Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নিখোঁজ না গুম কেউ জানে না!

রাজধানী থেকে আবারও হারিয়ে যাচ্ছে মানুষ

| প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আবারো নিখোঁজ হচ্ছেন মানুষ। আবারো ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা। এসব তরুণ নিখোঁজ, নাকি কেউ ধরে নিয়ে গেছে, নাকি গুম করা হচ্ছে এর কোনো কিছুই জানাতে পারেনি পুলিশ-র‌্যাব। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানের জন্য তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দফায় দফায় যোগাযোগ করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না। ফলে তাদের মধ্যে দিন দিন বাড়ছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। ছেলেহারা মা-বাবার কান্নায় প্রতিবেশীরাও কাঁদছেন। কেউ জানেন না তাদের প্রিয় সন্তান বেঁচে আছে কিনা।  গতকাল নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সাথে কথা বলে এমন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানা গেছে।  গত কয় দিনে রাজধানী থেকে ৮ ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন। সর্বশেষ যে দু’জন নিখোঁজ হয়েছেন তারা হলেন, ইমরান ফরহাদ (২০) ও সাঈদ আনোয়ার খান (১৮)। এই দু’জনের মধ্যে ইমরান ফরহাদ কেয়ার মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। সাঈদ বাড়িতে পড়াশোনা করে এ বছর ও লেভেল পাস করেছে। নিখোঁজ দু’জনের পরিবারের পক্ষ থেকে বনানী ও ক্যান্টনমেন্ট থানায় পৃথক দু’টি জিডি করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত নিখোঁজ হওয়ার ৮ ব্যক্তির রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের অবস্থান ও নিখোঁজ হওয়ার রহস্য জানতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পাশাপাশি, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, র‌্যাবসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে কাজ করছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেছেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের জন্য অনুসন্ধান চলছে। পুলিশ তাদের অবস্থান ও নিখোঁজ হওয়ার রহস্য জানতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সাঈদের বাবা আনোয়ার সাদাত খান চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, আমার ছেলে কোনো ধরনের রাজনীতি বা ধর্মীয় উগ্রবাদের সাথে জড়িত নয়। এ ধরনের কিছু থাকলে আমরা অবশ্যই জানতাম। তিনি বলেন, ছেলের জন্য আমরা হাহাকার করছি। আমরা তার সন্ধান চাই। এজন্য র‌্যাব-পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
ইমরান ফরহাদের  শোকে তার মা শুধুই কাঁদছেন। বিপর্যস্ত মা জানালেন, তাদের পরিবার রক্ষণশীল এবং তারা জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করেন। মায়ের ধারণা, মেডিক্যালে পড়তে বাধ্য করায় ইমরান ফরহাদ রাগ করে ঘর ছেড়েছে। আর তাই ফিরে আসতে ইমরানের প্রতি তার জোর মিনতি। তিনি বলেন, ‘আব্বু, তুমি আমার কাছে ফিরে এসো। তোমার মনে যদি কোনো কষ্ট থাকে আমার কাছে এসে বলো, আমি সব শুনব। তোমার আব্বু খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সে শুধু বলে, আমার মতো কেউ যেন তার সন্তানকে ভালো না বাসে। তোমার আব্বুর কথা চিন্তা করে হলেও তুমি ফিরে এসো।’ এভাবেই ছেলের প্রতি আকুতি জানাচ্ছিলেন ফরহাদের ক্রন্দনরত মা।
জানা যায়, গত সোমবার বিকালে কলাবাগানে যান সাঈদ আনোয়ার খান। তিনি নিজে ক্যারাতে জানতেন। ক্যারাতের একটি অনুষ্ঠানে তিনি কলাবাগানে ছিলেন। সেখান থেকে রাত ১০টার দিকে নিজের বাইসাইকেল নিয়ে বনানীর বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরিবারের সদস্যরা জানান, সে উগ্রপন্থায় যেতে পারে এটা কেউ বিশ্বাস করেন না। গত মঙ্গলবার সাঈদের বাবা আনোয়ার সাদাত খান বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। আনোয়ার সাদাত খান জিডিতে উল্লেখ করেছেন, তিনি পরিবার নিয়ে বনানীর বি ব্লকের ২১ নম্বর সড়কের একটি বাসায় থাকেন। নিখোঁজ হওয়ার আগে তার ছেলের পরণে কালো প্যান্ট ও কালো জ্যাকেট ছিল। তার উচ্চতা ছয় ফুট।
নিখোঁজ ইমরান ফরহাদের ফুফাতো ভাই আল-মামুন জানান, ইমরান ফরহাদ মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে পড়ত। পরিবারের সঙ্গে সে মাটিকাটা এলাকার ১৪৫/এ নম্বর বাসায় থাকত। গত ২৯ নভেম্বর সকালে মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর তারা ক্যান্টনমেন্ট থানায় জিডি করেন। আল মামুন আরো জানান, প্রথমে তারা আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের কাছে ইমরানের খোঁজ করেন। ২ ডিসেম্বর তারা ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তারা বুঝতে পারছেন না ইমরান আসলে কোথায় গেছে বা তার কি হয়েছে। ইমরান নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার পরিবারের সদস্যরা সবাই ভেঙে পড়েছে। তিনি জানান, ‘ইমরানের বাবা প্রবাসী, নাম আসাদুজ্জামান। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। ইমরানদের পরিবার  ধার্মিক। তবে তারা উগ্রপন্থা পছন্দ করেন না। ইমরান উগ্রপন্থী কোনো ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হতে পারে বলে তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না।
 গত ১ ডিসেম্বর বনানী এলাকা থেকে একসঙ্গে নিখোঁজ হন ৪ তরুণ। তারা হলেন, সাফায়েত হোসেন, জায়েন হোসাইন খান পাভেল, মোহাম্মদ সুজন ও মেহেদী হাওলাদার। এদের মধ্যে সাফায়েত ও পাভেল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। তাদের কোনো সন্ধান পায়নি পুলিশ। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, আমরা তাদের সন্ধান করছি, খোঁজ-খবর নিচ্ছি। এ ঘটনায় একটি জিডি হয়েছে। আমরা তা তদন্ত করে দেখছি। কেউ তাদের  তুলে নিয়ে গেছে, নাকি তারা স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়েছে, এসব বিষয় সামনে রেখেই তদন্ত চলছে। তবে এখনো কিছু জানা যায়নি।
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর বের হতে থাকে উচ্চবিত্ত পরিবারের তরুণদের নিখোঁজ হওয়ার কাহিনী। এদের অনেকেই পরিবার ছেড়ে জঙ্গিদের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে যোগ দিয়েছে জঙ্গি গ্রুপে।
আবার কিছু তরুণ কোথায় আছে, সে ব্যাপারে কিছুই বলতে পারেনি গোয়েন্দারা। পুলিশের পক্ষ থেকে এমনটাই দাবি করা হয়েছে যে সবাই জঙ্গি গ্রুপে যোগ দিয়েছে। অথচ তাদের ব্যাপারে আসল তথ্য কারো কাছেই নেই। ঐ ঘটনার পর বেশ কিছুদিন কারো নিখোঁজ হওয়ার খবর শোনা যায়নি। হঠাৎ করেই আবার ৮ তরুণের  নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, গত দুই মাসে রাজধানী থেকে ওই ৮ ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন। তারা ‘গুম’ হয়েছেন, নাকি নিজেরাই ‘আত্মগোপন’ করেছেন তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউই বলতে পারছেন না। এর মধ্যে ১ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন চার তরুণ। ২৯ নভেম্বর নিখোঁজ হন একজন ও সর্বশেষ ৫ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন আরো একজন। এর আগে গত ২৪ ও ১৪ অক্টোবর দুই জন নিখোঁজ হয়েছেন। এরা কোথায় গেছেন বা কেউ ধরে নিয়ে গেছে কি-না সে ব্যাপারে পুলিশ কিছুই বলতে পারছে না। পুলিশের ধারণা তারা জঙ্গি গ্রুপে যোগ দিতে পরিবার ছেড়েছে। তবে পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-পুলিশ কমিশনার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘নিখোঁজের বিষয়গুলো আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এগুলো খতিয়ে দেখছি। এরা কীভাবে নিখোঁজ হয়েছে এবং কোথায় আছে তা জানার চেষ্টা চলছে।
সাদা পোশাকে তুলে নেয়ার অভিযোগ
 গত ২৪ অক্টোবর রাতে উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর রোডের ৪০ নম্বর বাড়ি থেকে ডা. খালেদ হোসেনের  ছোট ভাই তারেক হোসেনকে (৩৫) সাদা পোশাক পরিহিত অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ডা. খালেদ হোসেন পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেন। জিডির অভিযোগে বলা হয়, সাদা পোশাক পরিহিত একদল মানুষ ঢাকা মেট্রো-ড-১৩-৪৮২২ ও ঢাকা মেট্রো-ড-১৪-১৪২২ নম্বরের দুটি গাড়িতে করে তার বাড়িতে আসে। তারা তার ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাসায় ফেরত দেয়ার কথা বলে।
 ডা. খালেদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৪২ দিন ধরে তিনি তার ভাইকে খুঁজছেন। তার ভাই বান্দরবানের লামায় একটি রাবার বাগানের মালিক। সেখানেই স্ত্রী সামিরা ইয়াসমিনকে সঙ্গে নিয়ে বসবাস। মাঝে মধ্যে ঢাকায় এলে তার বাড়িতে ওঠেন। তারেক হোসেন বেসরকারি এশিয়ান ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স উত্তীর্ণ হয়ে ব্যবসায় যোগ দেন। লামায় পাহাড়ের জমি লিজ নিয়ে তিনি একটি রাবার বাগান গড়ে তোলেন। কী কারণে তার ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছেÑ এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর তার কছে নেই বলে তিনি জানান।
 ডা. খালেদ হোসেন বলেন, ‘ভাইকে উদ্ধারের জন্য তিনি র‌্যাব মহাপরিচালক ও ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি আবেদনপত্র দিয়েছেন। প্রতি সপ্তাহে একবার করে খোঁজ নেয়া হয়। কিন্তু র‌্যাব ও পুলিশ থেকে জানানো হয় যে তার ভাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
 এই ঘটনার ১০ দিন আগে ১৪ অক্টোবর ভোর সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডি ২ নং রোডের সিটি কলেজের সামনে থেকে ডা. ইকবাল মাহমুদকে একটি মাইক্রোবাসে করে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তুলে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িটি অনুসরণ করছিল পুলিশের একটি গাড়ি। আশপাশের ভবন থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ থেকে তদন্তকারী ধানমন্ডি থানা পুলিশ তা পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছে। কেনইবা অপহরণকারীদের মাইক্রোবাস পুলিশের গাড়ি অনুসরণ করছিলÑ তা ধানমন্ডি থানা পুলিশ তদন্ত করে বের করতে পারেনি।
 ডা. ইকবাল মাহমুদ ২৮তম বিসিএসে চিকিৎসক ক্যাডারে পাস করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে এনেস্থেসিয়ার ওপর উচ্চতর কোর্স করার জন্য কুমিল্লায় বদলি হন। মূলত সেখান থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’মাসের ট্রেনিংয়ে পাঠানো হয়। ঐ ট্রেনিংয়ে যোগ দিতে তিনি তার পূর্বের কর্মস্থল লক্ষ্মীপুর থেকে বাসে করে ঢাকায় আসেন। গত ১৪ অক্টোবর ভোর ৩টার দিকে রয়েল কোচ পরিবহনে তিনি ধানমন্ডি এলাকার সিটি কলেজের সামনে এসে নামেন। এসময় বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্ত একটি মাইক্রোবাসে করে ডা. ইকবালকে উঠিয়ে নিয়ে যায় বলে জানান সেখানে থাকা রিকশাচালক ও পান দোকানদাররা। পরবর্তী সময়ে সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করে ধানমন্ডি থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।
 ডা. ইকবাল মাহমুদের ছোট ভাই হাসান বলেন, ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল দুই-তিন মিনিটের মধ্যে বাস থেকে নামবেন। আমি গিয়ে তাকে না পেয়ে আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, সাদা মাইক্রোবাসে কয়েকজন লোক জোর করে তাকে তুলে নিয়ে গেছে। তবে কী কারণে এ অপহরণের ঘটনা ঘটল এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি।
এদিকে গত সেপ্টেম্বর মাসে নিখোঁজ আল-ইমরানের (২৬) সন্ধান চায় তার পরিবার। সে গাইবান্ধার পলাশবাড়ি থানার আমলাগাছি গ্রামের মৃত ইয়াহিয়া ম-লের ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ইমরান  গত কয়েক বছর যাবত মানসিক সমস্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। ইমরান গত ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায়। কিন্তু সে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। নিখোঁজ হওয়ার সময় তার পরনে ছিল গেঞ্জি ও লুঙ্গি। ইমরানের উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি, গায়ের রং শ্যামলা।
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ‘ধরে নিয়ে যাওয়া’ তিনজনের সন্ধান চায় তাদের পরিবার। তাদের সন্ধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান নিখোঁজদের স্বজনরা। তাঁরা জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে ১৪-১৫ জনের একদল লোক সাদা পোশাকে তাদের বাড়িতে আসে। তারা তিনজনকে ধরে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। কী কারণে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা কোনো উত্তর দেয়নি। পরদিন ধরে নিয়ে যাওয়া তিনজনের স্বজনরা বিভিন্ন বাহিনীর দপ্তরে গিয়েও তাদের কোনো খবর পাননি।
নিখোঁজ মোস্তাকের বৃদ্ধা মা মাহমুদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলের জন্য এখনো বসে আছি। খাওয়া, দাওয়া ভালো লাগে না। ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানাই।
নিখোঁজ আনিসুর রহমানের বড় ভাই শামসুল ইসলাম বলেন, ‘ধরে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা সবাই সাদা পোশাকে ছিলেন। একটি সাদা ও কালো রঙের মাইক্রোবাসে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের পরিচয় জানতে চাইলেও তারা নিজেদের পরিচয় জানায়নি। এ সময় মোটরসাইকেলে করে তাদের অনুসরণ করা হলে তারা (সাদা পোশাকধারী) মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফেরত পাঠায়।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গুম

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ