Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেনা-বিজিবি ছাড়াই হবে ভোট

সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা ভোটে সহিংসতা হলে সামাজিক কলহ বাড়বে

প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আজিবুল হক পার্থ : আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। এরই মধ্যে খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের। সেই খসড়ায় রাখা হয়নি সেনাবাহিনী মোতায়েন বা বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি)। পুলিশ, আনসারের পাশাপাশি থাকবে র‌্যাব। এই অবস্থায় সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এবারে নির্বাচনে সহিংসতা হলে রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না ছড়িয়ে পড়বে পারিবারিক পর্যায়ে। বাড়বে সামাজিক কলহ। যদিও ৬০০ কোটি টাকার বাজেটের ৩৫০ কোটি টাকাই রাখা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য।
২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচনে প্রতি ভোটকেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১৫ জন করে সদস্য মোতায়েন ছিল। আর সর্বশেষ ২০১১ সালের ইউপি ভোটের আগে-পরে তিন দিন পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্টগার্ড সদস্যরা নিয়োজিত ছিল। নির্বাহী হাকিমের নেতৃত্বে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সও টহলে ছিল। সে সময় পুলিশ, আনসার, ব্যাটালিয়ন আনসার ও ভিডিপি মিলিয়ে ২০ জন করে নিরাপত্তা সদস্য প্রতি ভোটকেন্দ্রে নিয়োগ করা হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার চাহিদা অনুযায়ী এ সংখ্যা বাড়ানো হয় কোথাও কোথাও। এবারেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা ২০ থেকে ২২ জন করে ভাবা হচ্ছে।
এদিকে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন করায় তাতে বেশি ‘সংঘাতের’ আশঙ্কা রয়েছে বলে ইসিতে জানিয়েছে বিএনপি। সেই শঙ্কার মধ্যেই নির্বাচন উপযোগী চার হাজার ২৭৯টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে আগামী ২২ মার্চ প্রথম ধাপে ৭৩৯টিতে ভোট হচ্ছে। অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনের সময় নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিজিবির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করলেও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে ছাড়াই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ভোটের নিরাপত্তা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন
এদিকে ভোটের তারিখ দেওয়ার আগেই পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও সহিংসতার আশঙ্কা থাকায় এক দিনে সাড়ে তিনশ’র বেশি ইউপিতে ভোট হলে কেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হবে। এবার প্রতি ধাপে গড়ে সাত শতাধিক ইউপির ভোট হবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা পর্যাপ্ত পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার-ভিডিপি সদস্য নিয়োগ করব। বিজিবি দেওয়ার চিন্তা নেই আমাদের। ভোটকেন্দ্রে আনসার সদস্য বাড়িয়ে দেওয়া হবে। সুন্দরভাবেই ভোট হবে আশা করি। তবে বিজিবি মোতায়েনের পরিকল্পনা না থাকলেও প্রয়োজনে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, শঙ্কার কিছু নেই। নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালনেও কঠোর হব আমরা। বিধিলঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে দ- ও জরিমানাসহ সব ব্যবস্থা নিতে নির্বাহী ও বিচারিক হাকিম থাকবেন।
বিজিবি না নামানোর যুক্তি হিসেবে একাধিক কমিশনার জানিয়েছেন, তৃণমূল পর্যায়ের এ নির্বাচনে সহিংসতা অনেক কম হবে, কারণ এই পর্যায়ে যারা নির্বাচন করেন তারা সবাই পরিচিত এবং অনেক ক্ষেত্রে এসব নির্বাচনে একই পাড়া, মহল্লা বা পরিবারের লোকেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাই এসব নির্বাচনে তেমন ঝামেলা হবে না।
অন্যদিকে কমিশনের যুক্তিতেই এই নির্বচনকে সুষ্ঠু করার কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তাদের যেহেতু নির্বাচন হবে পাড়ায়-মহল্লায় তাই নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের সহিংসতা হয়, তার একটা স্থায়ী রূপ থাকবে। শুধু নির্বাচন বা রাজনীতির বাইরেও এর একটা প্রভাব পড়বে।
সহিংসতা প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু নির্বাচনের মাঠে থাকবে সবাই। তাই যে কোনোভাবে বিজয়ী হওয়ার জন্য চেষ্টা করবে। কারণ বিগত উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে সেটাই ধারণা করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেনা-বিজিবি ছাড়াই হবে ভোট

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ