পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিজয় দিবসে হাইকমিশনের গেটে হামলা : ইন্দোনেশীয়সহ গ্রেফতার ৪
শামসুল ইসলাম, মালয়েশিয়া থেকে ফিরে : মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ওপর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের হামলা ও অপহরণের ঘটনা বাড়ছে। অপহরণকারী চক্র কোনো কোনো প্রবাসীকে অপহরণ করে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করছে। সন্ত্রাসী চক্রের হাতে প্রবাসী কর্মীর কেউ কেউ অকালে প্রাণও হারাচ্ছেন। সন্ত্রাসী চক্রের অপহরণ ও বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় প্রবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মালয়েশিয়ার শাহ আলম এলাকায় এক বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ইন্দোনেশিয়ার তিন নাগরিককে গ্রেফতার করেছে। এসব ব্যক্তির বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। গত ১৩ ডিসেম্বর বন্দর পুত্রা ক্লাং ও কুয়ালা লাঙ্গাট থেকে আলাদা অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় ৫টি মোবাইল ফোন।
দেশটির অনলাইন নিউ স্ট্রেইট টাইমস সম্প্রতি এ খবর প্রকাশ করেছে। খবরে জানা যায়, তিন মাস আগে শাহ আলমের ৩০ নম্বর সেকশনে ওই বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়। তবে নিহত বাংলাদেশীর নাম জানা যায়নি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। শাহ আলমের পুলিশের প্রধান সহকারী কমিশনার শাফিয়েন মামাত বলেছেন, স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে সেকশন ৩০-এ রাস্তার পাশ থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ওই বাংলাদেশীর লাশ। এ সময় তার কাঁধে ও পেটে ক্ষতচিহ্ন ছিল। পুলিশ বলেছে, ওই সময় তাকে চিহ্নিত করার মতো পর্যাপ্ত তথ্য তাদের কাছে ছিল না। মৃতের সঙ্গে কোনো পরিচয়বাহী ডকুমেন্ট ছিল না। এক সপ্তাহ পর ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, একটি ট্যাক্সি থেকে লাশটি ঐ এলাকায় ফেলে দেয়া হয়েছে। এই এলাকাটি শ্রমিকদের আবাসস্থল বলে পরিচিত। পুলিশ ওই ট্যাক্সিচালককে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। আরো তদন্তে মামলার অগ্রগতি হয়। পুলিশ বলেছে, ইন্দোনেশিয়ার তিন ব্যক্তিকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার করার পর তাদের একজন হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের আরো তদন্তের জন্য ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ঈর্ষাপরায়ণতায় ওই বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। আবার ধারণা করা হচ্ছে, ঘাতকের স্ত্রীর সঙ্গে নিহত ব্যক্তির গোপন সম্পর্ক থাকতে পারে। তার কারণেই এই হত্যাকা-। গত দেড় মাস আগে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরস্থ মসজিদ ইন্ডিয়ার রাস্তা থেকে সংঘবদ্ধ অপহরণকারীরা হুন্ডি ব্যবসায়ী কবিরকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। কবিরের গ্রামের বাড়ি বাংলাদেশের গাজীপুর জেলায়। পরে মালয় পুলিশ মালয়েশিয়ার সুঙ্গাইব্ল এলাকা থেকে হুন্ডি ব্যবসায়ী কবিরের লাশ উদ্ধার করে। গত ১৬ ডিসেম্বর সকালে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান শেষে সংঘবদ্ধ দু’জন মালয় অপহরণকারী হাইকমিশনের গেটে আওয়ামী লীগ মালয়েশিয়ার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে মারধর ও অপহরণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক অহিদুর রহমান, মামুনুর রশিদ, তারেকুল ও রায়হান পরিস্থিতি বেগতিক দেখে একজন হামলাকারীকে মোটরসাইকেলসহ ধরে ফেলে। অপর সন্ত্রাসী উত্তম মধ্যম খেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে হাইকমিশন কর্তৃপক্ষ দ্রুত মালয় পুলিশকে তলব করলে আটককৃত মালয় সন্ত্রাসীকে পুডু পুলিশ স্টেশন ক্যাম্পে নিয়ে যায়। আহত আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী বাদি হয়ে পুডু পুলিশ স্টেশনে একটি অপহরণ ও হত্যার উদ্দেশ্য সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ আটককৃত সন্ত্রাসীকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আহত আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমার ওপর হামলার ব্যাপারে হাইকমিশন কোনো আইনি সহায়তা দিচ্ছে না। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ার আওয়ামী লীগ কমিটি নিয়ে দু’টি গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক রেজাউল করিম রেজা ঢাকায় অবস্থান করে বলেন, দলীয় কোনো গ্রুপের সহায়তায় শফিকুর রহমানের ওপর হামলা হোক আর অন্য কোনো সন্ত্রাসীরা হামলার সাথে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে হাইকমিশনার শহিদুল ইসলামের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হাইকমিশনার আওয়ামী লীগের উভয় গ্রুপকে মিলেমিশে দলীয় কার্যক্রম (কমিটি) করার পরামর্শ দেন। গত এক মাস আগে কুয়ালালামপুরের মাইডিন-এর সামনে থেকে চট্টগ্রামের প্রবাসী জাকিরকে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। তাকে বেদম মারধর করে হত্যার হুমকি দিয়ে চার দিনের মধ্যে ১৪ লাখ টাকার মুক্তিপণ আদায় করে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশী প্রবাসী জোড়া খুনের ও অপর একজনকে আহত করার আসামি আদালত থেকে ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ও ফাঁসির আসামি একজন বাংলাদেশী দীর্ঘ আট বছর কারাভোগের পর মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত তাকে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশনের সার্বিক আইনি সহায়তায় সে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ক’দিন আগে দেশে ফিরেছে। তবে উল্লেখিত জোড়া খুনের মূল হোতারা অন্ধকারেই রয়ে গেল। সম্প্রতি কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার মো: শহিদুল ইসলাম এক প্রশ্নের জবাবে ইনকিলাবকে বলেন, মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা আগে অহরহই অপহরণের শিকার হতো। হাইকমিশনার বলেন, আমরা মালয়েশিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এখন অপহরণের ঘটনা একেবারে নির্মূল করে ফেলেছি। তিনি মালয়েশিয়ার সরকারের আইনকানুন মেনে চলার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের অনুরোধ জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।