Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অযথা হর্ন বাজালেই দণ্ড

একলাছ হক | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় হর্ন বাজানোর কারণে জরিমানা গুনতে হচ্ছে মোটরসাইকেল, সিএনজি ও প্রাইভেটকার চালকদের। গতকাল সোমবার রেলভবনের সামনে পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরীন হক। এই অভিযানে ১৬টি যানবাহনকে চার হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, শব্দদূষণেও রাজধানী ঢাকা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শহরের তালিকায় রয়েছে। শুধু রাজধানীতে নয়, সারাদেশেই শব্দদূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ঢাকা শহরে শব্দদূষণের অন্যতম কারণ হলো গাড়ির হর্ন। বিশেষত যানজটে আটকে থাকাকালে গাড়ি চালকদের অযথা হর্ন বাজানোর কারণে অত্যধিক শব্দদূষণ হয়ে থাকে। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রশাসনিক এলাকা ইত্যাদি নীরব এলাকা হওয়া সত্ত্বেও এসব এলাকায় মানমাত্রার থেকে দ্বিগুণের বেশি শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে। যানবাহনজনিত শব্দদূষণ হ্রাসে গাড়িচালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। ইতোমধ্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। সুস্বাস্থ্যের জন্য শ্রবণশক্তি রক্ষা করুন, অযথা গাড়ির হর্ন দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।
সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল সোমবার সকালে শুরু হওয়া অভিযানে পুলিশের সহযোগিতায় পরিবেশ অধিদফতরের কর্মীরা হর্ন বাজানো গাড়ি থামিয়ে চালককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে নিয়ে যান। এর আগে, হর্নের মাত্রা পরিমাপের যন্ত্র দিয়ে কত মাত্রায় হর্ন বাজানো হয়েছে তা পরীক্ষা করেন একজন। বেশিরভাগ যানবাহনে সহনীয় মাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ শব্দে হর্ন বাজানোর তথ্য রেকর্ড হতে দেখা গেছে। অনেক মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারে হাইড্রোলিক হর্নও দেখা গেছে। এ সময় একটি গাড়ি ধরলেও পাশে হর্ন দিয়ে অন্য গাড়িগুলোকে চলে যেতে দেখা গেছে। আবার অন্য পাশের রাস্তায় হাইড্রোলিক হর্নের ব্যবহার দেখা গেছে।
অযথা হর্ন বাজানোর দায়ে এক বাইকচালকে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি হর্ন বাজাননি বলে দাবি করেন। তারপরও তাকে জরিমানা করা হয়। মোটরসাইকেল চালক বলেন, শব্দ দূষণের জন্য যে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হচ্ছে, আমি এটাকে সাধুবাদ জানাই। শব্দ দূষণের মাত্রা কত, এটা আমাদের জানানো হয় না। আবার হর্নগুলো আলাদা করে লাগাইনি, বাইকের সাথেই ছিল। তাহলে সেই কোম্পানির সাথে ব্যবস্থা না করে আমাদের দেয়া হচ্ছে জরিমানা।
তবে একাধিক যাবাহনের চালক অভিযোগ করছেন, তারা হর্ন দেননি তবুও শাস্তি দেয়া হচ্ছে। জরিমানা গুনতে হচ্ছে তাদের। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগন্যাল দেয় দাঁড়ানোর পর জরিমানা করা হচ্ছে। এভাবে সবাইকে শাস্তি দেয়ার প্রতিবান করেন অনেকে। আবার দেখা যায় রাস্তার এক পাশে বসে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় আর অন্য পাশ দিয়ে যানবাহন উচ্চ শব্দে হর্ন দিয়ে চলে যাচ্ছে।
অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী ৬৫ ডেসিবলে হর্ন বাজানোর কথা। ঢাকায় সর্বোচ্চ ৮০ ডেসিবল পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয়। কিন্তু বেশিরভাগ যানবাহনে ১০০ থেকে ১১৫ ডেসিবল পর্যন্ত হর্নের সাউন্ড রেকর্ড করা হয়েছে। এসময় প্রত্যেকটি যানবাহনে পরিবেশ দূষণ রোধে সচেতনতামূলক স্টিকার লাগিয়ে দেয়া হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া পরিবেশ অধিদফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরীন হক বলেন, সচিবালয় এবং আগারগাঁও এলাকায় নীরব এলাকা চিহ্নিত জায়গায় যাতে কেউ হর্ন না বাজায় সেজন্য অভিযান পরিচালনা করছি। সচিবালয় এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে। বেশিরভাগ যানবাহনে আমরা বেশি মাত্রায় হর্নের শব্দ পেয়েছি। তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে অভিযানের সময় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের একটি প্রাইভেটকারও ধরা হয়। কারটিতে হর্নের মাত্রা ১১৪ রেকর্ড করা হয়। পরে সেই গাড়ির চালককেও জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানে পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক রিয়াজুল ইসলামসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা অংশ নেন। সহযোগিতা করেন ডিএমপির পুলিশ সদস্যরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অযথা হর্ন বাজালেই দণ্ড
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ