পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিদেশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। প্রতারনা ও জালিয়াতিসহ নানা অপরাধ করে এরা বিপুল পরিমাণ টাকা নিজ নিজ দেশে পাচার করছে
রাজধানীসহ সারাদেশে পাঁচ ধরনের বড় অপরাধে সক্রিয় রয়েছে ৫০টি বিদেশী চক্র। অল্প সময়ের জন্য খেলোয়াড়, ট্যুরিস্ট ও ব্যবসায়ী ভিসায় বাংলাদেশে এসে নানা অপরাধের মাধ্যমে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বিদেশী চক্রের সদস্যরা। আর এসব বিদেশী অপরাধীদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে দেশের পাঁচ শতাধিক অপরাধী। দেশী-বিদেশী অপরাধী চক্রের সদস্যরা একাধিকবার গ্রেফতার হলেও জামিনে বেরিয়ে আবারো একই অপরাধ করছে বলে অভিযোগ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের। র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দাদের হাতে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছে ৫৭৭ জন বিদেশী নাগরিক। এরা সোনা ও মাদক চোরাচালান, জাল মুদ্রার কারবার, এটিএম কার্ড জালিয়াতিসহ নানা অপরাধে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয়।
বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিদেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিআইডির এমন একজন কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, দেশে অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশিরা দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। আফ্রিকা, ভারত, শ্রীলংকা ও নেপালসহ বেশ কয়েকটি থেকে এ দেশে এসে অবৈধভাবে বাস করে নানা অপরাধ কর্মকাÐ ঘটাচ্ছে তারা। সোনা ও মাদক চোরাচালান, জাল মুদ্রার কারবার, এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ওইসব বিদেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে। চলতি বছর বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে র্যাব ও সিআইডিসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে অর্ধশতাধিক নাইজেরিয়ানসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক গ্রেফতার হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বন্ধু সেজে ফেসবুকে ও লটারির নামে প্রতারণার বেশকিছু ঘটনায় তাদের নাম উঠে আসে। অবৈধ বিদেশিদের এমন কর্মকাÐ বেড়ে চললেও প্রতিরোধে তেমন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। এমনকি অবৈধ বিদেশিদের ব্যাপারে কোনো তথ্য-উপাত্তও নেই কোনো সংস্থার কাছে। কতজন অবৈধ বিদেশি বসবাস করছে, তারা কোথায় থাকছে, কতদিন ধরে থাকছে? এসব তথ্য কারো জানা নেই। এই সুযোগে অবৈধ বিদেশিরা রীতিমতো চক্র গড়ে তুলে এখানে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। এদের মধ্যে আন্তর্জাতিক প্রতারকচক্রের সদস্যও রয়েছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার ইনকিলাবকে বলেন, অপরাধ কর্মকাÐে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতোমধ্যে অনেক অবৈধ বিদেশিকেই কারাগারে যেতে হয়েছে। কিন্তু কারাভোগের পর ছাড়া পেয়ে তারা নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছে না বা যেতে পারছে না। বরং তারা পুনরায় জড়িয়ে পড়ছে জাল ডলার, জাল টাকা ও মাদক চোরাচালানের মতো ভয়ঙ্কর সব অপরাধমূলক কর্মকাÐে। আইনের চোখে অপরাধীর দেশী-বিদেশী বলে কথা নেই। অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদেশী অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। এরা আইনের সুযোগ নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে অপরাধ করছে। প্রতারনা ও জালিয়াতিসহ নানা অপরাধ করে এরা বিপুল পরিমান টাকা নিজ নিজ দেশে পাচার করছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার মন্তব্য করেন।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, রামপুরা, বনশ্রী ও ধানমন্ডিসহ কয়েকটি এলাকায় বসবাস করছে কয়েক হাজার অবৈধ বিদেশি নাগরিক (যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে)। তারা খেলোয়াড়, ব্যবসায়ী বা পর্যটক পরিচয়ে দিনের পর দিন অবস্থান করছে এবং ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে নানা অপরাধে জড়িত কিছু অবৈধ বিদেশিকে ধরা হলেও চক্রগুলোর অপতৎপরতা বন্ধ করা যাচ্ছে না। এরা ফুটবলার, গার্মেন্ট ব্যবসায়ী, ছাত্র ও পর্যটক হিসেবে আসে। ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও তারা নিজ দেশে ফিরে যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে র্যাবের এক কর্মকর্তা বলেন, বিদেশিরা নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করেছে দূতাবাসগুলো। তবে খেলোয়াড় এবং শিক্ষার্থী পরিচয়ের বাইরে এরা পর্যটক পরিচয়ে এদেশে আসে। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও এরা একটি কৌশল অবলম্বন করে। বিশেষ করে যারা প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত তারা তাদের পাসপোর্টগুলো ফেলে দেয় এবং বলে যে তাদের পাসপোর্ট নেই। এক্ষেত্রে তারা আদালতেও একধরণের সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে। তারা আদালতকে বলে যে আমার পাসপোর্ট নেই এবং তারা বিদেশি নাগরিক হিসেবে বিভিন্ন ধরণের সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে আমার দেখছি- স্থানীয় সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, আস্থাকে পুঁজি করে তারা প্রতারণার কাজ করে থাকে। ইতোপূর্বে আমার তাদেরকে মাদক সংক্রান্ত অপরাধে ধরেছি। স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, বাংলাদেশে শতাধিক দেশের দূতাবাস নেই। কিন্তু ওইসব দেশের নাগরিকরা অন অ্যারাইভাল ভিসা, তিন মাসের ভিসা কিংবা ছয় মাসের ভিসা নিয়ে এদেশে প্রবেশ করে। আবার অনেকে প্রতিবেশী দেশে এসে সেখান থেকে অবৈধ পথে সীমান্ত অতিক্রম করে এদেশে এসে বসবাস করছে।
অবৈধ বিদেশি চক্রগুলো অবস্থা বুঝে নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তিকে টার্গেট করে তার ই-মেইল, মোবাইল নম্বর এবং পেশা সম্পর্কে জেনে নেয়। তারপর প্রথমে স্বল্প পুঁজিতে অধিক মুনাফার একটি ব্যবসার লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে তারা ই-মেইল পাঠায়। কিছুদিন ই-মেইল চালাচালির পর মুঠোফোনে যোগাযোগ শুরু হয়।
তিনি আরো বলেন, তারপর আসল ডলারের কথা বলে দেয়া হয় জাল ডলার। সেসব ডলারে এমন কিছু কেমিক্যাল পদার্থ ব্যবহার করা হয় যেগুলো যে কোনো সাধারণ নাগরিকের পক্ষে চেনা সম্ভব নয়। ওইভাবে অবৈধ বিদেশি চক্রগুলো সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিজ দেশে পাচার করছে। এমনকি বিদেশী চক্রগুলো জাল ডলার বিক্রির পাশাপাশি জাল টাকা তৈরি এবং তা বিক্রির নেটওয়ার্কও গড়ে তুলছে এদেশে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।