Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চাল আমদানি করতে নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

সরকারি অফিস সময় নিয়ে আবারো নির্দেশনা মন্ত্রিপরিষদের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

আগামী নভেম্বরে বিশ্বব্যাপী খাদ্য-সংকট দেখা দিতে পারে। এ নিয়ে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুতের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। চাল আমদানির জন্য যাদের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ফেল করতে পারে। এ জন্য আগেই কিছু বিকল্প অর্ডার দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠক পাঁচ দেশ থেকে খাদ্য আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য আমদানির নির্দেশ দিয়েছেন। এখন ১৯ লাখ ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হওয়ায় বাজারে চালের ৪/৫ টাকা কমেছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রাশিয়া, ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম থেকে চুক্তি অনুযায়ী খাদ্য আমদানি হবে। এর বাইরে আরও দুই একটি জায়গা থেকে খাদ্য কেনার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আমরা চেক করে নিয়েছি রাশিয়া থেকে খাদ্য আমদানি করলে কোনো ধরনের অসুবিধা হবে না। মিয়ানমার থেকে আসছে আতপ চাল। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং ভারত থেকেও চাল কেনার চুক্তি হয়ে গেছে। দুই-একদিনের মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় খাদ্যের বিষয়ে ব্রিফিং করবে। সম্প্রতি চালের দাম ৪-৫ টাকা কমেছে। ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কারণে। এর ফলে একটা বড় সংকট মার্কেট থেকে সরে গেছে। অ্যাপারেন্টলি দেখা যাচ্ছে এটি একটি ভালো ফল দিচ্ছে। যেহেতু খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আগামী দুই মাস বা পরে আর দুই, তিন-চার মাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে আমাদের প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্যের প্রয়োজন হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। ইতোমধ্যে এটা রিপ্লেস করার মতো চুক্তিও করে ফেলেছে এবং ওয়ার্ক অর্ডার দিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নভেম্বর থেকে আমরা যে চিন্তা করছি একটা খাদ্য সংকট হতে পারে বিশ্বব্যাপী, আল্লাহর রহমতে আমরা একটা কমফোর্টেবল সিনারিও পেয়েছি। আমাদের ওয়ার্ক অর্ডার এবং খাদ্য পাওয়ার নিশ্চয়তা এসেছে। রাশিয়া, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম থেকে চাল এবং গম নিশ্চিত হয়েছে। আমদানির পাশাপাশি আমনও চলে আসবে। আমন কম হলেও বড় একটা বড় পোরশন (অংশ) আসবে। সব মিলিয়ে খাদ্য সিনারিওটা আল্লাহর রহমতে কম্ফোর্টেবল হবে। তারপরও আরও দুই-একটা জায়গা থেকে খাদ্য ব্যবস্থা করে রাখতে বলা হয়েছে। কোনো রকমের চান্স নেওয়া যাবে না। কোনো কারণে ধরেন দুই-একটা ওয়ার্ক অর্ডার ফেল করে, তাহলে অল্টারনেটিভভাবে অন্য জায়গা থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে আমাদের মজুদ ঠিক রাখা যায়।

তিনি বলেন, যে পরিমাণ খাদ্য আমাদের গোডাউন থেকে যাবে, সে পরিমাণ খাদ্য এবং সেফটির জন্য আরও অ্যাক্সেস কেনার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। এখন যে চুক্তি বা এমইউ হয়ে গেছে, তার জন্য আর সটেজ হবে না (খাদ্য সংকট হবে না) আল্লাহর রহমতে। প্রধানমন্ত্রী খাদ্যের বিষয়ে কী বলেছেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দিষ্টভাবে বলেছেন আমরা যে খাদ্য রিপ্লেসমেন্ট করছি শুধু সেটার ওপর নির্ভর করা যাবে না। আমরা কমফোর্টেবল সিজন থাকলে আরো দুই-একটা জায়গা থেকে খাদ্য কেনার ইনিশিয়েটিভ নেওয়া হোক। কোনো কারণে আল্লাহ না করুক চারজন বা পাঁচজনের মধ্যে কেউ যদি বলল আমি দিতে পারবো না, তখন যাতে আমরা ঝামেলায় না পড়ি। সুতরাং প্রয়োজন হলো এক্সেস কিছু খাদ্য কিনা, এটা আমাদের জন্য কমফোর্ট সিনারিও হবে। তিনি বলেন, আপনারা সবাই জানেন বৃষ্টি বা পানিটার সটেজে একটা অ্যাফেক্ট হবে আমন ধানের। তবে আমি নিজে গত বৃহস্পতিবার ১২-১৩ জন ডিসির সঙ্গে কথা বলেছি, সিলেট থেকে শুরু করে উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত। তারা বলেছেন, সম্প্রতি যে সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাত ১২টা থেকে ভোর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ থাকবে, সেটা থাকছে। সেটার কারণে আমনক্ষেতে সেচ ভালো হচ্ছে। কোনো কোনো জায়গায় একটু সমস্যা হচ্ছে, হয়তো খাল-বিলে পানি একটু কম। তবে সুবিধা হলে যেখানে খাল-বিলে পানি কম, সেখানে টি-আমনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সরকারি অফিস আদালতের নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে আসা ও ত্যাগের বিষয়ে আবারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অফিসের নতুন সময়সূচিতে অনেকেই আসছেন না, আবার অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ের আগে চলে যাচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আপনি স্পেসিফিক জানেন? আমরা অলরেডি আবার নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি, অফিস টাইমে সবাইকে অফিসে আসতে হবে৷ কালকেও আমরা এগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং অফিস টাইমের আগে কেউ যেতে পারবে না।

তিনি বলেন, ব্যক্তিগত বা ইন্ডিভিউজালি কোনো দরকার হলে, সে তার বসের কাছে জিজ্ঞেস করে পার্মিশান নিয়ে যাবে। কিন্তু ৮টার মধ্যে অফিসে আসতে হবে, আর পরিষ্কার কথা বিকেল ৩টার আগে কেউ অফিস থেকে যেতে পারবে না। এটা আমরা এনসিউর করতেছি। এ নিয়ম কতদিন পর্যন্ত চলবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেখি, কতদিন চলে। এর আগে, বিদ্যুৎ সা,শ্রয়ে গত ২২ আগস্ট মন্ত্রিসভা বৈঠকে অফিসের নতুন সময়সূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা কার্যকর হয় ২৪ আগস্ট থেকে। এদিন থেকে সকাল ৮টার অফিসে শুরু হয় এবং অফিস শেষ হয় বিকেল ৩টায়। ফলে নিদিষ্ট সময়ে সবাইকে অফিসে আসতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের আগে অফিস ত্যাগ করা যাবে না এ ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ তিনি বলেন,আইনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতায় কাতারের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এগ্রিমেন্ট ফর কো-অপারেশন ইন দ্য লিগ্যাল ফিল্ড’ শীর্ষক চুক্তির খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘জাতীয় মানবকল্যাণ পদক’ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট আইন ,২০২২ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

সংবাদপত্রে পদ্মা সেতু গ্রন্থ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিলেন তথ্যমন্ত্রী : পদ্মা সেতু নিয়ে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ নিয়ে বই প্রকাশ করেছে তথ্য অধিদফতর (পিআইডি)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে সেই বই তুলে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের শুরুতে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বইটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। এসময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংকলন করে সাত খণ্ডে বইটি প্রকাশ করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • আলিফ ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:৫৯ এএম says : 0
    চালের মুল্য নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। নয়তো মানুষ না খেয়ে মরতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • আলিফ ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:৫৯ এএম says : 0
    চাল দ্রুত আমদানি করা দরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • আকিব ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১:০১ এএম says : 0
    দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুদ থাকা দরকার। এছাড়া চালের দাম সাধারণ জনগণের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • আকিব ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১:০২ এএম says : 0
    সরকার যদি চালের দাম নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে তাহলে জনগণ সরকারকে আর ভোট দিবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রীর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ