পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সার সঙ্কটে দিশেহারা কৃষক। সরকারের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে দেশে কোন সার সঙ্কট নেই। অথচ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক ডিলারদের কাছে ছোটাছুটি করেও সার পাচ্ছেন না। সারের জন্য কৃষকেরা রীতিমতো যুদ্ধ করছেন। যাঁরা সার পাচ্ছেন, তারাও চাহিদামতো না পাওয়ার অভিযোগ করছেন। অনেকেই আবার খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। অনেক স্থানে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরী করে বেশি দামে সার বিক্রিরও অভিযোগ ওঠেছে। কোথাও কোথাও সরবরাহের স্বল্পতার কথা বলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত ১১০০ টাকার ইউরিয়া সারের বস্তা ১৩ থেকে ১৪ শত টাকায় বিক্রি করছে। প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না।
জ্বালানি তেল এবং সারের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষক এমনিতেই দিশেহারা। তার উপর এমন সার সঙ্কট কৃষকের জন্য মরার উপর খাড়ার ঘায়ের অবস্থা। এখন আমন ধান ছাড়াও রবিশস্য ও সবজি চাষের প্রস্তুতি চলছে। এ সময় কৃষকের সার ও সেচসুবিধা না পেলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। আর তাতে খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
জামালপুর, ঠাকুরগাঁও, শেরপুর, কুষ্টিয়া, নেত্রকোণা, পঞ্চগড়সহ অনেক জেলায় কৃষকরা সার না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। জামালপুরে কৃষকেরা সারের দাবিতে ডিলারের দোকানের সামনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন। জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় কালোবাজারে বিক্রির জন্য মজুদ করে রাখা ২৭৫ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে। সারের দাবিতে মানববন্ধন করায় জামালপুরে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
দেশে সারের সংকট বা কারসাজি করে সঙ্কট তৈরী করার বিষয়টি কৃষি মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে আঁচ করতে পেরেছে। আর তাই কারসাজির মাধ্যমে সারের ক্রত্রিম সঙ্কট রোধে কৃষি মন্ত্রণালয় গত ৭ সেপ্টেম্বর সারা দেশে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে কৃষককে লাইনে দাঁড় করিয়ে সার বিক্রি না করা, রশিদ ছাড়া সার বিক্রি না করাসহ কয়েকটি নির্দেশনা রয়েছে। তবে এসব নির্দেশনা কতটুকু কাজ হবে তা নিয়ে বিশ্লেষকদের মনে সন্দেহ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার আমন মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় সেচের ব্যয়ও বেড়েছে। এরপর রয়েছে-বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকট। তারপর সারের দাম বাড়ানো কৃষকের দিশেহারা অবস্থা। এতে যেমন উৎপাদন খরচ বাড়বে তেমনি উৎপাদন কম হওয়ারও শঙ্কা রয়েছে। ফলে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের সাবেক সদস্য পরিচালক কৃষি অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. জাহাঙ্গীর আলম খান এ বিষয়ে ইনকিলাবকে বলেন, সম্প্রতি তেলের দাম দু’দফা বেড়েছে। এর মধ্যে বেড়েছে সারের দাম। এটা দেশের কৃষিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় সমস্যা হবে। ফুড সিকিউরিটির জন্যও এটা একটা বড় সমস্যা। চলতি আমন মৌসুমে কৃষক বিরূপ আবহাওয়া মুখোমুখি। এর মধ্যে আবার সারের সঙ্কট দেখা দিলে উৎপাদন অনেক কমে যেতে পারে। আর তাতে খাদ্য ঘটতির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, সার নিয়ে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। দেশে পর্যাপ্ত সার মজুদ রয়েছে। গুজবে কান দিয়ে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। বর্তমানে ইউরিয়া সারের মজুদ ছয় লাখ ৪১ হাজার টন, টিএসপি চার লাখ ১৫ হাজার টন, ডিএপি ৯ লাখ চার হাজার টন, এমওপি দুই লাখ ৪৬ হাজার টন। বর্তমান মজুদের বিপরীতে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সারের চাহিদা হলো ইউরিয়া তিন লাখ ৫০ হাজার টন, টিএসপি ৯৬ হাজার টন, ডিএপি দুই লাখ ১৯ হাজার টন, এমওপি এক লাখ ২১ হাজার টন।
সরকারের এমন হিসাব ও আশ্বাসের পরও দেশের বিভিন্ন জেলায় কৃষক সার পাচ্ছেন না। অনেক ছুটাছুটির পর যাও কিছু পাচ্ছেন তাও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। সারের সঙ্কট নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট নিচে তুলে ধরা হলো।
চট্টগ্রাম থেকে রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, বৈরী আবহাওয়া সেই সাথে সার সঙ্কটে দুশ্চিন্তায় চট্টগ্রামের কৃষক। বৃষ্টিপাতের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে আমনের আবাদ। মিলছে না পর্যাপ্ত সার। সার পাওয়া গেলেও দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ নিয়ে প্রান্তিক চাষীদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। চট্টগ্রামেই দেশের একমাত্র ট্রিপল সুপার ফসফেট-টিএসপি সার কারখানা। রয়েছে চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার-সিইউএফএল ও ডিএপি সার কারখানা। এরপরও এখানে সারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গ্যাস সঙ্কটের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সিইউএফএল চালু হয়েছে। শুরু হচ্ছে সার উৎপাদন। চট্টগ্রামসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় আমনের আবাদ হচ্ছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বীজতলা তৈরি থেকে আবাদ বিঘ্নিত হয়েছে। তবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আশার আলো দেখছেন প্রান্তিক চাষীরা। আমনের পাশাপাশি চলছে শৎকালীন বিভিন্ন শাক-সবজির আবাদ। পানির অভাবে যেসব জমিতে আমন আবাদ করা যায়নি সেখানে এখন শাক-সবজির চাষ হচ্ছে। মীরসরাই শীতলথানা দীঘির প্রান্তিক চাষী নুরুল কবির বলেন, ডিলারদের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার পাওয়া যাচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত সারের কিছুটা সঙ্কট রয়েছে।
বগুড়া থেকে মহসিন রাজু জানান, বগুড়ার কৃষি বিভাগের তরফে বারবার সার সংকট নেই বলা হলেও আমন চাষিরা সার পাচ্ছেনা। আর পেলেও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। গত সপ্তাহ জুড়েই বগুড়ায় চলছে সার নিয়ে ভানুমতির খেলা । বগুড়ার শেরপুর, কাহালু ,নন্দীগ্রাম, গাবতলী, বগুড়া সদর ও ধুনটে সারের সংকট বেশি। ১১শ টাকার ইউরিয়া সার বিক্রি হচ্ছে ১৩ থেকে ১৪শ এবং ৮শ টাকার ডিএপি বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকায় । চাষিদের অবস্থা দিশেহারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বগুড়ার ৫জন সার ডিলার যথাক্রমে আলহাজ¦ আবুল কালাম আজাদ, ইমরান হোসেন রিবন, আলমগীর হোসেন, কনক পারভেজ এবং মতিয়ার রহমান পাইকারের নেতৃত্বাধীন পৃথক ৫টি সিন্ডিকেট বগুড়ার ১৬৩জন সার ডিলারের ডিও কিনে নিয়ে সার ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে। সাধারণ সার ব্যবসায়ীরা জানান, প্রশাসন, বিসিআইসি ও কৃষি কর্মকর্তাদের খুশি করেই বগুড়ায় সিন্ডিকেটবাজি চলে। পত্রিকায় খবর বের হলেই মাঝে মাঝে অভিযানের নাটক করে প্রশাসন। বগুড়ায় সার ব্যবসার নয়ছয় কারবার নিয়ে বেশ কয়েকটি রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে ইনকিলাব পত্রিকায়। অবস্থার প্রেক্ষিতে বগুড়া জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কৃষি ও বিসিআইসি কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকও করেছেন। ওই বৈঠকে কৃষিবিভাগ থেকে জানানো হয়েছে বগুড়ায় চাহিদার তুলনায় কিছু বেশিই সারের মজুদ রয়েছে। ভুক্তভোগি চাষিদের অভিমত সার যদি থাকবেই তাহলে তারা কেন সার পাচ্ছেননা কেন ? কেনেইবা তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ইউরিয়া, ডিএেপি ও টিএসপি সার।
খুলনা থেকে ডিএম রেজা জানান, সেচের জ্বালানি ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি করায় খুলনাঞ্চলের কৃষকেরা চরম দুর্দশায় রয়েছে। তার উপর বেড়েছে সারের দাম। সারের দাম বৃদ্ধির সুযোগে কয়েকটি সিন্ডিকেট কৃত্রিম সারের সংকট সৃষ্টি করেছে। অনেক স্থানেই সরবরাহের স্বল্পতার কথা বলে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দামে সার বিক্রি করছে। প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানও এক্ষেত্রে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে কৃষকরা জমিতে রোপা আমন আবাদ করছেন। অন্যদিকে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করা হচ্ছে। রোপা আমন আবাদে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সার কৃষকেরা পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করেন। বাজারে এ সকল সার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রকারভেদে বস্তা প্রতি কৃষককে দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। কৃষকদের অভিযোগ, সার বিক্রেতারা কৃষকদের প্রয়োজন মত সার সরবরাহ করছেন না। অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ডিলাররা কম সার দেয়ায় খুচরা পর্যায়ে সংকট দেখা দিয়েছে। খুলনার অনুমোদিত সার ডিলার রূপসার বিউটি ট্রেডার্স, তেরখাদার মেসার্স জাহিদ এন্টারপ্রাইজ ও মধুপুরের মেসার্স মুক্তি এন্টারপ্রাইজের সাথে কথা হলে তারা বলেন, সারের কোনো সংকট নেই। সরকার নির্ধারিত দামে আমরা সার বিক্রি করছি। খুচরা বিক্রেতা কেউ দাম বেশি রাখলে আমাদের কিছু করার নেই। অন্যদিকে, খুচরা বিক্রেতা মহানগরীর রবিউল কৃষি ঘর, মেসার্স আজিজুল এন্টারপ্রাইজে কথা বলা হলে তারা বলেন, ডিলাররা কারসাজি করছেন। খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে তারা বেশি দাম নিচ্ছেন তাই বাধ্য হয়ে আমরা কৃষক পর্যায়ে সামান্য বেশি দাম রাখছি।
যশোর থেকে শাহেদ রহমান জানান, আমানের পাশাপাশি রবিশস্য ও সবজি চাষের প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু এসব আবাদে সমস্যা দেখা দিয়েছে সার সঙ্কট। বিশেষ করে ডিলারদের কাছে মিলছে না সার। কৃষকদের বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে সব ধরনের সার। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে কৃষকের। আর পকেট ভরছে কালোবাজারিদের। ডিজেল, সার ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের চড়া দামের কারণে ফসলের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় জেলার কৃষক বিপাকে পড়েছেন।
নেত্রকোনা থেকে এ কে এম আব্দুল্লাহ্ জানান, জেলায় সার সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে কৃষক আমন চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা করছেন। জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, বেশি টাকা দিয়েও চাহিদা মতো সার মিলছে না। তবে ডিলাররা সার সংকটের কথা স্বীকার করলেও কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় কোনো সার সংকট নেই। নেত্রকোনা সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের পাঁচাশি পাড়া গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম বলেন, সাড়ে ৭ শ টাকার এমওপি সার সাড়ে ১৪ শত টাকায় কিনতে হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করলে ডিলাররা তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে। লাইট গ্রামের কৃষক সম্রাট মিয়া বলেন, বাজারে গিয়ে আমরা কোনো সারই পাচ্ছি না। ইউরিয়া সার যদিও দু-এক বস্তা পাচ্ছি তাও সাড়ে ১২ শত থেকে ১৩ শত টাকায় কিনতে হচ্ছে। সদর উপজেলার জামতলা বাজারের সাব-ডিলার ইউসুফ আলী বলেন, বিসিআইসি ও বিএডিসি গো-ডাউন থেকে চাহিদার তুলনায় সার কম মিলছে। সরকারি বরাদ্দ কম থাকায় কৃষকরা পর্যাপ্ত সার পাচ্ছে না।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী থেকে এম এ মান্নান জানান, জেলার সদর উপজেলায় চাহিদামতো সার না পেয়ে সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা। গত ৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার শরিফপুর বাজার এলাকায় জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন কৃষকেরা। পরের দিন উপজেলার নান্দিনা বাজার এলাকায় আবারও একই মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। ৫ সেপ্টেম্বর নরুন্দি বাজারে সার না পেয়ে কৃষকেরা হুড়োহুড়ি শুরু করেন। ৬ তারিখে মুকুল বাজার এলাকায়ও সার না পেয়ে কৃষকেরা হুড়োহুড়ি করেন। স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার শরিফপুর বাজারে ‘মেসার্স নাশাদ এন্টারপ্রাইজ’ থেকে সার বিক্রি করা হয়। কয়েক দিন ধরে কৃষকেরা সার পাচ্ছিলেন না। ওই বিক্রয়কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছিল, সকালে সার বিক্রি করা হবে। এ জন্য শরিফপুর ইউনিয়নের কৃষকেরা সকালে সেখানে যান। কিন্তু কয়েকজন কৃষককে ৫ থেকে ১০ কেজি করে সার দেওয়ার পর বিক্রয়কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানের সামনে জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন কৃষকেরা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটুস লরেন্স চিরানসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কৃষি কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ইউএনওর উপস্থিতিতে ওই বিক্রয়কেন্দ্রের স্বত্বাধিকারী মো. মোশারফ হোসেন কৃষকদের মধ্যে সার বিক্রি শুরু করেন। কৃষকদের অভিযোগ, তারা সকালে সার নিতে এসে জানতে পারেন, চাহিদামতো সার দেওয়া হবে না। ৫ থেকে ১০ কেজি করে ইউরিয়া সার দেওয়া হবে। সেটাও বিক্রি শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতেক্ষুব্ধ হয়ে তারা সড়ক অবরোধ করেন। সরিষাবাড়ীতে সারের প্রচন্ড চাহিদা থাকায় কৃষকেরা সার না পেয়ে প্রতিদিন হা হুতাশ করছে। তারা ছুটে চলছে ডিলার থেকে ডিলার দোকান থেকে দোকানে। কৃষকেরা সারের জন্য পাগল হয়ে সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে চড়া দামে ১৫ থেকে ১৬ শত টাকা দিয়ে হলেও ইউরিয়া সারের বস্তা ক্রয় করদে বাদ্য হচ্ছে। জামালপুর জেলার কেন্দুয়া কালীবাড়ি বাজারে সার নিতে আসা বৃদ্ধ কৃষক আবদুল মজিদ বলেন, কৃষকগরে হইছে জ্বালা। বিয়ানবেলায় না খাইয়া বাত (বাসা) থাইকে আছি। কত পারাপারি হইল, বুড়া মানুষ পারাপারিও করতে পাইনি, সারও পাইনি। কৃষকগরে মরণ ছাড়া বুদ্ধি দেহিনাতো। কত চাইলাম, সার দিল না, এহন বলে সব সার শেষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।