Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে ভিড়লো শততম জাহাজ

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

‘এমভি হোসেই ফরচুন’ জাহাজ বার্থিংয়ের মধ্যদিয়ে গতকাল বুধবার শততম জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের মাইফলক স্পর্শ করেছে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি জেটি তথা মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর। বিগত ২০২০ সালে ওই জেটিতে প্রথম জাহাজ ভেড়ানো হয়। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের সময় সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের বিষয়ে বিগ-বি ইনিশিয়েটিভ ঘোষণার প্রেক্ষিতে মাতারবাড়িতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে মাতারবাড়িতে বাণিজ্যিক বন্দরসহ বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত বন্দরসীমায় তথা মাতারবাড়িতে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প কর্তৃক নির্মিত প্রথম জেটিতে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর প্রথমবার বার্থিং করে পানামা পতাকাবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ ‘ভেনাস ট্রায়াম্প’। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নির্মিত হয় দ্বিতীয় জেটি যা গত বছরের ১৫ জুলাই জাহাজ বার্থিংয়ের মাধ্যমে চালু হয়। বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা এই প্রত্যন্ত অঞ্চল মাতারবাড়ি বর্তমানে ‘দ্যা নেক্সট পাওয়ার অ্যান্ড পোর্ট হাব’ খ্যাত যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মানুষের জ্বালানি সঙ্কট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী বাংলাদেশ লিমিটেডের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে ইতোমধ্যে ৯৯টি সমুদ্রগামী জাহাজ হ্যান্ডলিং কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে যা রাজস্ব আয়ের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় এক লাখ ১৭ হাজার ৯১ মেট্রিক টন মালামাল হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে চবকের কোষাগারে ইতোমধ্যে রাজস্ব আয় বাবদ আনুমানিক দুই কোটি আট লাখ ছয় হাজার ২৩০ টাকা জমা হয়েছে যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রথম পর্যায়ের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে ২০২৫ সালে এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ ভিড়বে এই জেটিতে। বর্তমানে সিপিজিসিবিএল কর্তৃক নির্মিত জেটিতে প্রবেশের জন্য চ্যানেলের প্রশস্ততা ২৫০ মিটার থেকে ৩৫০ মিটারে উন্নীত করা হয়েছে। এই চ্যানেল বা প্রবেশপথ দিয়েই বঙ্গোপসাগর থেকে জাহাজ বন্দর জেটিতে প্রবেশ করবে এবং আগামী বছরে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আনুমানিক ডিডব্লিউটি ৮০ হাজার পেনাম্যাক্স সাইজের কয়লা পরিবহনকারী জাহাজ আগমনের কথা রয়েছে। এছাড়া উক্ত অফশোর এলাকায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন কর্তৃক স্থাপিত এসপিএম প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আগামী নভেম্বর নাগাদ এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, চ্যানেলটি নির্মাণের সময়কাল থেকে এ পর্যন্ত সিপিজিসিবিএলের নির্মাণ সামগ্রী বহনকারী আগত বৈদেশিক জাহাজসমূহ হ্যান্ডলিং ও কার্গো হ্যান্ডলিং পরিচালনা কাজে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ টাগ, পাইলটেজ ও স্টিটিভিডোরিং সেবা প্রদান করে আসছে। চবক পাইলটগণের দক্ষতা, প্রয়োজন অনুযায়ী টাগ সহায়তার কারণে আলোচ্য চ্যানেলে এখন পর্যন্ত কোনরূপ নৌ দুর্ঘটনা ঘটেনি। এমনকি চবকের নিবিড় তত্ত্বাবধানের কারণে উক্ত চ্যানেলে আগত জাহাজসমূহে কোন রকম চুরি, ডাকাতি বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং আইএসপিএস কার্যক্রমের কোনরূপ ব্যত্যয় হয়নি। এটিকে চবক তথা সমগ্র দেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয় বলছেন বন্দর কর্মকর্তারা। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরকে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতির গেইম চেইঞ্জার হিসেবে দেখছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাতারবাড়ি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ