মটর সাইকেল: নিউ নরমাল পরিস্থিতিতে (নতুন বাস্তবতায়)
মটরসাইকেল নিরাপদ, অধিক সুবিধাজনক, খরচ এবং সময় বাঁচায়। গণপরিবহনে একে অন্যের গা ঘেঁষে চলাচলে প্রতিদিন
মো. নূরুল আমিন : গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকার গঠনে একটি দেশের নির্বাচন কমিশনের গুরুত্বের বিষয়টি সচেতন সকল মহলেরই জানা আছে। এ কারণেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির পরও গণতন্ত্র এবং জাতীয় স্বার্থে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রধান ও সহকারী প্রধানদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে অধিকতর শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নিজ নিজ মতামত প্রকাশ করতে দেখা যায়। দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে থেকেও অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে তাদের পরামর্শমূলক দিকনির্দেশনা যে দেশপ্রেমেরই বর্হিপ্রকাশ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশবাসীর ভালোই জানা আছে যে, দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় বিভিন্ন সরকারের মেয়াদকালে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠানটি- নামে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হলেও পেছনে লাগাম ধরা থাকে অদৃশ্য শক্তির হাতে। যে কারণে দায়িত্ব পালনে তাঁরা সঠিক পারঙ্গামতা দেখাতে পারেন না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বাস্তবে নয় শুধু বুলির মধ্যেই থেকে যায়। আর একারণেই দেশের মানুষ এদেশের নির্বাচন কমিশনকে ঠুটুজগন্নাথ বলে গণ্য করে।
বর্তমান কমিশনের মেয়াদকাল আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশনের মেয়াদকাল উত্তীর্ণের পর সকল দল এবং মতের কাছে গ্রহণযোগ্য পরবর্তী কমিশন কীভাবে গঠিত হবে এ বিষয়ে স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও আজ পর্যন্ত কোনো সরকারই সে বিষয়ে সুস্পষ্ট বিধানের ব্যবস্থা করেননি। যে কারণে নতুন কমিশন গঠনের সময় এলে প্রতিবারই রাজনৈতিক দল, বিশিষ্টজন এবং দেশি-বিদেশি নানা মহল নানা মত সরকারের সামনে তুলে ধরেন। তবে সকল মহলের একটিই লক্ষ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য এ দেশে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গড়ে উঠুক।
পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন শেষে এ প্রতিষ্ঠানের সাবেক কমিশনাদের অর্জিত অভিজ্ঞতার পাল্লার ভার অবশ্যই অন্য যে কারো চেয়ে কমতো নয়ই, বরং বেশি হবে দেশবাসীর বিশ্বাস। যদিও পেছন থেকে লাগাম টেনে ধরার কারণে দায়িত্ব পালনের সময় তাদের অনেকেই পরিপূর্ণ দক্ষতা দেখাতে পারেননি। তারপরও সচেতন দেশবাসী মনে করেন, গণতন্ত্র এবং জাতীয় স্বার্থে সাবেক সিইসি ও সহকারী নির্বাচন কমিশনাররা যদি সম্মিলিতভাবে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে যথার্থ রূপরেখা জাতির সামনে তুলে ধরেন এবং তা যদি এদেশের সকল মহলের সমর্থন পায় তাহলে দেশবাসী ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেনের ইচ্ছানুযায়ী (বাংলাদেশ প্রতিদিন ২৩, নভেম্বর) সর্বসম্মত নির্বাচন কমিশন গঠনের একটা মূল্যবান সুযোগ জাতির সামনে হাজির করা দুরূহ কাজ নয়। দেশের সর্বমহলের সমর্থিত সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের মূল্যবান পরামর্শের প্রতি গোষ্ঠী কিংবা দলীয় স্বার্থ খুঁজে না পেয়ে যদি দু’একটি রাজনৈতিক দল কিংবা মহল বিরুদ্ধাচরণ করে তাহলে তা হবে তাদের জন্য আত্মঘাতী ও ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজ। এ কারণে জনগণ থেকে বিছিন্ন হওয়ার ভয়ে দেশের সর্বমহলের সমর্থিত কোনো বিষয়ের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশের ঝুঁকি কেউই নিতে চাইবে না।
সাবেক সিইসি এটিএম শামসুল হুদা ইতোপূর্বে তার একটি লেখায় পরবর্র্তী নির্বাচন কমিশন গঠনে সময়ের স্বল্পতার কথা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এ কথাটি মনে রেখেই আমরা প্রত্যাশা করছি, স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই আপনারা যারা সাবেক প্রধান ও সহকারী নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে যারা সক্ষম আছেন তারা সকলেই দ্রুততার সাথে পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ করে সম্মিলিতভাবে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে আপনাদের অর্জিত মূল্যবান অভিজ্ঞতার আলোকে এই বিষয়ে একটি দিকনির্দেশনা জাতির সামনে তুলে ধরতে এগিয়ে আসবেন। একই সাথে সরকারও যদি সেটা মেনে নেন তাহলেই হয়তো একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন সহজ হয়ে যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।