পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাবিবুর রহমান : দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠেয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ছক তৈরি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিয়েই এই নির্বাচনের নিরাপত্তা ছক তৈরি করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মাঠে রাখছে না কমিশন। ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইসির পক্ষ থেকে নাসিকে প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন ও সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন নিরাপত্তা কর্মী রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১২ জন অস্ত্রধারী ও সাধারণ কেন্দ্রে ১০ জন অস্ত্রধারী থাকবেন।
সূত্র জানায়, নাসিক নির্বাচনে বিএনপি সেনা মোতায়েনের দাবি জানালেও আপাতত তা আমলে নিচ্ছে না কমিশন। এ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনে ইসির প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কেন প্রস্তাব করা হয়নি। এ নির্বাচন ঘিরে ইসির এ পরিকল্পনা রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে ইসি।
নাসিক নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করা হবে কি না জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) মো: জাবেদ আলী ইনকিলাবকে বলেন, সেনা মোতায়েন ছাড়া কী ভালো নির্বাচন করা যায় না? আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। দেখা যাক কী হয়।
ইসির উপ-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান ইনকিলাবকে জানান, নাসিক ও জেলা পরিষদ নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আগামী ১০ ডিসেম্বর বৈঠক করবে কমিশন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের সুবিধার্থে রোববার ইসির নিরাপত্তা পরিকল্পনার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনে এখনো কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও বৈঠকে সশস্ত্র বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ইসির প্রস্তাবিত নিরাপত্তা পরিকল্পনায় দেখা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের পাহারায় অস্ত্রসহ ৭ জন পুলিশ, অস্ত্রসহ ৩ জন ব্যাটালিয়ন আনসার, অস্ত্রসহ দুইজন অঙ্গীভূত আনসার, লাঠিসহ ১২ জন আনসার-ভিডিপি সব মিলিয়ে ২৪ জন নিরাপত্তা কর্মী থাকবে। সাধারণ কেন্দ্রে ওই সংখ্যা হবে ২২ জন। এতে অস্ত্রধারী নিরাপত্তা কর্মী দুইজন কম থাকবে। এখনো ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকা তৈরি হয়নি। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ২৭টি ওয়ার্ডে ১৭৪টি কেন্দ্র ও ১ হাজার ৩০৪টি বুথ রয়েছে। নির্বাচনী এলাকার নিরাপত্তার বিষয়ে বলা হয়েছে, এ নির্বাচনে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মোট ২৭টি পুলিশের মোবাইল ফোর্স এবং তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একটি করে মোট ৯টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে র্যাবের ২৭টি টিম, প্রতি দুই ওয়ার্ডের জন্য বিজিবির একটি করে মোট ১৪ প্লাটুন সদস্য এবং ৩ প্লাটুন কোস্টগার্ড সদস্য মোতায়েন করা হবে। ইসির প্রস্তাবনায় স্ট্যাটিক ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র্যাব বা পুলিশের টিম নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। ভোট গ্রহণের দুই দিন আগে অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর থেকে ভোট গ্রহণের পরদিন অর্থাৎ ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট চার দিন এসব সদস্য মাঠে থাকবেন।
এদিকে নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার নন এমন ব্যক্তিদের নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেছে ইসি। এতে বলা হয়েছে, আগামী ১৯ ডিসেম্বর মধ্যরাত ১২টার আগেই এসব ব্যক্তিকে নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করতে হবে। ভোট গ্রহণের দিন অন্য এলাকার প্রভাবশালীরা অবস্থান করলে বা নির্বাচনে অবৈধ প্রভাব বিস্তার করলে বা বিস্তারের চেষ্টা করলে পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। ভোট গ্রহণ উপলক্ষে আগামী ২১ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২২ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় লঞ্চ, স্পিডবোট, ট্যাক্সি ক্যাব, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২৩ ডিসেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জাতীয় হাইওয়ের ক্ষেত্রে এ বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না।
প্রস্তাবনায় ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিক প্রবেশে বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাংবাদিকরা ছোট ছোট দল করে পর্যায়ক্রমে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাবেন। একটি দল পরিদর্শন করে বের হয়ে আসার পর আরেকটি দলকে প্রবেশের অনুমতি দেয়া যেতে পারে।
ভোট গ্রহণের কয়েক দিন আগ থেকে অস্ত্রের লাইসেন্সধারীরা অস্ত্রসহ চলাচল করতে না পারে সে জন্য জেলা প্রশাসক নির্দেশনা জারি করবেন। এ নির্বাচনে আচরণবিধি দেখভালে ২৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোট গ্রহণের দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত প্রতিটি বাহিনীর মোবাইল বা স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে আরো ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোট গ্রহণের ২-৩ দিন আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সেল স্থাপন করা হবে। ওই সেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন করে প্রতিনিধি থাকবেন। এছাড়া ভোট গ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে অর্থাৎ আগামী ২০ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে ২৪ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় জনসভা আহ্বান, মিছিল বা শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান ইসি কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।