Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সুপার শপ স্বপ্ন-আগোরাতে বিক্রি হচ্ছে পচা মাছ গোশতসহ মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য

| প্রকাশের সময় : ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


ষ দফায় দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও জরিমানার পরও থেমে নেই তাদের প্রতারণা
ষ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন- আর জরিমানা নয় এগুলো বন্ধ করে দিতে হবে
স্টাফ রিপোর্টার : দফায় দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও জরিমানার পরও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সুপার শপগুলোতে বিক্রি হচ্ছে পচা মাছ-গোশত। বিশেষ করে স্বপ্ন ও আগোরাতে দফায় দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করলেও পচা মাছ-গোশত বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না। পাশাপাশি মূল্যহ্রাসের বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার পর চড়া দামে বিক্রি করছে পচা মাছ-গোশত মেয়াদোত্তীর্ণ ও বড় বড় ব্র্যান্ডের নামে নকল কসমেটিকস। আর এসব কারণে  রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সুপার শপ স্বপ্ন, আগোরাসহ অব্যাহত রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। সুপার শপ আগোরা ও স্বপ্নতে চলতি বছরের ১১ মাসে এপিবিএন, র‌্যাব ও সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত কমপক্ষে ১৫ বার জরিমানা করেছে। তারপরও টাটকা খাদ্যসামগ্রী বিক্রির নামে স্বপ্ন ও আগোরাতে বন্ধ হচ্ছে না পচা পণ্য বিক্রি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পচা মাছ-গোশত ও বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়া পণ্য বিক্রির দায়ে একাধিকবার জরিমানা করা হয়েছে আগোরা ও স্বপ্নতে। তারপরও ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা ও ঠকানো থেমে নেই। বাজার মনিটরিং টিম পরিচালনার জন্য এখানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা, ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি), বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর রুটিনমাফিক কাজ করছে। কিন্তু এদের প্রতারণা বন্ধ করা যাচ্ছে না। এখন সরকার যদি এসব সুপার শপ বন্ধ করে দেয়ার অনুমতি দেয় তাহলে এদের ঠকানো ও প্রতারণার ব্যবসার হাত থেকে সাধারণ মানুষ রক্ষা পাবে। শুধু জরিমানা করে এদের দমানো যাচ্ছে না। এদের বিরুদ্ধে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের উচ্চ মহলে সুপারিশ করা হয়েছে।  
জরিমানার বিষয়ে জানতে চাইলে, স্বীকারোক্তি দিলেন স্বয়ং আগোরার আউটলেট ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) দিপুই। তিনি বলেন, মাছ, গোশত ও এক্সপাইরিং ডেট না থাকার কারণে ওরা (বাজার মনিটরিং টিম) আমাদের এখানে জরিমানা করেছে। আমাদের কাছে মাছ ও গোশত ভালো মনে হয়েছে। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে ভালো মনে হয়নি। বিএসটিআইয়ের লোগো না থাকার কারণে জরিমানা করা হয়েছে। তাারা কোনো কথাই  শোনেন না, জরিমানা করে চলে যান। এখানে আমাদের কিছু করার থাকে না। তারপরও কেন ভেজাল পণ্য বিক্রি করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আউটলেট ইনচার্জ বলেন, আমরা সচেতন হচ্ছি। যেন ভালো পণ্য সরবরাহ করতে পারি।
এ ব্যাপারে সুপার শপ স্বপ্নর কর্তৃপক্ষর সাথে যোগাযোগ করার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ স্বপ্নর তেজগাঁও শপে কয়েক দফা যোগাযোগ করলে তাদের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনো কথা বলবেন না।
 তেজগাঁও শপের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা কোনো খারাপ জিনিসপত্র বিক্রি করি না। তারপরও ভ্রাম্যমাণ আদালত কেন বারবার জরিমানা করছে এটা আমার জানা নেই। তিনি বলেন, তারপরও তো স্বপ্নতে সব সময় ক্রেতাদের ভিড় লেগেই আছে।
চার দিন আগে রাজধানী বনানীর অভিজাত বিপণিবিতান স্বপ্নকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। ৭ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ জরিমানা করা হয়। একই ফ্রিজারে একই সঙ্গে মাছ ও গোশত হিমায়িত রাখা এবং প্যাকেটজাতকরণের তারিখ ও মেয়াদ উল্লেখ না করে বিক্রির অপরাধে সুপার শপ স্বপ্নকে এ জরিমানা করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার জানান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর অধীনে দোকানটিকে দোষী সাব্যস্ত করে মামলাসহ জরিমানা করা হয়।
চলতি বছরের ১৬ অক্টোবর মূল্য তালিকা টানানো না দেখে এবং  মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য পাওয়ায় সুপার শপ স্বপ্নের রাজধানীর বনানী শাখাকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় রোববার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এই জরিমানা করা হয়। এপিবিএনের সমন্বয়ে ওই ভ্রাম্যমাণ আদালত বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে সুপারশপ স্বপ্নকে জরিমানা করেছে। আউটলেটে মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা হচ্ছিল না। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির জন্য মজুদ রাখার কথাও ব্যবস্থাপক মো: আলাউদ্দিন স্বীকার করেন। এসব কারণে এ জরিমানা করা হয়।  ভ্রাম্যমাণ আদালতের প্রধান সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট  মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ার স্বপ্নকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। এই অভিযানে এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার মো: সাইদুর রহমান ও ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রজবী নাহার রজনী ছিলেন।
এর আগে ১৪ আগস্ট রোববার বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন পণ্য বিক্রির দায়ে সুপার শপ স্বপ্নকে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।     রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় ৫ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন-৫), ঢাকা জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআইয়ের যৌথ অভিযানে এ জরিমানা করা হয় বলে এপিবিএন জানিয়েছে। এপিবিএন-৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো: সাইদুর রহমান, ঢাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার তানিয়া সুলতানা ও বিএসটিআই কর্মকর্তা মো: মনির হোসেনের উপস্থিতিতে এ অভিযান চালানো হয়।
এপিবিএন-৫ এর অপারেশন্স অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মো: সাইদুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগস্ট মাসে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দেখা যায় খিলগাঁওয়ের সুপার শপ স্বপ্ন বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন পণ্য যেমনÑ লোশন, শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ, বডি  স্প্রে, টুথপেস্ট, সেভিং ফোম, পাউরুটি, মশার কয়েল, বিভিন্ন প্রকার চকোলেট, মধু, আটা ইত্যাদি পণ্য লাইসেন্স ছাড়া বিক্রি করে আসছে, যা বিএসটিআই অধ্যাদেশ ১৯ ও ২৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এর আগে পচা মাছ-গোশত বিক্রির অভিযোগে স্বপ্নকে জরিমানা করেন সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান জানান, পচা মাছ-গোশত বিক্রির অভিযোগে কয়েক দিন আগে সুপার শপ স্বপ্ন ও আগোরাসহ কয়েকটি সুপার শপের ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে কয়েক মাস আগে মজুদ করে রাখা পচা মাছ-গোশত বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য বিক্রি, বিক্রীত মালের রসিদ না দিয়ে ভ্যাট রাখাসহ মোট ৩ অপরাধে এই সুপার শপকে মোট ৮ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজধানীর মালিবাগে সুপার শপ স্বপ্নসহ কয়েকটি সুপার শপ ৬ মাস ধরে ফ্রিজে রাখা পচা মাছ-গোশত বিক্রি করে আসছিল।
উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা শাহানা বেগম বলেন, দেশের অন্যতম পুরনো চেইন শপ  স্বপ্ন। এখানে পচা মাছ-গোশত বিক্রি হয় এটা বিশ্বাস করতেও কষ্ট হয়। আমারা  বিশ্বাস করতাম এরা অন্তত পচা-বাসি পণ্য বিক্রি করবে না। প্রায় প্রতিদিনই তাদের বিজ্ঞাপনও দেখি। তবে নিয়মিত পচা মাছ আর নিম্নমানের সবজি কিনে বুঝছি এত বিজ্ঞাপন শুধু ক্রেতাদের মন ভোলানোর জন্য।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও ক্রেতারা জানান, নষ্ট, পচা, মাছ-গোশত, ফরমালিনযুক্ত শাকসবজি ও ফল বিক্রি এবং চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাসাধারণের সঙ্গে প্রতারণার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে সুপার শপ স্বপ্নর বিরুদ্ধে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারী-কর্মকর্তা, মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যসামগ্রী সংরক্ষণ, ক্রেতাসাধারণের কাছে বিক্রি, ফরমালিনযুক্ত সবজি ও ফল বিক্রি এবং নষ্ট ও পচা মাছ-গোশত বিক্রির অভিযোগে বেশ কয়েকবার আগোরা সুপার শপকে জরিমানা করা হয়। তাছাড়া সাধারণ  ক্রেতারাও মাঝে মধ্যে আগোরার বিরুদ্ধে পচা মাছ-গোশত পরিবেশনের অভিযোগ তুলত।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্যের কম মূল্যের কথা প্রচার করা হলেও বাস্তবে তা নয়। বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য তালিকায় লিখে সেখান থেকে কমিশন দেয়া হলেও বাজারদরের চেয়ে বেশি মূল্য আদায় করা হয়। আবার কোনো কোনো পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতারা কিনতে এলেই দেয়া হয় জটিল শর্ত। বিজ্ঞাপনে বলা হয় নাজিরশাইল চাল প্রতি কেজি ৪৫ টাকা। কিনতে এলে বলা হতো, একসঙ্গে ২০  কেজি নিলে এই সুবিধাটা পাওয়া যাবে। তাছাড়া যৌক্তিক কোনো কারণ থাকলে বিক্রীত মাল ফেরত নেয়ার ঘোষণা দিলেও কোনো দিনও কাস্টমারের কাছ থেকে বিক্রীত পণ্য ফেরত হয় না। এ নিয়ে প্রায়ই বিক্রয় প্রতিনিধি ও শাখা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে বাগি¦ত-া হচ্ছে ক্রেতাদের।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় সুপার শপ স্বপ্নর কর্তৃপক্ষ  মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যে নিজেরাই নতুন তারিখ বসায়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী একজন ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন, সুপার শপের পণ্যসামগ্রীর মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যে নতুন তারিখের লেভেল লাগিয়ে রাখে। এর প্রমাণ আমি পেয়েছি। তবে অভিযোগ করলেও কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেনি।
সরেজমিন ঘণ্টাখানেকের অবস্থানের পর ১১ নম্বর সেক্টরের স্বপ্ন আউটলেটটিতে বেশ কয়েকজন ক্রেতার মুখেই শোনা গেল স্বপ্নের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগ। উত্তরার বাসিন্দা শান্ত কোরেশি বলেন, মাছ কিনে বাসায় গিয়ে দেখি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি রাখা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তিনি বলেন, আমরা পণ্যের গায়ে লেখা মূল্য দেখে কিনি। একসঙ্গে অনেক পণ্য  কেনায় কোনটার কোন দাম রাখছে সবসময় লক্ষ করা হয় না। বাসায় গিয়ে যখন মেলানোর চেষ্টা করি তখন অনেকবারই বেশি মূল্য নেয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এটা ভুল নয়, প্রতারণা। তিনি বলেন, একটা বড় মাছ কেনার পর তা কেটে প্যাকেট করার পর বাসায় নিয়ে ওজন করার পর ৫ কেজির মধ্যে কমপক্ষে দেড় কেজি মাছ কম থাকে। এসব বিষয়ে বারবার অভিযোগ করলে এর কোনো সমাধান পাওয়া যায় না।
গত শুক্রবার সকালে উত্তরার ব্যস্ততম ১১ নম্বর সেক্টরের স্বপ্নর আউটলেটটি ঘুরে দেখা যায়, পচা মাছ-গোশত হিমায়িত করে রাখা হয়েছে এবং তা টাটকা গোশতের দামেই বিক্রি করছে। এ মূল্য আবার বাজারমূল্যের চেয়েও বেশি। দেখা যায়, কেজিপ্রতি ৬শ’ টাকা মূল্যে দেশী মুরগি বিক্রি হচ্ছে। হাড়ছাড়া গরুর গোশত বিক্রি হচ্ছে ৫৯৫ টাকা দরে। আর এসবই বাসি। পাশাপাশি টাটকা গোশত ও রাখা আছে। একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে আগোরার বিরুদ্ধেও।
ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ারের আগোরা। ভেতরে ঢুকতেই সারি সারি পণ্যের সমাহার। মেয়াদোত্তীর্ণ এবং নিম্নমানের পণ্য বিক্রির দায়ে  মোবাইল কোর্টের জরিমানার খবরে ক্রেতারা এখন আগোরাবিমুখ। সম্প্রতি আগোরায় বিভিন্ন পণ্য দেখতে দেখতে চোখ চড়কগাছ!  মেরিন্ডার ৪৫০ মিলি বোতল চোখে পড়ল, যার মেয়াদ এ মাসেই  শেষ হয়েছে। উৎপাদনের তারিখ দেয়া হয়েছে ৪ মাস আগের। এভাবে নতুন ও পুরনো পণ্য একসাথে মিশিয়ে রাখা হয়েছে  ক্রেতাদের ধোঁকা দিতে। ফুড ফ্লেভার, কসমেটিকসেও দেখা গেছে  মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের ছড়াছড়ি। আগোরায় রাখা মাছের মূল্যও বেশি রাখা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন ক্রেতারা।
ধানমন্ডির এক ক্রেতা কামরুজ্জামান বলেন, বাইরের কাঁচাবাজারে  টেংরার কেজি সাড়ে চারশ’ টাকা। কিন্তু এখানে সাড়ে ৭শ’ টাকা। কাঁচাবাজারের তুলনায় বেশি মূল্য রাখার কারণেই এখান থেকে এখন মাছ ও গোশত কেনা সম্পূর্ণ বাদ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। এর আগে সকালে ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে জেনেটিক প্লাজা সংলগ্ন আগোরায় ম্যাক্স, ডু-ইট, এক্স-এর মতো বডি স্প্রেগুলোরও দেখা যায় মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। সবগুলো পণ্যেরই উৎপাদন ও আমদানির সময় ২০১৪ সাল। ভারত থেকে আমদানি করা লরেলের একটি শ্যাম্পুর বোতলে উৎপাদনের মেয়াদ ২০১৪ সাল  দেখালেও মেয়াদোত্তীর্ণের কোনো তারিখ উল্লেখ নেই।
আগোরা থেকে চাল, ডাল, তেল ও কিছু শুকনো পণ্য কিনে ঘরে ফিরছিলেন মিরপুরের ইব্রাহিম খলিল। তিনি পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সেজন্য সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয় ইব্রাহিমকে। ইব্রাহিম বলেন, আগোরা থেকে আমি কোনো সময়ই মাছ-গোশতসহ পচনশীল কোনো পণ্য কিনি না। আমরা জানি, আগোরা পচা মাছ ও গোশত বিক্রি করে।



 

Show all comments
  • Ahasan ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ২:৪৮ পিএম says : 0
    These super shops are disgrace to the business community and deadly to the consumers. Government should jail the owners not the office staff.
    Total Reply(0) Reply
  • Masud ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:০১ পিএম says : 0
    আর জরিমানা নয় এগুলো বন্ধ করে দিতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Rofiq ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:০২ পিএম says : 0
    ara bole tader sob kisu fresh. kintu bastobe tar ulto.
    Total Reply(0) Reply
  • ফিরোজ খান ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:০৮ পিএম says : 0
    দফায় দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও জরিমানার পরও থেমে নেই তাদের প্রতারণাা। আমরা সাধারণ মানুষ প্রশাসনের কাছে জনতে চাই এর শেষ কোথায় ? আমরা আর কত প্রতারিত হবো ?
    Total Reply(0) Reply
  • মিলন খন্দকার ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:১০ পিএম says : 0
    এগুলো আসলে সুপার শপ নয়, এগুলো হলে মানুষ ঠকানোর শপ। এদের বিরুদ্ধে অতিসত্ত্বর কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • সুলতান আহমেদ ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:১১ পিএম says : 0
    আমরা সরল বিশ্বাসী মানুষগুলো আর কত প্রতারিত হলে প্রশাসন এই সব কসাইদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহল করবে?
    Total Reply(0) Reply
  • হুমায়ন কবির ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:১৮ পিএম says : 0
    অনতিবিলম্বে মানুষ ঠকানোর এই ব্যবসা বন্ধ করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • মাহমুদা খানম ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:২৫ পিএম says : 0
    এরা প্রতিনিয়ত ভেজালযুক্ত ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য দিচ্ছে। আবার দামও নিচ্ছে গলাকাটা। হাইলি ডেকরেশন ও চোখ ধাধানো আলোর এই কসাইখানগুলো এখনই বন্ধ করা না হলে, পরবর্তীতে এগুলোকে সামলানো যাবে না। তাই যা করা এখনই করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বপ্ন

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ