Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাবুল আক্তারের মামলায় তার বিরুদ্ধেই চার্জশিট

আলোচিত মিতু হত্যা ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার চার্জশিটে সাক্ষী ৯৭

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের মামলায় তার বিরুদ্ধেই চার্জশিট দেয়া হয়েছে। চার্জশিটে অভিযুক্ত হয়েছেন বাবুলসহ সাতজন। সাত বছর পর নানা নাটকীয়তা শেষে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন গতকাল মঙ্গলবার আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন। ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার এ অভিযোগপত্রে ৯৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

আদালতে জমা দেয়ার আগে চার্জশিট গ্রহণ করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন শাখার এডিসি কামরুল হাসান। তিনি জানান, অভিযোগপত্রটি আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেয়া হয়েছে। আজ বুধবার সেটি আদালতে পেশ করা হবে। আগামী ১০ অক্টোবর মামলার দিন ধার্য্য রয়েছে। অভিযোগপত্র জমা দেয়ার সময় মামলার আইওর সাথে উপস্থিত ছিলেন পিবিআই মেট্রোর পুলিশ সুপার কাজী নাইমা হাসান। তিনি বলেন, মিতু হত্যা মামলার তদন্ত সম্পন্ন করে আমরা অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি। এতে বাবুল আক্তারকে ১নং আসামি করা হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মামলাটির তদন্তভার পেয়েছিলাম। আড়াই বছরের তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে সব রকমের তথ্য প্রমাণ আমরা পেয়েছি তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, অন্য নারীর সঙ্গে বাবুলের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় স্ত্রী মিতুকে খুন করা হয়। এজন্য বাবুল তার সোর্সের মাধ্যমে তিন লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন। পিবিআইয়ের তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। অভিযোগপত্রে বাবুলকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তিনি ছিলেন এই মামলার বাদী। অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি ছয় আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। অভিযোগপত্রভুক্ত সাত আসামির মধ্যে ফেনী কারাগারে আছেন বাবুল, ওয়াসিম, শাহ জাহান ও আনোয়ার। জামিনে আছেন এহতেশামুল। মুসা ও কালু শুরু থেকে পলাতক।

চারজনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। তারা হলেন- সাইদুল ইসলাম শিকদার ওরফে সাক্কু, নুরুন্নবী, মো. রাশেদ ও আবু নাছের। তাদের মধ্যে রাশেদ ও নুরুন্নবী মিতু হত্যাকাণ্ডের পরের সপ্তাহে রাঙ্গুনিয়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসি এলাকায় মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাবুল কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তার সঙ্গে বাবুলের সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় মিতুকে খুন করা হয়। স্ত্রীকে খুনে বাবুল তিন লাখ টাকা দেন।

মিতু হত্যার পরদিন ২০১৬ সালের ৬ জুন বাবুল বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই গত বছরের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একই দিন বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। মোশাররফের মামলায় পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে তা আদালত তা গ্রহণ করেন। অন্যদিকে বাবুলের করা মামলাটির চ’ড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করেননি। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করে অভিযোগপত্র দিল পিবিআই। আলোচিত এ মামলার কার্যক্রম চলছে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে। গত বৃহস্পতিবার ও সোমবার হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন ও কারাগার কক্ষে তল্লাশির দুটি অভিযোগ এ আদালতে করেছিলেন বাবুল আক্তার। এ দুটি আবেদনের বিষয়ে আগামী ১৯ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য্য আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ