ি মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। ৭ নং ওয়ার্ডে টাকা বিলি করছে নয়াপাড়া, কদমতলী, কাশেম পাড়া, মধ্য কদমতলী এলাকায় আলী হোসেন আলা টাকা দিয়ে ভোট কিনছেন। নির্বাচনী আচারণবিধি বঙ্গ করে মিছিল করার অপরাধে আলা হোসেনের মিছিলটি বঙ্গ করে দেয়। তাছাড়া তার পক্ষে সুভ মধ্য কদমতলী, গ্যাস ফ্লিল্ড এলাকায় আলার পক্ষে টাকা ছড়াচ্ছে। এ ওয়ার্ডে রফিকুল ইসলাম বাবু কদমতলী, মধ্য কদমতলী, কলেজ পাড়া এলাকায় ভোটরদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট কিনছেন বলে যানা গেছে। ৮ নং ওয়ার্ডে মহসিন ভূঁইয়া, এনায়েত নগর, আইলপাড়া, কমিল্লাপট্টি, সৈদয়পাড়া, শান্তিনগর এলাকায় দুই হাজার করে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে দিলু, রমজান, শাহজাহান, সেকান্দার, সাইফুল ভূঁইয়া ও রিপন। তাছাড়া সাগর প্রধান, উজ্জল হোসেন, শওকত, সালাউদ্দিন টাকা দিচ্ছে ভোটারদের। ১০ নং ওয়ার্ডে ইফতেখার  আলম খোকনের পক্ষে ভোট কিনছে সন্ত্রাসী আমির, সেলিম, মাহাবুব, জসিম, মফিজুল, আলাউদ্দিন, জাকির হোসেন ও বিল্লালসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী  বাহিনী। এ ওয়ার্ডে হিন্দু ভোটারদের প্রতি নিয়ত হুমকি দিচ্ছে ওইসব সন্ত্রাসীরা।
র‌্যাব-১১ এএসপি আলেপ উদ্দিন জানান, সিটি নির্বাচনে প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাব থাকবে। নির্বাচনের কোনোরকম সংহসিতা, অনিয়ম ও টাকার বিনিময়ে কেউ ভোট কিনছে তথ্য পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাবের গোয়েন্দা টিম কাজ করছে।
এ ব্যাপারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, টাকার বিনিময় ভোট কেনা বন্ধ করতে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থার কাজ করছে। তাছাড়া র‌্যাব, ডিবি পুলিশের কয়েকটি টিম প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছে। যে প্রার্থী টাকা দিয়ে ভোট কিনবে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নাসিক নির্বাচন

২০ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ