Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

টার্গেট ‘ভোলার গ্যাস’

সিএনজি করে আনতে তিন কোম্পানির প্রস্তাব

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

গ্যাস সঙ্কটে দেশের বড় শিল্প কারখানাগুলোতে কমেছে উৎপাদন। বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে পোশাক শিল্পের কারখানাগুলো। এ খাতে উৎপাদনে ক্ষতি হচ্ছে ২০ শতাংশের বেশি। রাজধানীর বেশির ভাগ বাসায় চুলা জ্বলে না। যে গুলো চালু রয়েছে সেখানেও উৎপাদন কমে এসেছে। অথচ পেট্রোবাংলার এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা গ্যাস কনডেনসেট (উৎপাদনকালে উঠে আসা বিশেষ তরল) ঘাটতি দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা পকেটে ভরছেনএ অন্যদিকে ভোলা থেকে সিএনজি করে গ্যাস আনতে তিন কোম্পানির প্রস্তাব দিয়েছে বেসরকারি কোম্পনি।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারি নাগাদ এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কয়লা থেকে পাওয়া যাবে। বর্তমান স্পট মার্কেটের দরে আগামী ছয় মাস যদি ২০০ এমএমসিএফ গ্যাস আমদানি করি, তাতে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজির চেয়ে অতিরিক্ত খরচ হবে প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু এই পরিমাণ ডলার বিনিয়োগের মতো অবস্থানে সরকার নেই।

ভোলা দ্বীপের অফ-গ্রিড ফিল্ডের গ্যাসকে কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) আকারে গ্যাস বিশেষ বার্জে পরিবহন করা হবে। মূল ভূখণ্ডে আনার পর সিএনজি পুনঃগ্যাসীকরণ করে স্থানীয় উৎপাদন হ্রাস এবং সীমিত এলএনজি আমদানির ফলে ব্যাপক ঘাটতির মধ্যে থাকা জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি সংস্থা পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা বলছেন, এই মুহূর্তে এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুবিধা দেশে নেই। গ্যাস রূপান্তরের জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে এবং ভোলা দ্বীপ থেকে মূল ভূখণ্ডে গ্যাস পরিবহনের জন্য এই ধরনের বিশেষায়িত বার্জের দরকার হবে।

নাম না প্রকাশের শর্তে পেট্রোবাংলার এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, এই ধরনের প্রক্রিয়া রেডিমেড হলেও Ñতা বাস্তবায়নে কমপক্ষে সাত থেকে আট মাস সময় লাগে। কিন্তু, একেবারে নতুন করে গ্যাস ক¤েপ্রস করে জাহাজে পরিবহন করতে কমপক্ষে দেড় বছর সময় লাগবে।

পেট্রোবাংলাকে দেওয়া প্রস্তাবে কোম্পানিগুলো বলছে, তারা ভোলা থেকে সিএনজিতে রূপান্তরিত করে গ্যাস এনে দিতে পারবে দেশের অন্যান্য জায়গায়। এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি তারা পর্যালোচনা করে দেখছে আদৌ এটি কতটা অর্থনৈতিকভাবে উপযোগী। কেউ কেউ গ্যাসক্ষেত্রের কনডেনসেট ঘাটতি দেখিয়ে, পাচার করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি হচ্ছে।

গ্যাসের বিকল্প জ¦ালানি তেলের ব্যবহারে বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়। উৎপাদন কমে যাওয়া ও ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রফতানি আয়ে ভাটা পড়বে বলে আশঙ্কা এ খাতের ব্যবসায়ীদের। রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শিল্প কারখানায় গ্যাস নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। দেশে বৃহৎ শিল্পের সংখ্যা তিন হাজারের কিছু বেশি। উৎপাদনমুখী শিল্পের সঙ্গে জড়িত মোট কর্মসংস্থানের ৬৮ শতাংশই এ খাতে। এছাড়া কাঁচামালের ৬৩ শতাংশ ও বিদ্যুৎ-জ্বালানির ৫৬ শতাংশই ব্যবহার করে বৃহৎ শিল্পগুলো। বর্তমানে গ্যাস সঙ্কটে বড় শিল্পের কারখানাগুলোতে উৎপাদন কমে গেছে। দেশের বড় শিল্পের মধ্যে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। রফতানি আয়ের ৮২ শতাংশই আসে এই খাত থেকে। বৈশি^ক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে চাহিদায় ভাটা পড়েছে। পোশাক শিল্পে ক্রয়াদেশ কমার পাশাপাশি বিদ্যুৎ-গ্যাসের স্বল্পতায় উৎপাদনও কমছে বলে জানান বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম ও নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

দেশের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় শিল্প কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সরকারকে আরো কৌশলি নীতি গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর। বিদ্যুৎ-গ্যাস সঙ্কটে কোন শিল্প কারখানা যেন বন্ধ না হয়, সেদিকে সরকারের নজর দেয়ার তাগিদও দিয়েছেন তিনি। গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে কারখানাগুলো। তাতে কিছু কারখানা বন্ধও হয়ে যেতে পারে। কারণ, সবার পক্ষে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করে উৎপাদন সচল রাখা সম্ভব হবে না।

ভোলা থেকে গ্যাস আনতে তিন দেশিয় কোম্পানি প্রস্তাব দিয়েছে। পেট্রোবাংলাকে দেওয়া প্রস্তাবে কোম্পানিগুলো বলছে, তারা ভোলা থেকে সিএনজিতে রূপান্তরিত করে গ্যাস এনে দিতে পারবে দেশের অন্যান্য জায়গায়। তবে পেট্রোবাংলা বলছে, এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি তারা পর্যালোচনা করে দেখছে আদৌ এটি কতটা অর্থনৈতিকভাবে উপযোগী।

ভোলা থেকে গ্যাস এনে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া কোম্পানি তিনটি হচ্ছে ইন্ট্রাকো সিএনজি, সুপার গ্যাস ও অফসিডিয়ার সিএনজি। এই কোম্পানি তিনটিরই দেশে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন রয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ভোলা থেকে প্রতিদিন ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সিএনজি করে নিয়ে আসা হবে। এতে দেশের জাতীয় গ্রীডে দৈনিক অন্তত ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যোগ হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেট্রোবাংলার একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, এখন আমরা যেসব ইনফরমেশন জোগাড় করছি তার পুরোটা ইন্টারনেট থেকে। আবার যে তিনটি কোম্পানি আমাদের কাছে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে তারাও আমাদের নানা ধরনের ইনফরমেশন দিচ্ছে। বিষয়টি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে গ্যাস আনার খরচ বিবেচনা করেই বলা যাবে এটি করা সম্ভব কি-না। দেশের শিল্প কারখানাগুলো এই পদ্ধতিতে ট্রাকে সিলিন্ডারে করে গ্যাস পরিবহন করে। যদিও তার পরিমাণ খুবই কম। বেশি পরিমাণ গ্যাস এই পদ্ধতিতে পরিবহন করা সম্ভব হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে পেট্রোবাংলা।

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, ভোলার গ্যাসক্ষেত্র থেকে এখন মোট ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনযোগ্য। এরমধ্যে ৬৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে ভোলায়। এর বাইরে উদ্বৃত্ত হিসেবে রয়ে যাবে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এই গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে বরিশালে আনার প্রাথমিক পরিকল্পনা অনেক আগেই করা হয়েছিল। কিন্তু নদীর নিচ দিয়ে রিভারক্রসিং করে পাইপলাইনের এই গ্যাস আনাটা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক হবে না বলে পরে তা পিছিয়ে যায়। কিন্তু এখন ইউক্রেন রাশিয়া সঙ্কটের কারণে সারাবিশ্বে যখন জ্বালানি সঙ্কট, স্পট মার্কেটের এলএনজির দাম অনেক বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় সরকার স্পট মার্কেটের এলএনজি আমদানি করতে না পারার কারণে দেশে গ্যাস সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্কট কাটাতে এবার ভোলার গ্যাস জরুরি ভিত্তিতে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

গ্যাস সঙ্কটের সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে দীর্ঘ সময়ের লোডশেডিং। এতে তৈরি পোশাক কারখানায় উৎপাদন আরও কমে গেছে। রফতানি আদেশ কমে যাওয়া, শিপমেন্ট স্থগিত হওয়ায় গতমাসে কমেছে রফতানি আয়। আগামী মাসেও রফতানি আয় কমবে। এতে ছোট ও মাঝারি ধরনের কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কারখানাগুলোতে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি সংশ্লিষ্টদের।
করোনা অতিমারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ^জুড়ে অর্থনীতিতে মন্দা চলছে। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও। সঙ্গে বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দেয় মার্কিন ডলারের সঙ্কট। ভাটা পড়েছে গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদনেও। প্রতিদিনের কর্মঘণ্টার ৫ থেকে ৬ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ পাচ্ছে না শিল্প কারখানাগুলো। এমন বহুমুখী সংকটে রফতানি আয়ের প্রধান উৎস তৈরি পোশাক কারখানায় উৎপাদন কমেছে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে রফতানি আয় কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।

বিদ্যুৎ ও গ্যাস সঙ্কটে ডিজেল ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে উৎপাদন ব্যয়ও। এতে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে সময় মতো পণ্য পৌঁছে দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রফতানি আয় বাড়াতে শিল্প কারখানাগুলোতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতারা।

দেশে মার্কিন ডলারের মজুদ শক্তিশালী করতে রফতানি আয় বাড়ানোর বিষয়ে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। কারখানাগুলোতে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারলে আগামীতে বড় ধরনের লোকসান গুণতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, ভোলার গ্যাস আমরা সিএনজিতে রূপান্তরিত করে কাভার্ডভ্যানে করে নিয়ে আসার প্রাথমিক পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছি আমরা। এতে করে অল্প জায়গায় বেশি গ্যাস আনা সম্ভব হবে। এখন সেই গ্যাস নদীপথ হয়ে সড়কপথে আনাটা কতখানি নিরাপদ হবে তা নিয়েই আমরা পর্যালোচনা করছি। নিরাপত্তার পাশাপাশি কারিগরি ও আর্থিক দিকও দেখা হচ্ছে।

১৯৯৫ সাল থেকে ভোলায় গ্যাস পাওয়া যায়। কিন্তু ভোলা শাহবাজপুর ছাড়াও ভোলা নর্থ এ গ্যাস পাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাপেক্স। ভোলায় আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনার কথাও সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে। কিন্ত সেখান থেকে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যোগ করার মতো কোনও পাইপলাইন নেই।

এদিকে পোশাক ও বস্ত্র খাতের চেয়েও গ্যাসসঙ্কটে বেশি ভুগছে সিরামিক কারখানা। স¤প্রতি সিরামিক কারখানাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টাকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।

বিসিএমইএ সভাপতি চিঠিতে বলা হয়, ঢাকার সাভার ও ধামরাই, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও মেঘনাঘাট, গাজীপুরের কাশিমপুর, ভবানীপুর, ভাওয়াল মির্জাপুর, শ্রীপুর, মাওনা, নরসিংদীর পাঁচদোনা, ময়মনসিংহের ভালুকা ও ত্রিশাল এবং হবিগঞ্জের মাধবপুর ও বাহুবলের ২৫টি সিরামিক তৈজসপত্র, টাইলস ও স্যানিটারিওয়্যার কারখানায় তীব্র গ্যাস-সঙ্কটে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এসব কারখানায় ১৫ দিন ধরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত একটানা ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকছে না।

বিসিএমইএর সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন বলেন, গত সপ্তাহে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর গাজীপুরের হোতাপাড়ায় আমাদের ফার সিরামিকের কারখানায় গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সিরামিকশিল্প গ্যাসনির্ভর হলেও ইস্পাতশিল্পে সবচেয়ে বেশি দরকার হয় বিদ্যুৎ। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ না পাওয়ায় এ খাতটিরও উৎপাদন এখন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যেসব ইস্পাত কারখানা গ্যাসচালিত ক্যাপটিভ জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, তারা পড়েছে সবচেয়ে বেশি বিপাকে।

রাজধানীর কোনাপাড়ায় শাহরিয়ার স্টিল মিলসে দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টন রড উৎপাদন করা হয়। এ জন্য তাদের ২৪ মেগাওয়াটের বিদ্যুতের প্রয়োজন। তার মধ্যে ডিপিডিসির ২০ মেগাওয়াটের লাইন আছে তাদের। বাকিটা আসে গ্যাসচালিত ক্যাপটিভ জেনারেটরের মাধ্যমে। বেশ কিছুদিন ধরেই দিনের বেলায় গ্যাসের চাপ থাকছে না। ফলে ক্যাপটিভ জেনারেটর চালাতেও সমস্যা হচ্ছে। এ বিষয়ে শাহরিয়ার স্টিল মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মাসাদুল আলম বলেন, গ্যাসের সঙ্কট ইদানীং আরও তীব্র হয়েছে। এতে আমরা আমাদের উৎপাদন সক্ষমতার ৫০ শতাংশের নিচে উৎপাদন করছি।

এদিকে গ্যাসসঙ্কটের সমাধান চেয়ে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, এত দিন সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে গাজীপুর, শ্রীপুর ও ভালুকা শিল্পাঞ্চলে কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ মোটামুটি ভালো ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এ সংকট তীব্র হয়েছে। দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পর্যায়ক্রমে বস্ত্রকলগুলো রুগ্ন হয়ে পড়বে।

গ্যাস-বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে শিল্প খাতে প্রভাবের বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে কারখানাগুলো। তাতে কিছু কারখানা বন্ধও হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, চাপের মুখে সরকার এলএনজি আমদানি করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এলএনজির চেয়ে ভালো বিকল্প হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক গ্যাস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্যাস’

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ