Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘গাধা জল ঘোলা করে খায়’: বিএনপির নির্বাচনে আসা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২২, ৬:৩৪ পিএম

বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাবার বিষয়ে বিএনপি’র বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গাধা জল ঘোলা করে খায়’।

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালেও গাধা জল ঘোলা করে খেয়েছিল। নির্বাচনের বহু আগে থেকে তারা সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না এ কথা বলে এসেছিলো। পরে গাধা জল ঘোলা করে খেয়েছে, নির্বাচনে গেছে। এবারও উনারা বলছেন নির্বাচনে যাবেন না। কিন্তু বিএনপির অনেক নেতাকে আমি জানি, চিনি, শুনি। মির্জা ফখরুল সাহেব যাই বলুন, বিএনপি নেতারা নির্বাচনে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে বসে আছেন।’
তথ্যমন্ত্রী আজ দুপুরে সচিবালয়ে আসন্ন বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭ উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে এ সব কথা বলেন। ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ উল হক এ সময় বক্তব্য দেন।
এ দিন সকালে জাতীয় জাদুঘরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আমি একটু আগে সেই প্রোগ্রাম থেকে এসেছি, যেখানে বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের শিকার, নিহতদের পরিবার এবং আহতদের আর্তনাদ পুরো মিলনায়তনকে কাঁদিয়েছে। বিদেশি কূটনীতিকরা সেখানে ছিলেন, তারা কেঁদেছেন, আমি নিজে কাঁদতে বাধ্য হয়েছি, সাংবাদিকরা কেঁদেছে, প্রধানমন্ত্রী সেখানে তারও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক বক্তা তার বক্তৃতায় বলেছেন- আমরা যেন আমাদের জীবদ্দশায় আমার স্বামী বা আমার সন্তান বা আমার পিতা হত্যার বিচার দেখে যেতে পারি। ১৯৭৭ সালে বিনা বিচারে নিহতের সন্তানরা বলেছে- আমার বাবার কবর কোথায় আমি জানিনা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা দাবি জানিয়েছেন যে, তারা যেন তাদের বাবার কবর কোথায় সেটি জানতে পারে এবং এই হত্যাকান্ডের যাতে বিচার হয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান কয়েক হাজার সেনাসদস্যকে বিনা বিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল। জামাতকে সাথে নিয়ে যারা অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য করেছিল বিএনপি সেই দল। যারা মাঠে গিয়ে বোমা নিক্ষেপ করেছে শুধু তারা নয়, এগুলোর পেছনে অর্থায়ন আছে, হুকুমদাতা আছে, বিএনপির হুকুমদাতা আর অর্থদাতাকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এটি এখন সময়ের দাবি এবং যাদের আর্তনাদ শুনেছি তাদের দাবি।’
যুদ্ধটা বন্ধ করুন, পৃথিবীকে রক্ষা করুন: কপ-২৭ এ বাংলাদেশের আহ্বান ব্যক্ত করে কপ-২৭ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে যোগদানের জন্য ঢাকা ত্যাগের পূর্বে পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার একটি দেশ। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। আমাদের দেশে আজ থেকে ১২-১৩ বছর আগে জনপ্রতি প্রতিবছর গ্রিন হাউজ গ্যাস নি:সরণ ছিলো ০.২ টন। সেটা একটু বেড়ে এখন ০.৬ টন। আর অন্যদিকে উন্নত দেশগুলোতে জনপ্রতি প্রতিবছর গ্রিন হাউজ গ্যাস নি:সরণ ইউরোপে ১০ টনের বেশি, আমেরিকায় ১৫ টন বা আরো বেশি। দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এখন এই মাত্রা ৪-৫ টনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই তুলনায় আমাদের ক্ষতিকর ভূমিকা নেই, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আমাদের ওপর অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি পড়ছে।
আক্ষেপ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পুরো পৃথিবী জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পৃথিবীর মানুষ, পৃথিবীর রাজনৈতিক নেতৃত্ব পৃথিবীকে রক্ষা করার পরিবর্তে এখন কে ন্যাটোতে যোগ দেবে কে দেবে না সেটি নিয়েই ব্যস্ত। আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যস্ত, একে অপরকে ধ্বংস করতে ব্যস্ত, একে অপরের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ব্যস্ত। পুরো মানবজাতি যে মহাদুর্যোগের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে এবং সেই প্রেক্ষিতে পুরো মানবজাতির অস্তিত্বই যে হুমকির মুখে পড়ছে, সেটি নিয়ে মাথাব্যথা খুব কম।
ড. হাছান জানান, জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে এবারের মূল বক্তব্য থাকবে যে, ‘দয়া করে যুদ্ধটা বন্ধ করুন, একে অপরকে ধ্বংস করার পরিবর্তে সবাই মিলে পৃথিবীটাকে রক্ষা করুন। দ্বিতীয়ত: আমরা যারা জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার, আমাদেরকে যেহেতু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, প্রতিশ্রুত সাহায্য করতে হবে। আজকে থেকে শুরু হওয়া এবারের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে এই বক্তব্যগুলোই তুলে ধরবো।’
আমাদের সাংবাদিকরা এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পরিবেশ সচেতনতাটা আমাদের দেশে অনেক দেশের তুলনায় ভালো। এটির পেছনে সাংবাদিকদের অবদান আছে। আমাদের ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরাম দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে কাজ করছে, তারা এ সম্মেলনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তথ্যমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ