Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রেসিডেন্ট যেভাবে চাইবেন, ইসি গঠন করবেন আমরা সেটা মেনে নেব : সংসদে প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট দেখছে

| প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১:৩৫ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রেসিডেন্টের সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট আলোচনা করবেন, তিনি যেভাবে চাইবেন সেভাবেই হবে নির্বাচন কমিশন। আমরা মেনে নেব। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রেসিডেন্ট উদ্যোগ নিয়েছেন। বিএনপি তাদের প্রস্তাব দিয়েছে। তারা তাদের কথা বলেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে প্রেসিডেন্ট  আলোচনা করবেন। আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। তিনি (প্রেসিডেন্ট) যেভাবে চাইবেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। আমরা সেটা মেনে নেব।
গতকাল দশম জাতীয় সংসদের ত্রয়োদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজ দেখি বিএনপি ভোট নিয়ে, নির্বাচন কমিশন নিয়ে কথা বলে। নির্বাচন কমিশন কীভাবে গঠন হবে, নির্বাচন কীভাবে হবে তা নিয়ে খালেদা জিয়া পরামর্শ দেন। আমরা বিএনপি’র হাঁ, না ভোট দেখেছি। মিরপুর, মাগুরা, ঢাকা-১০ উপ-নির্বাচন দেখেছি। এমনকি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দেখেছি, ওই নির্বাচনের ফলও আমাদের দেখা আছে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করে ভয়ভীতি সৃষ্টি করে প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ভোট চুরি করেছিল। এজন্য জনগণ তাদের ক্ষমতা থেকে সরিয়েছে, তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, পদত্যাগ করতে হয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা নিশ্চয়ই প্রেসিডেন্ট কি করেন সেটা দেখবো। সেভাবে আমরা মেনে নেবো। নির্বাচনটা অবাধ হোক, সুষ্ঠ হোক, নিরপেক্ষ হোক সব সময় সেটাই চাই। তিনি বলেন, জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন আমরাই করেছি। আমাদের অনেক লোক জীবন দিয়েছে এর জন্য। আমরা চাই এই দেশে একটা সুষ্ঠ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে আন্দোলনের নামে জ্বালাও পোড়াও করে মানুষ হত্যা করেছে। এমন কোন কিছু নেই যা তাদের আক্রমণ থেকে বাদ গেছে। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। জাতির কাছে এজন্য খালেদা জিয়াকে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি বলেন, জ্বালাও- পোড়াও ও মানুষ পুড়িয়ে মারার যে মামলাগুলো হয়েছে সেই আসামিদের দ্রুত যেন শাস্তি হয় এটা আমরা চাইব। কারণ খুনি সন্ত্রাসীদের স্থান বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।

মানুষ পোড়ানো মামলার দ্রুত শাস্তি : শেখ হাসিনা আরও বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। এটা তাদের সিদ্ধান্ত ছিলো। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে-একটা দলের নেতা যদি ভুল সিদ্ধান্ত নেয় সে খেসারত তাদেরকেই দিতে হয়। তারা নির্বাচনে আসেনি এটা তাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো। তার জন্য দেশবাসী কেন খেসারত দিবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অথচ তারা কি করলো? নির্বাচন ঠেকানোর নামে ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ কিভাবে জ্বালাও- পোড়াও অগ্নিসন্ত্রাস। জীবন্ত মানুষকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে। হাজার হাজার গাড়ি-ট্রাক সব পুড়িয়ে দিয়েছে। লঞ্চ-স্টিমার-রেল কোন কিছু তাদের আক্রমণ থেকে বাদ যায়নি।
তিনি বলেন,‘জীবন্ত মানুষগুলিকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে আন্দোলন খেলা সে খেলেছে। এই যে এতগুলো মানুষ তারা পোড়ালো, এতগুলো মানুষের জীবন নিলো, যারা বেঁচে আছে কী মানবেতর জীবন-যাপন তারা করছে। এ ব্যাপারে জাতির কাছে খালেদা জিয়াকে ক্ষমা চাইতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেন সে এই ভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারলো? তিনি হুকুম দিয়েছেন। আর ঘরে বসে ছিলেন। তাদের লোকগুলি মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি চাইবো এই মামলাগুলোর দ্রুত যেন শাস্তি হয় যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।’
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে, যা কখনও আমাদের কাম্য না। আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ হয় সেজন্য আমরা সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯০ ভাগ প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছি। অব-কাঠামো উন্নয়ন ব্যাপক ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্রর হার ২২ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্রের হার ১২ ভাগে নামিয়ে এনেছি। আমরা দারিদ্র্য ১৪/১৫ ও হতদারিদ্রের হার ৭/৮ ভাগের মধ্যে নিয়ে আসবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় ছিলো ঐ বিদেশে হাত পেতে পেতে চলা-এটাই যেন ছিলো তাদের একটা নীতি। আমরা ভিক্ষা চেয়ে চলবো না, নিজের পায়ে দাঁড়াবো। আত্মনির্ভরশীল হবো। আমরা গণমুখী কর্মসূচি নিয়েছি, জনগণের কল্যাণমূখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে। নিজেকে সঁপে দিয়েছি জনগণের কল্যাণে। জনগণের স্বার্থে।’
তিনি বলেন, ‘এখানে আমি নিজের জীবনে যত ঘাত-প্রতিঘাত যাই আসুক না কেন সেই বিমানের স্ক্রু ঢিলা করুক, সেখানে ডেবরি ফেলে দিয়ে হত্যা করা চেষ্টা করুক। যাই আসুক। গ্রেনেড হামলা, গুলি অনেক কিছুই তো আমাকে সামনা-সামনি করতে হয়েছে। কিন্তু কখনও নিজের জীবনের মায়া করিনি। চিন্তা করিনি। মানুষের জন্য কতটুকু কাজ করতে পারি সেই চিন্তাই করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী ছোট্ট একটা কামরা দিতে পারলে আমরা দিবো। একটি টিনের ঘর হলেও আমরা তাদেরকে দিবো। একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, ‘হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতির কেন্দ্রই বানানো হয়েছিলো। যারাই দুর্নীতি করুক তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেবে, এখানে সরকার কোন হস্তক্ষেপ করবে না।’



 

Show all comments
  • Abdur Rahaman Gazi ৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ৩:৫২ পিএম says : 0
    .......... last porjonto president er kotha manbe to? Seta porishkar khule boluk.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন কমিশন

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৩১ জানুয়ারি, ২০২২
২৯ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ