পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বরিশাল ব্যুরো : আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে চরমোনাইর তিনদিনব্যাপী অগ্রহায়ণ মাসের বাৎসরিক মাহফিল গতকাল শেষ হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) বাদ ফজর শেষ বয়ানের পরে চরমোনাইর পীর ছাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন।
ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিলের এ মুনাজাতে অংশ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার লঞ্চ, ট্রলার ও বাসযোগে লাখ লাখ মুসল্লি মাহফিল ময়দান ও সন্নিহিত এলাকায় উপস্থিত হন। গোটা এলাকায় তিল পরিমাণ ঠাঁই ছিল না। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত লাখ লাখ মুসল্লির বুকফাটা কান্নাজড়িত কণ্ঠে মহান আল্লাহর দরবারে পানাহ চেয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার জন্য চরমোনাই দরবার শরীফে তিনদিন পর্যন্ত অনেক ধৈর্য ধরে বিভিন্ন ওলামায়ে কেরামদের বয়ান শোনেন কয়েক লাখ মুসল্লি। পূর্বের ন্যায় এ বছরও হাজার হাজার লোক চিশতিয়া ছাবেরিয়া তরিকার বয়াত গ্রহণ করে মুরিদ হন।
চরমোনাই পীর ছাহেব হজরত মাওলানা রেজাউল করীম আখেরী মুনাজাতে বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহর শান্তি, মুক্তি ও উন্নতি কামনা করেন, বিশেষ করে বার্মার রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতনের অবসানকল্পে দোয়া করেন। মুনাজাতে পীর ছাহেব দেশবাসীর সামগ্রিক কল্যাণ কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের দরবারে আর্জি পেশ করেন।
গতকাল বাদ ফজর আখেরি বয়ানে পীর ছাহেব বলেন, বাংলার সমাজকে বিভিন্ন কলুষিত কর্মকা- থেকে মুক্ত করতে ফেসবুক, টুইটারসহ ইত্যাদির ব্যবহার থেকে যুবসমাজকে বিরত রাখতে হবে, আমাদেরও বিরত থাকতে হবে। বিজ্ঞানমূলক কর্মকা- সমস্ত ভালো দিকে ব্যবহার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের কলব তথা অন্তর পরিষ্কার করতে হলে বেশি বেশি জিকিরে মশগুল থাকতে হবে। শরীরে রোগ হলে দুনিয়ার ডাক্তারদের কাছে যেতে হয় অন্তরের রোগ হলে হক্কানী ওলামায়ে কেরামের কাছে গিয়ে কলবের রোগ দূর করার চেষ্টা করতে হবে। দুনিয়ার মহব্বতই যাবতীয় গুনাহের মূল কারণ। মুরিদানদের প্রতি আখেরী নসীহত হিসেবে তিনি আরো বলেন, হিংসা, অহংকার, গীবত, মিথ্যা, সুদ, ঘুষসহ অন্তরের সকল কুরিপু দূর করে গুনাহের কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। আমার মুরীদ বা অন্য কেহ জজবার হালত চাপিয়ে রাখতে পারলে অনেক ভালো। তবে ইচ্ছা করে কেউ কোনো ডাক-চিৎকার করলে প্রতিবার একটি করে কবীরা গুনাহ হবে। প্রতি কবীর গুনাহের শাস্তি হিসেবে সাত হাজার বছর জাহান্নাম ভোগ করা লাগবে। তিনি হুশিয়ার করে দিয়ে বলেন, ইচ্ছা করে কেউ জজবা প্রকাশ করতে যাবেন না। তাছাড়া যেভাবে জিকির বাতলানো হয় সেভাবে জিকির করবেন। তিনি বলেন, মুসলমানদের সমস্ত প্রকার হারাম উপার্জন ও ভক্ষণ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ হারাম মালের দ্বারা যে রক্ত ও মাংস তৈরি হবে তার স্থান হবে জাহান্নাম। তরিকার পাঁচ ওষুধ (সকাল-সন্ধ্যা জিকির, সাপ্তাহিক তালীম ও হালকায় জিকির, মাসিক ইজতেমা ও তালীমে উপস্থিত হওয়া, আউলিয়াদের কিতাব পাঠ করা ও চরমোনাইর বাৎসরিক মাহফিলে উপস্থিত হওয়া) পালনসহ শরীয়তের যাবতীয় হুকুম-আহকাম মেনে চলারও নসিহত করেন তিনি।
মাহফিলে আগত মুসল্লিদের মধ্যে শেষ দিন পর্যন্ত ৫ জন মুসল্লির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। গতকাল আখেরী মুনাজাতে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ গাউছ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহসান হাবিব, উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টুসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও অংশ নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।