Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমদানিকারককে ৫৭ কোটি টাকা জরিমানা

রোলস-রয়েস গাড়িকাণ্ড বিশ্বখ্যাত গাড়িটি ছাড় করতে গুনতে হবে ৮৫ কোটি টাকা

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

শুল্কায়ন এবং কাস্টমস ছাড়পত্র ছাড়াই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া সেই বিলাসবহুল রোলস-রয়েস গাড়ির আমদানিকারককে ৫৭ কোটি টাকা জরিমানা করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হাতে জব্দ হওয়া গাড়িটি দুই কোটি ২৯ লাখ টাকা শুল্ককর পরিশোধ করে খালাস নেওয়ার আদেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ গাড়িটি খালাস নিতে হলে জরিমানা, শুল্ক-করসহ গুনতে হবে ৮৫ কোটি টাকা। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

তারা বলেন, শুনানি শেষে ১২ অক্টোবর কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান এ আদেশ জারি করেন। আদেশে ৩০ দিনের মধ্যে শুল্ক-কর ও দুই ধরনের জরিমানা পরিশোধ করার কথা বলা হয়। বিচারাদেশ অনুযায়ী আমদানিকারককে ৫৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়। বিমোচন জরিমানা আরোপ করা হয় ৪০ লাখ টাকা। আর শুল্ক-কর অব্যাহতি সুবিধা না পাওয়ায় গাড়ি খালাসে শুল্ক-কর দিতে হবে ২৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ৮৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।

যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত রোলস-রয়েস ব্র্যান্ডের গাড়িটি ২০২১ সালে তৈরি। এ গাড়ির সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি ৬ হাজার ৭৫০। মডেলের নাম কালিনান এসইউভি। শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করলেও বিচারাদেশ অনুযায়ী অবৈধভাবে খালাস করে নেওয়া ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের জন্য রাখায় এ শুল্ক-কর ও জরিমানা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারককে।

গত এপ্রিলে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িটি আমদানি করেছিল চট্টগ্রাম ইপিজেডের হংকং ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত জেড অ্যান্ড জেড ইনটিমেটস লিমিটেড। তবে শুল্কায়নের আগেই গত ১৭ মে গাড়িটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরীফ জহিরের ঢাকার বারিধারার বাসায় সরিয়ে নেওয়া হয়। এ খবর জানতে পেরে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর অভিযান চালিয়ে গাড়িটি জব্দ করে। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া আমদানি করা গাড়িটি অবৈধভাবে অপসারণ করায় জব্দ করা হয়েছিল। এরপরই তদন্ত করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারককে কারণ দর্শানো নোটিস জারি করে। তার জবাবও দেয়া হয়। বিচারাদেশ অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িটি আমদানি করলেও শুল্কায়ন হওয়ার আগে অবৈধভাবে অপসারণ করা হয়েছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের সুযোগ না থাকলেও প্রজ্ঞাপনের নিয়ম লঙ্ঘন করে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নিজস্ব বাসভবনে গাড়িটি রাখা হয়েছে। আবার যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হস্তান্তর করা হয়নি। এ কারণে আমদানিকারক এ গাড়িতে শুল্ক-কর অব্যাহতি পাওয়ার সুযোগ নেই বলে বিচারাদেশে বলা হয়।

তবে আমদানিকারকের পক্ষ থেকে কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রাইব্যুনালে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। তাদের দাবি, বেপজার অনুমোদন নিয়েই শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়িটি আমদানি করা হয়েছে। মালিকানা ও নাম পরিবর্তিত হলেও প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন একই। আমদানির পর শুল্ক কর্মকর্তারা গাড়িটি পরিদর্শনও করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোলস-রয়েস
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ