Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গণবিরোধী সিদ্ধান্ত জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল

বিভিন্ন সংগঠনের নিন্দা ও প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০২২, ১২:০২ এএম

পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করেই ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল ও অকটেনের দাম রেকর্ড বৃদ্ধি করেছে সরকার। সরকারের এহেন সিদ্ধান্তে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে জ¦ালানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। গতকাল শনিবার পৃথক বিবৃতিতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধিতে সর্বক্ষেত্রে আরো ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ও চাপ বাড়বে কয়েকগুণ।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এক বিবৃতিতে বলেন, চোরাগোপ্তা কায়দায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। আইএমএফকে খুশি করতে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত চরম ভোগান্তিতে থাকা জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। যা দেশবাসী মেনে নেবেনা। এই সিদ্ধান্ত দেশের মানুষের উপর নতুন করে অকল্পনীয় গজব চাপিয়ে দেবে। যার অভিঘাত পড়বে প্রতিটি ঘরে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে। শিল্প, কৃষি পরিবহনসহ অর্থনীতির প্রতিটি খাত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। নতুন করে কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাবে। সুতরাং জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি এবং জনগণকে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।

বাসদ: জ্বালানি তেল ও সারের মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি এবং ভোলায় বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিবর্ষণ ও দুইজনকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। তিনি বিবৃতিতে বলেন, তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি কৃষি, শিল্প, পরিবহনসহ সমস্ত ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়িয়ে দেবে আর সাধারণ নাগরিকের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলবে। দুর্নীতি ও লুটপাটের বোঝা জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দুর্বৃত্ত তোষণের রাজনীতি চলছে।

ইউট্যাব: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব প্রফেসর ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান বিবৃতিতে বলেন, দুর্নীতি ও অপচয় রোধ না করেই আবারো জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অগণতান্ত্রিক এবং গণবিরোধী। হয়তো সরকারের ফের কোনো দুরভিসন্ধি আছে। বাংলাদেশ যে শ্রীলঙ্কা তথা দেউলিয়াত্বের পথে যাচ্ছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এমনিতেই ভোজ্যতেল সয়াবিনসহ চাল, ডাল, তেল, চিনি, সাবান, টুথপেস্টসহ প্রায় সব পণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। এখন মূল্যবৃদ্ধির যে ‘টর্নেডো’ চালিয়ে দেয়া হলো, তাতে জনগণ তথা ভোক্তার অধিকার তছনছ হয়ে গেছে। মানুষ আরো সঙ্কটে পড়বে। নেতৃদ্বয় বলেন, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে অনির্বাচিত সরকার হুটহাট নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। এর পেছনে সরকারের লাগামহীন দুর্নীতিই দায়ী। তা না হলে সরকার মানুষের চরম দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতো। এভাবে চলতে থাকলে ক্ষুব্ধ জনগণ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে। তখন কিভাবে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিবে?

এনপিপি: ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, এই সরকার উন্নয়নের নামে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এখন তাদের দুর্নীতির দায় জনগণের ওপর চাপাতে জ¦ালানি তেলের দাম রেকর্ড বৃদ্ধি করেছে। যার প্রভাব পড়বে প্রত্যেকটি খাতে। সাধারণ মানুষের কষ্ট আরো বাড়বে। তারা বলেন, অথচ কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পেট্রোল ও অকটেন আমাদের কিনতে হয় না। তারপরও কেনো দাম বাড়লো? অবিলম্বে জ¦ালানির দামবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানায় এনপিপি।

জাগপা: জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান ও মহাসচিব এসএম শাহাদাত এক বিবৃতিতে জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, গণবিরোধী সরকার লুটপাটের মাধ্যমে আরাম আয়েশ করছে আর দুর্নীতির খেসারত দিচ্ছে জনগণ। তাদের লাগামহীন দুর্নীতির ফল হচ্ছে- জ¦ালানির মূল্যবৃদ্ধি।

এলডিপির নিন্দা: আওয়ামী লীগ সরকারের এক মুহুর্ত ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) একাংশের সভাপতি আবদুল করিম আব্বাসী ও মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। তারা অবিলম্বে সরকারকে এই জনবিরোধী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।
লেবার পার্টি: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও মহাসচিব লায়ন ফারুক রহমান বলেছেন, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো। সরকারের সীমাহীন লুটপাট দুর্নীতি ও অর্থপাচারের কারনে দেশের অর্থনীতি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

তারা বলেন, গণশুনানী ছাড়া দাম বৃদ্ধি অন্যায় ও অযৌক্তিক। জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি প্রমাণ করে গত ১৫ বছরের জনগণের সম্পদ লুটপাট করে রাষ্ট্রীয় কোষাগার শুন্য হয়েছে।

মুসলিম লীগ-বিএমএল: বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল’র মহাসচিব এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেন, অকটেন, পেট্রোল ও ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি দেশের আপামর জনগণের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি চরমভাবে বাড়াবে। ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধিতে কৃষি পণ্যের উৎপাদন ব্যায় বহুগুন বেড়ে যাবে। অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য বিদ্ধৃতি পরিবহন ব্যায় বেড়ে যাবে। ফলে সকল শ্রেণীর মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়বে। তিনি অবিলম্বে জ্বালানির মূল্য পূর্বাবস্থায় নির্ধারণ করার দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গণবিরোধী সিদ্ধান্ত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ