Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুনর্বাসনের টাকা কার পেটে?

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৫ এএম, ২৬ অক্টোবর, ২০২২

বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বে রোল মডেল দাবি করা হয়। অথচ প্রাকৃতির দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বরাদ্দে বিবরণে সচ্ছতা ফিরে আনতে পারেনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। তবে ক্ষতিগ্রস্তাদের পুরর্বাসনের দলীয়করণ, অনিয়ম-দুনীতি এবং লুটপাট অভিযোগ থাকছে সব সময়ে। গত কয়েক বছরে দেশে আইল্যা, ফণী, বুলবুল, ইয়াস, আমপানসহ বেশকয়েকটি ভয়াবহ দুর্যোগের মুখে পড়েছে দেশ। প্রাকৃতির এই দুর্যোগে ক্ষতি হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ। এসব দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে সহায়তা এবং ঘুর্ণিঝড় থেকে রক্ষার জন্য সেল্টার নির্মাণে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। দেশি-বিদেশী এসব বরাদ্দের টাকা খরচ করা হয়। বিপন্ন মানুষের জন্য দেয়া অর্থ লুটপাটের মহোৎসব হয়েছে। ফলে দুর্যোগ হলেই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগে পড়তেই হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে পুনর্বাসনের টাকা কার কার পেটে যায়?

ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টালে দেখা যায়, ১৯৭০ সালের ভোলা সাইক্লোনে প্রায় ৫ লাখ মানুষ মারা গেছে। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যায়। প্রায় একই ধরণের আরেকটি ঘূর্ণিঝড় ছিল ২০০৭ সালে সিডর। সেখানে মানুষের মৃত্যু হার তুলনামূলক কম ছিল। ওই ঘূর্ণিঝড়ে ৩ হাজার ৪০৬ জন মারা গিয়েছিল। এরপরে বাংলাদেশে আরো বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। ২০০৯ সালের ২৫ শে মে আইলার আঘাতে মারা যায় ১৯০জন। ২০১৩ সালে মহাসেনে মারা যায় ১৮ জন। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল সাতক্ষীরা। প্রায় ৪৭ কোটি টাকার মাছ নষ্ট হয়েছিল বাংলাদেশে। এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে প্রায় ১৭ হাজার কাঁচাবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল। আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার বাড়ি। এর পরে গত চার বছরে ছয়টি ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাঙের তাণ্ডবে কমপক্ষে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আশঙ্কা মতোই দীপাবলির সন্ধ্যার পর থেকে বাংলাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এদিকে গত এক দশকে সরকারি ভাবে যে সব বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তার বেশির ভাগে ক্ষতিগ্রস্তরা পরিবার গুলো পাননি।বরং সরকারি বরাদের টাকা বিরতণের ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও দুটপাটের মতো ঘটনা ঘটেছে। আবার ত্রাণ বিররণে অনেক স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন দুর্যোগ কবলে পড়ার কারণে উন্নয়ন প্রকল্প গুলো থুবড়ে পড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছে কর্মকর্তারা।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে সারা দেশে ৪১৯টি ইউনিয়নে আনুমানিক ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। মারা গেছেন মোট ৯ জন। প্রতিমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে ৮ জন মারা গেছেন ঘরের উপর গাছ পড়ে। প্রায় সাত হাজার আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ লাখ মানুষকে নিয়ে আসা হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় শেষে মধ্যরাত থেকে মানুষ বাড়ি ফিরেছে।

গত সোমবার রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে সারাদেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং সাধারণ মানুষও মারা গেছে। নিহত ৯ জনের মধ্যে কুমিল্লায় ৩ জন, ভোলায় ২ জন, সিরাজগঞ্জে ২ জন, নড়াইল ও বরগুনায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে,সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ঝড়ের বেগ সবচেয়ে বেশি ছিল। হাওয়ার বেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৪ কিমি।

বরিশাল ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় নদীতে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়। সিত্রাঙের তাণ্ডবে বাংলাদেশে ঠিক কী পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা হয়নি। কিন্তু সিত্রাং-ই প্রথম নয়। এর আগেও দেশের আঘাত হেনেছে একাধিক ঘূর্ণিঝড়। সাইক্লোনের তাণ্ডবলীলায় পদ্মাপারে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে প্রচুর ফসলের।

২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সে দেশে বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় দাপট দেখিয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম ঘূর্ণিঝড় ফণী, বুলবুল, আমপান, ইয়াস। আবার অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী ঝড় জাওয়াদেরও প্রভাব পড়েছিল পদ্মাপারে। ২০১৯ সালে হানা দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ফণী। অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থায় বাংলাদেশে ঢুকেছিল এই ঝড়। তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭০ কিমি। ঝড়ের বেগ কম থাকলেও ফণীর প্রভাবে বাংলাদেশে প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয়েছিল।

এই ঘূর্ণিঝড়ের হানায় সে বার ১ হাজার ৮০৪ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছিল। ফণীর প্রভাবে ২ হাজার ৩৬৩টি বাড়ি সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ১৮ হাজার ৬৭০টি বাড়ি। ৩৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। ফণীর দাপটে ভোলা, নোয়াখালি ও লক্ষ্মীপুরে ১ জন ও বরগুনায় ২ জন-সহ মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়। নিখোঁজ হয় শতাধিক গবাদি পশু। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ও নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করেছিল ফণী। এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, গত ৫২ বছরে সে দেশে যতগুলি ঘূর্ণিঝড় হানা দিয়েছে, তার মধ্যে ফণীর স্থায়িত্বই সবচেয়ে বেশি ছিল।

ফণীর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হেনেছিল আরও একটি ঘূর্ণিঝড়। যার নাম দেওয়া হয়েছিল বুলবুল। বুলবুলের তাণ্ডবে বাংলাদেশে কমপক্ষে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনা, নোয়াখালি, বরিশাল, চট্টগ্রাম-সহ একাধিক এলাকার প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। বুলবুলের দাপটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি যে যে জেলায় হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল সাতক্ষীরা। প্রায় ৪৭ কোটি টাকার মাছ নষ্ট হয়েছিল বাংলাদেশে। এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে প্রায় ১৭ হাজার কাঁচাবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল। আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার বাড়ি। এর পর করোনা অতিমারির সময় হানা দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আমপান। যার তাণ্ডবে তছনছ হয়েছিল।সে দেশের ২৬টি জেলার ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছিল। ২০২০ সালের মে মাসের এই ঘূর্ণিঝড়ে সে দেশের ছয় জেলায় মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়। ১ লক্ষ ৭৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফণীর রেকর্ড ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রায় ২৮ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছিল আমপান। আমপানের ভয়াল স্মৃতির পর ২০২১ সালের মে মাসে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। যার নাম ইয়াস। এর প্রভাবেও পদ্মাপারে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। আমপানের দাপটে সে দেশের ১ লক্ষ ২০ হাজার ৭১২টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। প্রায় ৮ হাজার ৬২ হেক্টর শস্যক্ষেতের ক্ষতি হয়। এ ছাড়াও মৎস্যচাষেও ক্ষতির মুখে পড়েন অনেকে। ক্ষতি হয় নদীবাঁধেরও।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ইয়াসের তাণ্ডবে মোট ২ হাজার ৯৫১ কোটি ৭০ লক্ষ ৩০ হাজার ৫২৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল। ওই বছরের ডিসেম্বরে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। যার নাম জাওয়াদ। যার প্রভাবে বরিশাল, চাঁদপুর, ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। সরষে, মুসুর ডাল, ধান, তরমুজ, আলু চাষের ক্ষতি হয়েছিল। সেই সময় বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবার একটি ঘূর্ণিঝড় হানা দিল বাংলাদেশে। যার দাপটে প্রাণহানিও হয়েছে। সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে শেষমেশ সে দেশে ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক কী দাঁড়ায়, সে দিকেই তাকিয়ে পদ্মাপারের বাসিন্দারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->