Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সার্চ কমিটির প্রধান নিজেই আ.লীগের

ঠাকুরগাঁয়ে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল সার্চ কমিটি গঠনের নামে সরকার নাটক করছে : ড. খন্দকার মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৮ এএম

নির্বাচন কমিশন গঠনে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই সার্চ কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল ঠাকুরগাঁয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সার্চ কমিটির প্রধান নিজেই আওয়ামী লীগের লোক। অপরদিকে, ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সার্চ কমিটি গঠনের নামে সরকার নাটক করছে।
ঠাকুরগাঁও থেকে জেলা সংবাদদাতা জানান, সার্চ কমিটির প্রধান (বিচারপতি ওবায়দুল হাসান) নিজেই গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘তার বাবা আওয়ামী লীগ করতেন এবং ভাই ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব।’ গতকাল নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপির সার্চ কমিটিতে যাওয়ার সব সম্ভাবনা নাকচ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সার্চ কমিটির প্রধান নিজেই গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রথম শর্ত হলো, আওয়ামী লীগকে সরকার থেকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এবারও দলীয় সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা করা হলে জনসাধারণ তা মেনে নেবে না।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এটা নিয়তির পরিহাস, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য তারা ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। আজীবন ক্ষমতায় থাকার দুরভিসন্ধিতে আজ সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জায়গায় দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চালু করেছে।’
বিদায়ী নির্বাচন কমিশনকে ধিক্কার জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা চরমভাবে ব্যর্থ। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করে দিয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি জাতীয় ঐক্যের জন্য সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছে।’ বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো পুনর্গঠন প্রশ্নে বলেন, ‘করোনার কারণে এই প্রক্রিয়াগুলো স্থগিত করা হয়েছিল। মার্চের মধ্যেই সবগুলো জেলার সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ প্রশ্নে মহাসচিব বলেন, ‘এটা সরকারের ফলস ইস্যু। আসল ইস্যু হচ্ছে, সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অজস্র গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে যা এখন কেবল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃৃতই নয়, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন হস্তক্ষেপ শুরু করে র‌্যাব ও এর প্রধানকে নিষিদ্ধ করেছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

অপরদিকে, গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে ‘নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন মন্তব্য করে বলেছেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সার্চ কমিটি গঠনের নামে সরকার নাটক করছে।

তিনি বলেন, এ সরকার থাকলে সার্চ কমিটি তাদেরই হবে। এই সার্চ কমিটিকে শেখ হাসিনা বা সরকারের পক্ষ থেকে যাদের নাম দেবে, তারাই নির্বাচন কমিশনার হবে। এটাতে অংশগ্রহণ করা, এটাতে মাথা ঘামানো- আমরা মনে করি এটা অর্থহীন। তাই আমরা এ ব্যাপারে কোনো গুরুত্ব দিই না। সরকারের এই নাটক হচ্ছে- আবার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ডাকাতি-চুরির নির্বাচন করার জন্য। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে ‘নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে’ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এদেশের মানুষ দেখেছে, এনাফ ইজ এনাফ। অনেক হয়েছে আর নয়। আজকে শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, আন্তর্জাতিক বিশ্বও কিন্তু বলে দিয়েছে, আমাদেরকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে, সিগন্যাল দিয়ে দিয়েছে- আর এটা চলবে না। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এটা আমরা বিএনপি ও ২০ দলের নেতারা সকলে সিদ্ধান্ত নিয়ে আগেই ঘোষণা করেছি যে, শেখ হাসিনার অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। শেখ হাসিনার অধীনে বিগত দুটি নির্বাচন প্রমাণিত- এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। আমাদের দাবি, অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যত শিগগির সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠান করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর যদি না করে, যে কোনো স্বৈরাচারী সরকার যে পথে বিদায় হয়েছে- তাহলে সেই রাজপথকে আমরা বেছে নিতে বাধ্য হব। আপনারা এখানে অনেকে বলেছেন, ডাক দেন। ইনশাল্লাহ সেই ডাক দেওয়ার সময় সামনে আছে।

তিনি বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি। যার যার অবস্থান থেকে প্রয়োজনে যুগপৎভাবে একই ইস্যুতে আমরা আন্দোলন করবো যে কোনো সময়ে, সেই স্রোতে একত্রিত হয়ে একসাথে মিলিত হয়ে এই সরকারকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ইনশাল্লাহ বিদায় নিতে বাধ্য করব। সেই আন্দোলনের জন্য সকলে প্রস্তুত হোন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন কমিশন

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
৩১ জানুয়ারি, ২০২২
২৯ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ