Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এমপি-মন্ত্রী-আমলাদের বাসায় অভিযান চালালে মিলবে ব্রিফকেসভর্তি ডলার

জেএসডির ৫০ বছর পূর্তিতে আলোচনা সভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় বঙ্গবন্ধু আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আমি ভিক্ষা করে যা আনি আমার চাটার দল, চোরের দল তা খেয়ে ফেলে। এবারের দুর্ভিক্ষও সে রকম। এ দুর্ভিক্ষের জন্যও দায়ী সরকার। ১৪ বছরে বহু টাকা তারা প্রচার করেছে। এখন যদি আওয়ামী লীগের এমপি, মন্ত্রী ও আমলাদের বাসায় অভিযান চালানো হয় তাহলে প্রত্যেকের ঘরে ব্রিফকেস ভর্তি ডলার পাওয়া যাবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তরা এ কথা বলেন। ‘স্বৈরাচারের পতন ও রাষ্ট্র রূপান্তরের গণজাগরণ গড়ে তুলুন’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা গতকাল আজোতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ।

আ স ম আবদুর রব সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সামনে মহাবিপদ আসছে, ভদ্রভাবে না গেলে পালাতেও পারবে না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শাসনের পতন করা হবে। তারপর রাষ্ট্র পুনর্গঠন করা হবে। এখনো সময় আছে ভদ্রভাবে আপনারা (আওয়ামী লীগ) বিদায় হোন। তানা না হলে পালাতেও পারবেন না। যাদের খুন করেছেন, গুম করেছেন তাদের শুভাকাক্সক্ষীরা আপনাদের পালাতেও দেবে না।

তিনি বলেন, জনগণের মুক্তি হয়নি, মানুষ স্বাধীনতা পায়নি। সাধারণ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা শুধু ভৌগোলিক একটি স্বাধীন জায়গা পেয়েছি কিন্তু জনগণের মুক্তি হয়নি। সরকার ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখতে আজ রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটিয়েছে। দেশকে নৈরাজ্যকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। তিন মাস পর টাকা দিলেও খাওয়া পাবেন না, বাচ্চা শিশুর দুধ কিনতে পারবেন না। তাই অবৈধ সরকারকে বিদায় করা ছাড়া অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও অপশাসন থেকে মুক্তিলাভ করা যাবে না। এ জন্য সরকারকে বিদায় করতে গণঅভ্যুত্থান ছাড়া বিকল্প নেই।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সোনার বাংলা এখন ‘শ্মশানে’ পরিণত হয়েছে। আমরা সবাই জানি বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা। রিজার্ভ নেই, আমদানি করার টাকা নেই, জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। সেই জিনিস কেনার মতো অর্থ মানুষের কাছে নাই। দুঃখের কথা শোনার মতো মানুষ নাই। বলবার জায়গা নাই।
গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন ‘দুর্ভিক্ষ যতটা না প্রাকৃতিক তার চেয়ে বেশি দায়ী সরকার। তারা প্রতি বছর বিদেশে টাকা পাচার করে। ১৪ বছরে বহু টাকা প্রচার করেছে। সেসব নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এখন যদি আওয়ামী লীগের তিনশ এমপি, মন্ত্রী ও আমলাদের বাসায় অভিযান চালানো হয় তাহলে প্রত্যেকের ঘরে ব্রিফকেস ভর্তি ডলার পাবেন।

১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তার নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। তখন তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আমি যখন ভিক্ষা করে আনি আমার চাটার দল তা খেয়ে ফেলে।’ তার দলের লোকজনকেই তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। জাসদের লোকজনকে তখন হত্যা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বাবা ঘোষণা দিয়ে বাকশাল করেছিলেন আর তিনি ২০১৪ থেকে বাকশালী কায়দায় রাষ্ট্র চালাচ্ছেন। সে সময় মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন। তারা অনেক রকম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। আজ আমরা তাও পারছি না। রাস্তায় নামতে পারছি না। হামলা, মামলা, গুম, খুন আওয়ামী লীগের যে দুর্বৃত্তায়ন এখন আমরা দেখছি হুমকির মাধ্যমে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এমপি-মন্ত্রী-আমলা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ