পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাহবুব আলম, জাবি সংবাদদাতা : ডাকছে পাখি কিচিরমিচির, আবার ডুব দিয়ে হারিয়ে যায় শাপলার মাঝে, একদল ওড়ছে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে, এ লেক থেকে ওই লেকে। বাহারি রংয়ের এসব অতিথি পাখির খুনসুঁটি আর ছুটাছুটি যে কারো মনেক উদ্বেলিত করে তুলে। তাইতো বলা হয় শীতের মৌসুমে প্রকৃতির অপরুপ অলঙ্কার যেন এ অতিথি পাখি। শাপলার পানিতে অতিথি পাখির এসব উকিঝুঁকি দেখেতে, ঢাকার অদূরে জাহঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে প্রতিদিন ভিড় করছে হাজারও দর্শনার্থী।
শীতের বাহারি পিঠা, খেজুরের রস সব মিলিয়ে ষড়ঋতুর এই দেশে শীত আসে উৎসবের আমেজ নিয়ে। আর সে উৎসবটা জাবি ক্যাম্পাসে একটু বেশিই। কারণ প্রতি বছরের ন্যায় এবারের শীতেও এ ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে এসেছে অসংখ্য অতিথি পাখি। তাইতো এখানকার শিক্ষার্থীদের সকালটা এখন অন্যরকম। কারণ অতিথি পাখির কল-কাকলিতে ঘুম ভাঙছে তাদের।
বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের জরিপ বলছে, ১৯৮৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম অতিথি পাখি আসে। এ সময় ৯০ প্রজাতির অতিথি পাখি দেখা যায়। বর্তমানে এ ক্যাম্পাসে ১৯৫ প্রজাতির পাখি আছে। যার মধ্যে ১২৬টি প্রজাতি দেশীয় এবং ৬৯টি অতিথি পাখি। এবার জাবির এ আঙ্গিনায় দুই ধরনের পাখির সমাগম ঘটেছে। এক ধরনের পাখি ডাঙায় বা শুকনো স্থানে থাকে। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়। এ ক্যাম্পাসে যেসব পাখি আসে, সেসবের মধ্যে ৯৮ শতাংশই ছোট সরালি। আর বাকি ২ শতাংশ অন্য প্রজাতির পাখি। এদের মধ্যে রয়েছেÑ বড় সরালি, ল্যাঞ্জা হাঁস, খুন্তে হাঁস, ভূতি হাঁস ও ঝুঁটি হাঁস ইত্যাদি।
ক্যাম্পাসে ছোট-বড় ১৩-১৪টি লেক থাকলেও এখন পর্যন্ত চারটি লেকে অতিথি পাখি বসেছে। প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক, বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশে ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টারের লেক। এ লেকগুলোর মাঝে প্রশাসনিক ভবন ও জাহানারা ইমামের সামনের লেক দু’টিতে এবার অতিথি পাখি কম বসেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: কামরুল হাসান ইনকিলাবকে বলেন, ‘পরিবহনের আওয়াজ, অধিক দর্শনার্থী এবং এ লেকগুলোতে পানির পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে অতিথি পাখি কম বসেছে।’ এ জন্য তিনি দর্শনার্থীদের নিরাপদ দূরত্ব থেকে পাখি দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ছাড়াও লেকগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে সংস্কার করা দরকার।’
জানা যায়, সাধারণত হিমালয়ের উত্তরের দেশ সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপালে এ সময়টায় প্রচুর তুষারপাত হয়। এ তুষারপাতে পাখিরা টিকতে না পেরে বাংলাদেশের মতো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে। শীত চলে গেলে তারাও চলে যাবে তাদের আপন ঠিকানায়।
প্রতিবারের মতো এবারও পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘পাখ-পাখালি দেশের রতœ, আসুন সবাই করি যতœ’ এ সেøাগানে আগামী ৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে পাখিমেলা-২০১৭। ২০০১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে এ পাখিমেলার আয়োজন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার।
দৃষ্টিনন্দন লেকে নানান জাতের শাপলা, তার মাঝে অতিথি পাখিদের খুনসুঁটি, পানির মাঝে ডুবোডুবি আর ওড়োউড়ি এসব দেখতে, ক্যাম্পাসের কুয়াশায় গা জড়াতে, ঠা-া বাতাসে গা’টাকে শিহরিত করতে, ব্যাস্তময় এ জীবনে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে এ সৌন্দর্য দেখে মনকে প্রশান্তি করতে চাইলে লাল মাটির ক্যাম্পাস জাবি এখন প্রস্তুত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।