Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীত : মুমিনের জন্য ইবাদতের বসন্তকাল

মাওলানা মুহাম্মদ সাইদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১৭ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় আমাদের বাংলাদেশ। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এখন অবশ্য তিনটি ঋতুই অনুভব হয়। গ্রীষ্ম, বর্ষা ও শীত। প্রতিটি ঋতু আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য অনেক বড় নেয়ামত। শীতকালে ইবাদতের সওয়াব বেশি হয়।

শীতকাল মুমিনের বসন্তকাল :ইবাদতের জন্য সুন্দর সময় হল শীতকাল। শীতকালকে বলা হয় মুমিন বান্দার ইবাদতের বসন্তকাল। কারণ শীতকালে রাত দীর্ঘ হয়। যে কারণে বান্দা যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রামের পর শেষ রাতে উঠে তাহাজ্জুত ও রোনাজারি করতে পারে। কোরআন তিলাওয়াতের সুযোগ পায়। দিন ছোট থাকে। ক্লান্তি অনুভব করা ছাড়াই রোযা রাখা যায়। যা একটি ফজিলতপূর্ণ আমাল। এ ছাড়া আরো অনেক আমাল আছে, যা বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় শীতকালে আদায় করা সহজ হয়। আলোচ্য নিবন্ধে এমন কিছু আমল সম্পর্কে আলোচনার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ।

শীতকালে রোযা : হাদিসে শীতকালকে গনিমত বলা হয়েছে। অর্থাৎ শীতকালে রোযা রাখাকে হাদিসে বিনা পরিশ্রমে অর্জিত গনিমত বলা হয়েছে। আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, শীতকালে রোযা রাখা ঠান্ডা গনিমত। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৮৯৭৯)।

আবু হুরায়রা (রা.) তাঁর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কি তোমাদেরকে গনিমতে বারিদার দিকে পথ দেখাবো না? তাঁরা বললেন কোন নয়! তিনি বলেন, শীতকালে রোযা রাখা হচ্ছে গনিমতে বারিদাহ তথা বিনা পরিশ্রমে যুদ্ধলব্ধ সম্পদের মত।

সুতরাং শীতকালের এই সুবর্ণ সোযোগকে আমরা রোযা রাখার মাধ্যমে লুফে নিতে পারি। অলসতায় সযোগ নষ্ট করা বুদ্ধিমান মুমিনের কাজ হতে পারে না। এ সময়ে আমরা বিশেষভাবে সাপ্তাহে দু’দিন তথা সোম ও বৃহষ্পতিবার রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ হিসাবে রোযা রাখতে পারি।

কিয়ামুল্লাইল-তাহাজ্জুদ : তাহাজ্জুদের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আমরা সকলেই কমবেশ অবগত আছি। কোরআন-হাদিসে তাহাজ্জুতের প্রতি অনেক গুরুত্ব ও উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। অসংখ্য ফজিলত এই সালাতের ব্যাপারে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ পড়বে, যা তোমার জন্য এক অতিরিক্ত ‘ইবাদত’। আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে মাকামে মাহমূদে পৌঁছাবেন’। (সূরা ইসরা : ৭৯) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, শীতকে স্বাগতম। শীতকালে বরকত অবতির্ণ হয়। এই সময় সালাত আদায়ের জন্য রাত দীর্ঘ হয়। রোযা রাখার জন্য দিন ছোট হয়।

হাছান বসরি (রহ.) বলেন, শীতকাল মুমিন বান্দার জন্য উত্তম সময়। কারণ এ সময় রাত দীর্ঘ হয়, ফলে মুমিন সালাত আদায় করতে পারে। দিন ছোট হয় ফলে রোযা রাখতে পারে। তিনি আরো বলেন ‘উত্তম ইবাদত হচ্ছে গভীর রাতে সালাত আদায় করা’।

শীতকালে সাধারণত রাত অনেক দীর্ঘ হয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম হয়ে সময় আরো অনেক বেঁচে যায়। এ সময় মুমিন বান্দাদের জন্য শেষ রাত্রে উঠে তাহাজ্জুদ আদায় করার সুবর্ণ সুযোগ। মহান রবের দরবারে রোনাজারি করে গুনাহ মাফ করার এবং দুনিয়া-আখেরাতের সফলতা লাভের দোয়া করা। তাহাজ্জুদের সময় দুয়া কবুল হয়। সৌভাগ্যবান মুমিন তো সেই, যে রাত্রের মূল্যবান সময়কে ঘুমিয়ে নষ্ট করে না।

কুরআন তিলায়াত :
কুরআন তিলায়াতের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত আছি। কোরআনের প্রতিটি হরফে দশ নেকি। কোরআন তিলায়াত করলেও নেকি, শুনলেও নেকি। কোরআন তিলায়াতের মাধ্যমে ঈমান দৃঢ় ও মজবুত হয়। কোরআন নিয়ে তাদাব্বুর (গবেষণা) করলে তাকওয়া অর্জিত হয়। কোরআন তিলায়াতের মাধ্যমে অন্তরে প্রশান্তি আসে। শীতের দীর্ঘ রাতে বিশেষভাবে শেষরাত্রের নির্জনতায় আমরা কোরআন তিলায়াত করতে পারি। কোরআনের সান্নিধ্যে নিজের ঈমানকে শাণিত করতে পারি।
শীত আসলে উবাইদ বিন উমায়ের (রহ.) বলতেন, হে কুরআনের লোকেরা! তিলায়াত করার জন্য তোমাদের রাত দীর্ঘ হয়েছে, সুতরাং কোরআন তিলায়াত কর।

অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো :
শীত গরিব-দুঃখিদের জন্য কষ্টের সময়। গরিব অসহায় মানুষ ঠান্ডার কারণে কষ্ট পায়। সেই মুহূর্তে শীতবস্ত্র দিয়ে গরিব-দুঃখিদের সহযোগিতা করা অনেক বড় পুণ্যের কাজ। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো অনেক ফজিলত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভাইয়ের সাহায্যে থাকবে আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাহায্য করবেন’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৯৯)
শেষ নিবেদন : শীতের এই সময়গুলো আমাদের ইবাদতে কাজে লাগানো উচিত।
নিজের ঈমান-আকিদা পরিশুদ্ধ করতে হবে। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাতসহ ওয়াজিব ও সুন্নাত আমলসমূহ আদায় করতে হবে। পাশাপাশি নফল ইবাদত করে আখেরাতকে সমুদ্ধ করতে হবে।
অহেতুক সময় নষ্ট করা কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তির কাজ হতে পারে না।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে শীতকালের এই সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অধিক পরিমাণে আমল করার তাওফিক দান করুন।

লেখক : শিক্ষা সচিব, মদিনাতুল উলুম তা’লিমুল কোরআন মাদরাস। শ্রীরামপুর, রায়পুরা, নরসিংদী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->