পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরিশাল মহানগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ক্রমশ চরম সঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছে। দীর্ঘদিনেও এ নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক ও মানসম্মত দুরের কথা, লাগসই বা পরিবেশ অনুকূল ব্যবস্থায় নেয়ার লক্ষ্যেও তেমন কোনো কর্ম পরিকল্পনা বাস্তায়ন হয়নি। এখনো দীর্ঘদিনের পুরনো ‘ময়লা খোলা’ এলাকায় প্রতিদিন ৩ শতাধিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হলেও তা ‘মোটেই স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বান্ধব নয়’ বলে পরিবেশ অধিদফতরের দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে। এমনকি গোটা মহানগরীর বর্জ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে পুরো ব্যবস্থাপনাই অস্বাস্থ্যকর ও পরিবেশ অনুকূল নয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে নগর ভবন থেকে ‘আধুনিক ও মানসম্মত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন প্রকল্প গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে’ বলে জানানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি সরকারি অর্থ বরাদ্দের ওপরই নির্ভরশীল।
প্রায় ৬০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বরিশাল মহানগরীর কম বেশি ৪৫ হাজার আবাসিক, অনাবাসিক ও বাণিজ্যিক হোল্ডিং থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩শ’ টনেরও বেশি বর্জ্য এ নগরীর রাস্তাঘাটে জমা হলেও কোনো ডাস্টবিনের অস্তিত্ব নেই। এমনকি গোটা মহানগরীতে সেকেন্ডোরি ডাস্টবিন আছে মাত্র দুটি। ফলে বিভিন্ন বাসাবাড়ির লোকজন নগরীর রাস্তার ধারে উন্মুক্তস্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখছে। এমনকি নগর ভবনের পরিচ্ছন্নকর্মীরা দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নগরীর কিছু বাড়িঘর থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে রাস্তাঘাটের নির্দিষ্টস্থানে ফেলে রাখার পরে সেখান থেকে গার্বেজ ট্রাকগুলো এসব বর্জ্য সংগ্রহ করে কাউনিয়া এলাকার ময়লা খোলা বা গার্বেজ স্টেশনে নিয়ে তা অপসারণ করছে।
কিন্তু একদিকে সে গার্বেজ স্টেশন যেমন স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্মত নয়, অপরদিকে বছরের পর বছর ধরে সেখানে এ নগরীর জঞ্জাল জমা করতে গিয়ে এখন আর স্থান সংকুলন হচ্ছে না। ফলে খুব দ্রুত নতুন গার্বেজ স্টেশন চালু না করলে এ নগরীর বর্র্জ্য অপসারণের আর কোনো জায়গা খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি এ নগরীতে ভয়াবহ পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কাও করছেন পরিবেশবীদসহ পরিবেশ অধিদফতরের দায়িত্বশীল মহল।
এসব বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ডা. রবিউল-এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন মহলের উদ্বেগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে জানান, জঞ্জাল নিয়ে নগর ভবনও যথেষ্ঠ সচেতন। পুরনো গার্বেজ স্টেশনটির সর্বোচ্চ ব্যবহারের পাশাপাশি তা যতটা সম্ভব স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্মতভাবে ব্যবহারের চেষ্টা চলছে।
পাশাপাশি নগরীর চরবাড়িয়া এলাকায় বর্জ্য অপসারণে নতুন ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনের পদক্ষেপ গ্রহণের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে ৭ একর জমি হুকুম দখলসহ ভূমি উন্নয়ন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্ব চেয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি ‘প্রকল্প-প্রস্তাবনা’ প্রেরণ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ পেলে পরবর্তিতে এখানে অত্যাধুনিক একটি বর্জ্য অপসারণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথাও জানান তিনি।
তবে নতুন এ গার্বেজ স্টেশন স্থাপনে কত সময় লাগতে পারে সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলতে না পারলেও তহবিলের সংস্থানের ওপরই অনেক কিছু নির্ভর করছে বলে জানান তিনি।
এদিকে নগর ভবনের পরিচ্ছন্ন বিভাগসহ নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে ৯শ’ পরিচ্ছন্ন কর্মীর কাজ সহ তার তত্বাবধান নিয়েও নগরবাসীর মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। অতি সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে ১৬ ঘণ্টায় এ নগরীতে ৩৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পরে গোটা মহানগরী ৩ ফুট থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত পানির তলায় চলে যায়। এমনকি নগরীর পাশে প্রবাহমান কির্তনখোলা নদীর পানি বিপদ সীমার নিচে নেমে যাবার ৪৮ ঘণ্টা পরেও জলাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি এ নগরী। নগরীর ১৬১ কিলোমিটার পাকা ড্রেনের বেশিরভাগেরই তিন-চতুর্থাংশ পর্যন্ত ভরাট হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি এসব ভরাট ড্রেনগুলো বছরের পর বছর ধরে একই অবস্থায় থাকলেও পরিস্থিতির তেমন কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। ঘণ্টায় ৫ মিলি বৃষ্টিহলেই নগরীর নবগ্রাম রোডের বটতলা বাজারের পশ্চিম থেকে হাতেম আলী কলেজ পর্যন্ত সড়কটি প্লাবিত হচ্ছে। এমনকি সারা বছরই ঐ সড়কের পাশের ড্রেনটির পানি মূল সড়কে ছুয়ে থাকলেও তা থেকে উত্তরনের কোনো পদক্ষেপ নেই। আরো খারাপ অবস্থা নগরীর কাঁচা ড্রেনগুলোর।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাথে ভঙ্গুর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে এ মহানগরীর সুস্থ নাগরিক জীবন বিপন্ন হয়ে পড়তে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবেশবীদগণ। অপরদিকে নগরীর ৭টি মজা খাল খননে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তরফ থেকে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও এক অদৃশ্য শক্তির অঘোষিত বাধায় দরপ্রস্তাব গ্রহণের ৬ মাস পরেও কাজ শুরু হয়নি। ফলে আগামী বর্ষায় এ নগরীতে জলাবদ্ধতা আরো প্রকট আকার ধারণ করার শঙ্কার কথা বলেছেন পরিবশে ও নগর বিজ্ঞানীগণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।