Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিদেশিদের কারণে অনেক উদ্যোক্তা ভুল পথে যাচ্ছে

বিইসিএআই ও বিজেএমই’র আলোচনা সভা

| প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের গবেষণা এবং উন্নয়ন এখন পর্যন্ত বিদেশি গবেষক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল। তাদের নির্দেশনা অনেক সময় দেশীয় উদ্যোক্তাদের ভুল পথেও নিয়ে যাচ্ছে। এর প্রধান কারণ তারা সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে নিজেরাই জানেন না। এমনকি কোন কোন বিষয় জানেন না, সেটাও বুঝতে পারেন না। আর এ কারণেই তৈরি পোশাক খাতে নিজস্ব গবেষক এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান জরুরি।  
গতকাল সোমবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ‘৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি এবং বিইসিএআই’র ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজেএমইএ এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেলস ইন্ডাস্ট্রি (সিইবিএআই) যৌথভাবে সভার আয়োজন করে।
বক্তারা বলেন, শুধু সস্তা শ্রমের দেশ হিসেবে পোশাক তৈরি করে নয়, পোশাক খাতের ‘পূর্ণাঙ্গ সমাধানদাতা’ হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিত করতে হবে। পাশাপাশি দক্ষতা বাড়ানো, অবকাঠামো নির্মাণসহ পোশাক খাতের বিদ্যমান বাধা দূর করার প্রতিও নজর দিতে হবে। তবেই ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।
মূল প্রবন্ধে সিইবিএআই’র পরিচালক রেজাউল হাসনাত ডেভিড বলেন, সস্তা শ্রমের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন ক্রেতা এবং নামিদামি ব্রান্ডগুলো পোশাক তৈরির জন্য বাংলাদেশকে বেছে নেয়। গবেষণা, ডিজাইনসহ পোশাক খাতের অন্যান্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে। এখন সময় এসব বিষয়ে নিজেদের দক্ষতা বাড়িয়ে এ খাতের পূর্ণাঙ্গ সমাধানদাতা হিসেবে নিজেদের পরিচিত করে তোলার।
এ বিষয়ে সভায় বিজেএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশ মূলত টি-শার্ট, সোয়েটার, জ্যাকেট, শার্ট এবং ট্রাউজার- এই পাঁচ ধরনের পণ্য তৈরির উপর নির্ভরশীল। যা তৈরি পোশাক খাতের মোট রপ্তানির প্রায় ৭৯ শতাংশ। বাংলাদেশকে এখন ক্রীড়া পোশাক, স্যুটসহ উচ্চ মূল্যের পোশাক তৈরি করতে হবে। পণ্যে নানা বৈচিত্র্যকরণে জোর দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অধ্যয়ন অনুষদের ডিন প্রফেসর শিবলী রোবায়েত-উল ইসলাম বলেন, ৫০ বিলিয়ন রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উপায় নির্ধারণের জন্য বিজিএমইএ- কেই গবেষণা করতে হবে। এছাড়া তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য এখন একটি আলাদা মন্ত্রণালয় প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
রাবাব গ্রুপের চেয়ারম্যান লুতফে এম আইয়ুব বলেন, গত কয়েক বছরের প্রবৃদ্ধি বিশ্লেষণ করলে মনে হয় ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব। তবে বাস্তবতা অনেক দূরে। যা সত্যি হতাশাজনক। কারণ, অবকাঠামো, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক, কমপ্লায়েন্স ইস্যুতে ইমেজ সংকট এখনো রয়েছে। এসব উত্তোরণে সব অংশীদারদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সিইএবিআই সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, পোশাক খাতে বাংলাদেশ অনেক ভালো কাজ করলেও এর কোনো ব্রান্ডিং হচ্ছে না। এখনো পোশাক খাতের বাংলাদেশ মানে রানা প্লাজা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশর ব্রান্ডিং অনেক জরুরি। এজন্য দক্ষ জনশক্তি, ন্যায্যমূল্যে জমি, অবিচ্ছিন্ন জ্বালানি, বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো এবং স্থিতিশীল রাজনীতি অত্যন্ত জরুরি।
সিইএবিআই পরিচালক এবং বিজিএমইএ-র সাবেক সহ-সভাপতি শাহিদুল্যাহ আজিম বলেন, শুধু  শ্রমিকদেরকে নয়, উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে তৈরি পোশাক খাতের সব পর্যায়ের জনশক্তিকেই প্রশিক্ষিত করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের ফ্যাশন আমাদেরকেই সৃষ্টি করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিইসিএআই
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ