Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কিংবদন্তি গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

অসংখ্য কালজয়ী গানের রচয়িতা, কিংবদন্তী গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর নেই। গতকাল রোববার সকাল ৭টায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার লাশ রাতে হাসপাতালের হিমঘরেই রাখা হয়। আজ বেলা ১১টায় শ্রদ্ধা নিবিদেনের জন্য তার লাশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে। দুপুর সাড়ে ১২টায় নেওয়া হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি)। সেখানে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বনানীতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে মা খোদেজা বেগমের কবরে দাফন করা হবে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার মৃত্যুকালে এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে গেছেন। তাঁর মেয়ে সংগীতশিল্পী দিঠি আনোয়ার দেশের বাইরে আছেন।
জানা গেছে, রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যাওয়ার সময় পড়ে যান গাজী মাজহারুল আনোয়ার। এরপর হাসপাতালে নিলে তিনি সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
অসংখ্য গানের গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার গান লেখা শুরু করেন ১৯৬২ সালে। তাঁর লেখা প্রথম গান ‘বুঝেছি মনের বনে রং লেগেছে’। তাঁর গানে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, স্নেহ ও অনুভূতির কথা। তাঁর রচিত গানের সংখ্যা ২০ হাজারের বেশি। অনেকগুলো জনপ্রিয় ঢাকাই সিনেমার পরিচালনা ও প্রযোজনা করেছেন তিনি।

বিবিসি জরিপে সর্বকালের সেরা ২০ বাংলা গানের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা তিনটি গান। গানগুলো হচ্ছে ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’ ও ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’। গীতিকার হিসেবে পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ ছাড়া ২০০২ সালে একুশে পদক, ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক, এস এম সুলতান স্মৃতিপদক, একাধিকবার বাচসাস পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।

তিনি রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। সর্বশেষ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মরহুম গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে দেশের সাংস্কৃতিক জগতের এক বিরল প্রতিভা হিসেবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, অগণিত প্রাণস্পর্শী সঙ্গীত রচনার জন্য সংগীতপ্রিয় মানুষের মনে থেকে যাবে তাঁর অমলিন স্মৃতি। তাঁর লেখা গান সংগীতপ্রেমী মানুষকে আন্দোলিত করেছে। একজন কীর্তিমান গীতিকার হিসেবে তিনি সঙ্গীত জগৎকে সমৃদ্ধ করেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাঁর বেশ কিছু গান শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। তাঁর রচিত প্রত্যেকটি গান অমর ও কালজ¦য়ী। সংগীত জগৎ এবং চলচ্চিত্রের বিশাল ভূবনে তিনি ছিলেন একজন কিংবদন্তী। ‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে তাঁর রচিত বিপ্লবী গানগুলো এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে সাহস ও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। তাঁর মৃত্যুতে দেশ সাংস্কৃতিক জগতের একজন মহিরুহকে হারালো যাঁর অভাব সহজে পূরণ হবার নয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী দর্শনে গভীরভাবে বিশ^াসী মরহুম গাজী মাজহারুল আনোয়ার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে অবদানের জন্য দলের নেতাকর্মীদের নিকট চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকার্ত পরিবার-পরিজন, শুভাকাঙ্খী ও ভক্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ