পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ বর্তমানে ‘গণতন্ত্রহীন’ অবস্থার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে দাবি করে ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলকে বিএনপি বলেছে, গণতন্ত্র না থাকলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ‘হাউজ অব কমন্স’ এর বিরোধী দল লেবার পার্টির কয়েক আইন প্রণেতাসহ ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার বিকালে বিএনপির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাদের কাছে এ বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
গুলশানে খালেদার কার্যালয়ে ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে গণতান্ত্রিক অবস্থা ও উন্নয়নের বিষয়গুলো উঠে আসে বলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এখন বিরোধী দলের রয়েছেন লেবার পার্টি। তাদের একটি সংগঠন রয়েছে-লেবার ফ্রেন্ড অব বাংলাদেশ। সেই সংগঠনের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আমাদের কাছে দেখা করতে এসেছিলেন। তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়েছেন। তারা সরকারের সঙ্গেও কথা বলেছেন। প্রতিনিধিরা বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলতে আমাদের এখানে এসেছেন। আমরা তাদের সাথে কথা বলেছি।
যেহেতু তারা (প্রতিনিধি দল) নিজেরাই রাজনীতিক। তারা এটা বুঝতে পারেন, যেটা আমরা উপলব্ধি করেছি। বাংলাদেশের আজকের যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সেটা স্বাভাবিক নয়। তাদের এই উপলব্ধি থেকেই আমাদের মনে হয়েছে তারা বিভিন্ন প্রশ্নগুলো করেছেন। যদিও এটা আপনারা বুঝতে পারেন যে, রাজনীতিকদের যে ভাষা হয়, সেই ভাষাতেই তারা প্রশ্ন করেছেন।
ড. মঈন খান বলেন, গণতন্ত্রের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যুক্তরাজ্যের বিশেষ ভূমিকা ছিল। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ও বিবিসি তথা বিলাতে যে লেবার পার্টি তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে মূল উপজীব্য ছিল গণতন্ত্র। সেই কারণে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র সর্ম্পকে উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের আগ্রহ। এটা খুবই স্বাভাবিক।
ড. মঈন খান জানান, বৈঠকে উন্নয়নের কথাও উঠেছে। আমরা তাদের স্পষ্ট করে বলেছি, গণতন্ত্র বাদ রেখে শুধু বাংলাদেশের নয়, তৃতীয় বিশ্বের কোথাও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে আজকের পশ্চিমা বিশ্বও বিশেষ করে ব্রিটেন তারা যেমন উন্নয়নের শেখরে আছে, তার পেছনে যে সত্যটি কাজ করেছে, সেটা হচ্ছে নিজেদের দেশে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা দিয়েছে, গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে এবং মানুষের অধিকার তারা রক্ষা করেছে। বিষয়গুলো আমরা জোর দিয়ে বলেছি আজকে বাংলাদেশের বেলায় এসব প্রযোজ্য হচ্ছে না।
বিকাল তিনটায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে যায় সফররত ব্রিটিশ লেবার পার্টির ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের এই প্রতিনিধি দল। তারা বিএনপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন।
বৈঠকে ‘লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’-এর চেয়ারম্যান হওয়ার্ড দবের ছাড়াও লেবার পার্টির এমপি কেইর স্টার্মার, এমপি স্টিফেন টিমস, এমপি স্টিভ রিড এবং লেবার ফ্রেন্ডস বাংলাদেশ সংগঠনে মহাসচিব মতিন উজ-জামান, ভাইস চেয়ারম্যান নাসিম আলি ও রবার্ট ইভান্স, নির্বাহী সদস্য রবার্ট ল্যাথাম, আব্দুল হাই ও সৈয়দ আবুল বাশার, কোষাধ্যক্ষ ক্রিস ওয়েভার্স ছিলেন।
বৈঠকে ড. মঈন খান ছাড়াও ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।
‘লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ নামে লেবার পার্টির ১০ সদস্যের এই দলটি তাদের ‘মিলিত হও, শোনো ও (বাংলাদেশের কাছ থেকে) শেখো’ বিষয়ক একটি কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৩ জানুয়ারি ৭ দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। বৈঠকের পর ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের কিছু বলা হয়নি।
লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলটি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল বলে গণমাধ্যমকে আগেই জানানো হয়েছে, সেই সাক্ষাতটি না হয়ে কেন বিএনপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে হয়েছে, প্রশ্ন করা হলে মঈন খান বলেন, তারা (লেবার পার্টি) একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। আমরা একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে আমরা সবাই কথা বলেছি। এখানে বৈঠকে কারা উপস্থিত থাকবেন, তা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। আজকের ক্ষেত্রে বিএনপির ডেলিগেশন যে টিমটি ছিল, লেবার পার্টির সঙ্গে মতবিনিময় করেছি।
লেবার পার্টির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন, লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ সংগঠনের চেয়ারম্যান হওয়ার্ড দবের এবং বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।