পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মতিঝিল এলাকার মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে এখন ডলার নেই। তবে তারা গ্রাহকদের কাছে সময় নিয়ে প্রতি ডলার ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন। গতকাল বুধবার খোলাবাজারে ডলার ব্যবসায়ী ও মানি এক্সচেঞ্জের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, বেশিরভাগ মানি এক্সচেঞ্জেই এখন নগদ ডলারের সঙ্কট। মানুষ বিক্রির চেয়ে কিনছেন বেশি। এদিকে এতদিন যারা রাস্তায় ডলার কেনাবেচা করতেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের ভয়ে তারাও সরাসরি কেনাবেচা করছেন না।
পাগলা ঘোড়ার মতোই ছুটছে আন্তর্জাতিক লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের দাম। সংকটের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া দরের চেয়ে ২৫ টাকা বেশিতে এখন খোলাবাজারে কিনতে হচ্ছে মুদ্রাটি। দেশের ইতিহাসে এর আগে এই ঘটনা কখনও ঘটেনি। গত ২৭ জুলাই খোলাবাজারে ডলারের দর উঠেছিল ১১২ টাকা। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারির পর কয়েক দিন সেখান থেকে কিছুটা কমে ১০৮ টাকায় থিতু হয়।
এদিকে ডলারের কারসাজি রোধে খোলা বাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত সপ্তাহ পর্যন্ত কারসাজির অপরাধে পাঁচটি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি ৪২টিকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।
মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকার খোলা বাজারে নগদ ডলার কিনতে গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে ১১৯ থেকে ১২০ টাকা। গত সোমবার যা ছিল ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা। খোলা বাজারে সাধারণ গ্রাহক বিক্রি করলে প্রতি ডলারে পাচ্ছেন ১১৫ টাকা থেকে ১১৬ টাকা।
আব্দুর রশিদ নামে মতিঝিলের এক ডলার বিক্রেতা বলেন, বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে থেকে এনে নগদ ডলার কেনা-বেচা করি। যারা বিদেশ যান তাদের খুচরা কিছু ডলার লাগে। ব্যাংকে গেলে বিভিন্ন ঝামেলা হয়। আমাদের কাছ থেকে সহজে ডলার কিনতে পারে। খুচরা ৫০, ১০০ থেকে ১০০০ ডলার কেনা-বেচা করি। যারা বিদেশ থেকে খুচরা ডলার নিয়ে আসেন তারা আমাদের কাছে বিক্রি করেন। আবার অনেকে ডলার নিয়ে বিদেশে যান, সব খরচ হয় না, তারাও ফেরত দেন। এখন বাজারে ডলারের চাহিদা আছে। কিন্তু ডলার নেই। দামেরও ঠিক নেই। আবার ভয় আছে। আগে সরাসরি বিক্রি করলে কোনো সমস্যা হতো না। এখন পুলিশে ধরছে। তাই ব্যবসা করা সমস্যা। তিনি জানান, সকালে শুরুতে নগদ ডলার বিক্রি করেছি ১১৬ টাকায়। পরে আর ডলার নেই। এখন ১১৬ টাকায় ডলার পাচ্ছি না।
ডলার কিনতে আসা এক ক্রেতা বলেন, প্রতি ডলার ১২০ টাকা চাচ্ছে। ব্যাংকরেট ৯৫ টাকা বললে প্রতিষ্ঠানটি বলে, ওসব বলে লাভ নেই। যে রেটে দিতে পারব সেটা বলেছি। এতে সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাংকে গিয়েও ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাংকগুলো বলছে ডলার নেই।
ডলারের এই সঙ্কট শুধু খোলাবাজারে নয়, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতেও ১০৮ থেকে ১১০ টাকার ওপরে নগদে ডলার বিক্রি হচ্ছে। যদিও গত সোমবার আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হয়েছে ৯৫ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক ওইদিন সরকারি আমদানি বিল মেটাতে ৯৫ টাকা দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি হয়।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একই জায়গায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। তখন ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ও খোলাবাজারের দরের মধ্যে পার্থক্য ছিল কমই। বরং গোটা বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কিনে দর ধরে রাখতে চেষ্টা করেছে।
এদিকে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দাম বৃদ্ধির ঘটনায় গত সোমবার দেশি-বিদেশি ৬টি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণ করতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলো হলো-বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচবাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।