Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাফত থেকে কারবালা (পর্ব এক এর বাকি অংশ)

মারজান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

(পূর্বের প্রকাশিতের পর)
৬. যদি ইমাম আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হতেন, যেভাবে শিয়ারা বিশ্বাস করেন এবং ইমামকে নির্বাচিত করে যাওয়া নবীর দায়িত্ব হতো, তাহলে রাসুলল্লাহ (সা.) কখনোই সেটি করতে বাকি রাখতেন না; চাই যে পরিস্থিতিই সামনে আসুক না কেন। যিনি মক্কাবাসীর এতো নির্যাতনের পরও কালিমা তাওহীদের রজ্জু ছেড়ে দেননি, তিনি কিভাবে উমর (রা.)-এর একটি কথায় এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি হেদায়াত উম্মতকে জানানো থেকে বিরত রইলেন? বস্তুত খলিফা কিংবা ইমাম নির্বাচন করে যাওয়া রাসুলল্লাহ (সা.)-এর রিসালাতের দায়িত্বের মধ্যে ছিলনা। যদি তা ঈমান-ইসলামের আবশ্যকীয় কোন বিষয় হতো, তবে রাসুলল্লাহ (সা.) সুস্পষ্ট বাক্যের দ্বারা তা উম্মতকে জানিয়ে যেতেন, যেভাবে তিনি (সা.) অন্য সবকিছু জানিয়ে দিয়েছিলেন। জানিয়ে দেয়াই তো ছিল তাঁর রিসালাতের দায়িত্ব। আল্লাহ বলেছেন- হে রাসুল! আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা পৌঁছে দিন । আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌঁছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। (সুরা মায়েদা : ৬৭)
৭. ইমামত নামক আকীদাটি যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হতো, তবে এ বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহ'তে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকত। কিন্তু পবিত্র কুরআন এবং রাসুলল্লাহ (সা.) থেকে বিশুদ্ধ সনদে বর্ণিত হাদিসসমূহে এমন একটি বর্ণনাও নেই, যেখানে আল্লাহ কিংবা রাসুল (সা.) সুস্পষ্ট বাক্যের দ্বারা আলী (রা.)-কে খলিফা কিংবা ইমাম মনোনিত করেছেন।
৮. শিয়াদের দাবীর বিপক্ষে আহলে সুন্নাতের কতিপয় উলামা সম্পুর্ণ বিপরীত একটি দাবী করেছেন। ইমাম সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা ও আল্লামা ইবনে তাইমিয়ার মতে, হাদিসে কিরত্বাসে রাসুলল্লাহ (সা.) আবু বকর সিদ্দিক (রা.)- কে খলিফা মনোনিত করে যেতে চেয়েছিলেন। তাঁদের দাবীর স্বপক্ষে দলিল হচ্ছে একটি ঘটনা, যা উপরোক্ত ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে ঘটেছিল। কাসিম ইবনে মুহাম্মদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন- আয়েশা (রা.) বলেছিলেন, হায় যন্ত্রণায় আমার মাথা গেল! তখন রাসুলুল­াহ (সা.) বললেন, যদি এমন হয় (তুমি মৃত্যুবরণ করো) আর আমি জীবিত থাকি, তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব এবং দু'আ করব। আয়েশা (রা.) বললেন, আফসোস! আল্লাহর কসম, আমার ধারণা আপনি আমার মৃত্যুকে পছন্দ করেন। তাহলে আপনি পরের দিনই আপনার অন্য স্ত্রীদের নিকট গমন করতে পারবেন। রাসুলল্লাহ (সা.) বললেন, বরং আমিই এখন "যন্ত্রণায় মাথা গেল" বলার অধিক যোগ্য। আমি তো ইচ্ছাপোষণ করেছিলাম বা চেয়েছিলাম যে, আবু বকর ও তাঁর ছেলেকে ডেকে আনব এবং (একটি বিষয়ে) ওসিয়ত করে যাব। যেন (এ বিষয়ে) লোকদের কিছু বলার অবকাশ না থাকে এবং আকাঙ্ক্ষাকারীদের কোন আকাঙ্ক্ষা করার সুযোগ না থাকে। পরে ভাবলাম, আল্লাহ (আবু বকর ব্যতীত অন্য কাউকে) এ ব্যাপারে অপছন্দ করবেন এবং মু'মিনগণও তা বর্জন করবেন। অথবা আল্লাহ তা প্রতিহত করবেন এবং মু'মিনগণ তা অপছন্দ করবেন। (সহীহ বুখারী : কিতাবুল মারদ্বা, ৫৩৪২)
অপর বর্ণনায়, উরওয়া ইবনে যুবায়ের থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) রোগশয্যায় থাকাকালে আমাকে বললেন, তোমার পিতা আবু বকর ও তোমার ভাইকে ডাকো। আমি একটি পত্র লিখে দিয়ে যাই। আমি আশঙ্কা করছি, কোন উচ্চাভিলাষী ব্যক্তি আকাঙ্ক্ষা করবে এবং কেউ দাবী করে বসবে যে, আমিই এ বিষয়ের হকদার। অথচ আল্লাহ ও মু'মিনগণ এ ব্যাপারে আবু বকর ব্যতীত অন্য কাউকে মেনে নেবেন না। (সহীহ মুসলিম : কিতাবু ফাদ্বায়িলুস সাহাবা, ২৩৮৭)
উক্ত হাদিসদ্বয়ের ভাষ্য থেকে বুঝা যায়, রাসুল (সা.) আবু বকর (রা.)-কে কোন একটি বিষয়ে ওসিয়ত করে যেতে চেয়েছিলেন। পরে তিনি (সা.) ভাবলেন যে, এমনটি করার প্রয়োজন নেই। কারণ আবু বকর (রা.) ব্যতীত অন্য কাউকে আল্লাহ এ পদে অধিষ্ঠিত করবেন না এবং মু'মিনগণও আবু বকর (রা.) ব্যতীত অন্য কাউকে এ পদে আসীন হওয়া থেকে প্রতিহত করবেন। সুতরাং তিনি (সা.) ওসিয়ত করা থেকে বিরত রইলেন। এখানে "একটি বিষয়ে ওসিয়ত" বলতে নিশ্চিতভাবেই খেলাফতের ব্যাপারে ওসিয়ত করার কথা বুঝা যাচ্ছে। এ হাদিসের আলোকে কতিপয় সুন্নী উলামা দাবী করেন যে, হাদিসে কিরত্বাসে রাসুলুল্লাহ (সা.) আবু বকর (রা.)-কেই তাঁর খলিফা মনোনিত করতে চেয়েছিলেন, যদিও তিনি করেননি।
আহলে সুন্নাত ওয়াল-জামা'আতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মত হচ্ছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) কাউকেই খলিফা বা ইমাম নির্বাচিত করে যাননি। পার্থিব নেতৃত্বের এ বিষয়টি রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া-তা'আলার ইচ্ছা এবং উম্মতের সার্বিক বিবেচনার উপর ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, তাঁর উম্মত ভুল-ভ্রান্তির উপর ঐক্যমত পোষণ করবেনা। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার উম্মত, অথবা বলেছেন, মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতকে ভ্রান্তির উপর একমত করবেন না। জামা'আতের উপর (উম্মতের বৃহদাংশের উপর) আল্লাহর হাত রয়েছে। আর যে জামা'আত থেকে বিচ্ছিন হয়, সে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় জাহান্নামের দিকে পা বাড়ায়। (জামে তিরমিযি : আবওয়াবুল ফিতান, ২১৬৭)
দ্রষ্টব্যঃ ইমাম তিরমিযি এই হাদিসের সনদকে গরিব বলেছেন।
শিয়া স¤প্রদায় আলী (রা.)-কে প্রথম ও একমাত্র খলিফা বা ইমাম বিশ্বাস করার পেছনে হাদিসে কিরত্বাস ব্যতীত আরো কতিপয় প্রমাণ পেশ করেন। এরমধ্যে বেশিরভাগ প্রমাণ তাঁদের নিজেদের সূত্রে বর্ণিত। সুতরাং আমরা সেদিকে যাবনা। কারণ আহলে সুন্নাতের ইমামগণ শিয়াদের বর্ণনাসূত্রে "তেমন" আস্থা পোষণ করেননা। তবে দুটি প্রমাণ তাঁরা সুন্নীদের সূত্র থেকে পেশ করেন। প্রমাণদ্বয় নিম্নরূপ-১. রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজ থেকে ফেরার পথে খুম নামক স্থানে আলী (রা.)-এর হাত ধরে বলেছিলেন, আমি যার মাওলা, আলী তার মাওলা। যায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- আমি যার মাওলা, আলী তার মাওলা। (জামে তিরমিযি : আবওয়াবুল মানাকিব, ৩৭১৩)
২. তাবুক অভিযানে বের হওয়া সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) আলী (রা.)-কে মদীনার দায়িত্বে রেখে যাচ্ছিলেন। তখন আলী (রা.) সাথে যাওয়ার বাসনা করলে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর স্নেহাস্পদ আলী (রা.)-এর প্রতি আস্থা ও ভালবাসা ব্যক্ত করেছিলেন। ইবরাহিম তাঁর পিতা সা'দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আলী (রা.)-কে বলেছেন- তুমি কি সন্তুষ্ট নও যে, তুমি আমার জন্য সেরূপ, যেরূপ মুসা (আ.)-এর জন্য ছিলেন হারূন (আ.)। (সহীহ বুখারী : কিতাবু ফাদ্বায়িলুস সাহাবা, ৩৫০৩)
শিয়া স¤প্রদায় এ দুটি প্রমাণের দ্বারা আলী (রা.)-কে রাসুল (সা.)-এর খেলাফতের উত্তরসূরি বলে দাবী করেন। আমরা প্রমাণদ্বয়কে ব্যাখ্যা করব।
প্রথম হাদিসঃ শিয়াদের দাবী হচ্ছে, (মাওলা) শব্দ দ্বারা উত্তরাধিকারী উদ্দেশ্য। সুতরাং রাসুল (সা.) আলী (রা.)-কে তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনিত করে গেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে (মাওলা) শব্দের অর্থ উত্তরাধিকারী নয়। (মাওলা) শব্দটি (ওলী) শব্দ থেকে উদ্ভূত বা নিষ্পন্ন। আরবি (ওলী) শব্দের অর্থ বন্ধু বা প্রিয়জন। পবিত্র কুরআনে (ওলী) শব্দটি বন্ধু অর্থে এসেছে। আল্লাহ বলেছেন- জেনে রেখো! যারা আল্লাহর বন্ধু, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবেনা। (সুরা ইউনুস : ৬২)অপর আয়াতে আল্লাহ সরাসরি (মাওলা) শব্দটি উল্লেখ করেছেন- এটি এজন্য যে, আল্লাহ ঈমানদারদের হিতৈষী বন্ধু। আর অবিশ্বাসীদের কোন হিতৈষী বন্ধু নেই।(সুরা মুহাম্মদ : ১১) এখানে (মাওলা) যদি খলিফা কিংবা উত্তরাধিকারী অর্থে ধরে নেই, তাহলে আয়াতের অর্থ হবে- আল্লাহ মু'মিনদের খলিফা এবং অবিশ্বাসীদের কোন খলিফা নেই। এতে আয়াতের অর্থ তো বদলে যাবেই; উপরন্তু কথাটি কুফরের দিকে পতিত হবে।
কেবল কুরআনের আয়াতেই নয়; বরং হাদিসেও (মাওলা) শব্দটি অন্যান্য ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। বারা ইবনে আজিব (রা.) বর্ণনা করেন- রাসুল (সা.) যায়েদ ইবনে হারিসা (রা.)-কে বলেছেন, তুমি আমাদের ভাই এবং আমাদের মাওলা। (সহীহ বুখারী : কিতাবুস সিলাহ, ২৫৫৩) এখানে কি এটি ধরে নেয়া যৌক্তিক হবে যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) যায়েদ ইবনে হারিসা (রা.)-কে তাঁর খলিফা বা উত্তরাধিকারী মনোনিত করেছেন? এমনটি তো শিয়ারাও বিশ্বাস করবেন না।
বস্তুত, উল্লেখিত হাদিস, যেখানে রাসুলুল্লাহ (সা.) আলী (রা.)-কে মাওলা বলেছেন, তা একটি বিশেষ মুহূর্তের বর্ণনা। জামে তিরমিযি, আবওয়াবুল মানাকিব অধ্যায়ে বর্ণিত আছে, বিদায় হজ থেকে ফেরার সময় কিছু লোক রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট আলী (রা.)-এর কিছু সিদ্ধান্তের ব্যাপারে অভিযোগ উত্তাপন করেছিলেন। এর জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা.) উক্ত হাদিস ইরশাদ করেছেন।
ইমাম বায়হাকী বলেছেন, এ হাদিস দ্বারা রাসুলুল্লাহ (সা.) কর্তৃক আলী (রা.)-কে খেলাফতের উত্তরাধিকার দেয়ার কথা প্রতিষ্ঠিত হয়না। আমরা এ হাদিসটি মর্যাদা বিষয়ক কিতাবে উল্লেখ করেছি, যার দ্বারা রাসুল (সা.)-এর কথার প্রকৃত উদ্দেশ্য অনুধাবন করা যায়। আর তা হল- যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আলী (রা.)-কে ইয়েমেনের গভর্ণর বা বিচারকরূপে প্রেরণ করেছিলেন, তখন সেখান থেকে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট অনেক অভিযোগ আসল। তিনি (সা.) ইচ্ছাপোষণ করলেন যে, আলী (রা.)-এর ব্যাপারে তাঁর ভালবাসার কথা প্রকাশ করবেন এবং ইয়ামেনবাসীকে আলী (রা.)-এর মর্যাদা ও ভালবাসার উপর রাজি করাবেন। তখন তিনি (সা.) বলেছিলেন, আমি যার মাওলা, আলী তার মাওলা। অপর বর্ণনায় রয়েছে, তিনি (সা.) এ ও বলেছিলেন- আল্লাহ! তুমি তাকে ভালবাস যে আলীকে ভালবাসে এবং তাকে ঘৃণা বা শত্রুতা পোষণ করো, যে আলীকে ঘৃণা করে। (আল-ই'তিকাদ ওয়াল-হিদায়াতু ইলা সাবিলির রাশাদ : ইমাম বায়হাকী)
যদি (ওলী) এবং তার থেকে নির্গত (মাওলা) শব্দ দ্বারা খলিফা বা উত্তরাধিকারী অর্থ নেয়া হয়, তাহলে উক্ত হাদিসের অর্থ হবে, হে আল্লাহ! তুমি তাকে খলিফা ভাবো যে আলীকে খলিফা ভাবে! এই অর্থ কতোটুকু অবাস্তব হবে, তা তো সহজেই অনুমেয়।
দ্বিতীয় হাদিসঃ শিয়াদের দাবী হচ্ছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাবুক অভিযানকালে আলী (রা.)-কে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে গিয়েছিলেন এবং একইসাথে মুসা (আ.)-এর সাথে হারূন (আ.)-এর সম্পর্ক উল্লেখ করে আলী (রা.)-কে নিজের উত্তরাধিকারী মনোনিত করেছিলেন।কথা হচ্ছে, এটি নিয়ে কোন সংশয় নেই যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাবুক অভিযানকালে আলী (রা.)-কে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে গিয়েছিলেন। আর এটি প্রথমবার নয়। মক্কা থেকে হিজরত করার সময়ও রাসুলুল্লাহ (সা.) আলী (রা.)-কে নিজের বিছানায় শুইয়ে নিজের চাদর দিয়ে ঢেকে মক্কা ত্যাগ করেছিলেন। এর কারণ হল, রাসুলুল্লাহ (সা.) আলী (রা.)-কে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করতেন। আলী (রা.) ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অতি প্রিয়ভাজন ব্যক্তি। আলী (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ঘরেই লালিতপালিত হয়েছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর প্রাণপ্রিয় কন্যা ফাতিমা (রা.)-কে আলী (রা.)-এর সাথে বিবাহ দিয়েছিলেন। আলী (রা.)-এর জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ভালবাসা ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু তাবুক অভিযানকালে আলী (রা.)-কে স্থলাভিষিক্ত করার দ্বারা এটি প্রতিষ্ঠিত হয়না যে, আলী (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর প্রথম এবং একমাত্র খলিফা হবেন। কারণ, রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন সাহাবিকে তাঁর প্রতিনিধিস্বরূপ বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করতেন। এর অর্থ তো এটি নেয়া যায়না যে, এরা সবাই প্রথম খলিফা বা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উত্তরাধিকারের দাবী করে বসবেন! জীবদ্দশায় কোন একটি বিশেষ সময়ের জন্য কাউকে স্থলাভিষিক্ত করার অর্থ এই নয় যে, ইন্তেকালের পর তাঁর হাতেই উত্তরাধিকারের ভার অর্পিত হবে। তাছাড়া এখানে আরেকটি কথাও উল্লেখযোগ্য। তা হল- রাসুলুল্লাহ (সা.) আলী (রা.)-এর সাথে তাঁর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে মুসা (আ.)-এর সাথে হারূন (আ.)-এর সম্পর্কের উদাহরণ দিয়েছিলেন।


লেখকঃ ইসলামি চিন্তাবিদ, অধ্যয়ণরত- (মাস্টার্স) রিলিজিয়াস স্টাডিজের অধীনস্থ ইসলামিক স্টাডিজ,
এয়ারফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়, জার্মানী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ