Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল বিদেশি ঋণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

এক হাজার কোটি বা ১০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে বিদেশি ঋণ। করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় ওলটপালট হয়ে যাওয়া বিশ্ব পরিস্থিতিতে কম সুদের বিদেশি ঋণ প্রাপ্তিতে এই রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ-ইআরডি জানিয়েছে, ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে ১ হাজার কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার ডলারের ঋণসহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ।
বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা। এই অঙ্ক আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) চেয়ে ২৬ শতাংশ বেশি। দেশের ইতিহাসে এর আগে কোনো অর্থবছরের এত বেশি বিদেশি ঋণ আসেনি।

তবে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলা আমেরিকান মুদ্রা ডলারের অস্থির বাজারে টাকার অব্যাহত দরপতনে এই বিদেশি ঋণ নিয়ে চিন্তিত অর্থনীতির গবেষকরা। তাদের মতে, দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা মহামারির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ঋণসহায়তা পাওয়ায় এই উল্লম্ফন হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে এই ঋণ পাওয়া গেলে খুবই ভালো হতো। কিন্তু চিন্তার বিষয় হচ্ছে, এই ঋণ তো আমরা প্রতি ডলার ৮৪/৮৫ টাকা হিসাবে পেয়েছি। এখন ডলারের দর ১১০ টাকায় উঠেছে। আরও কত বাড়বে, কে জানে। আমাদের ঋণের বোঝা কিন্তু অনেক বেড়ে গেল।
ইআরডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ৭৯৫ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার (৭ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন) ডলার ঋণসহায়তা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এসেছিল ৭৩৮ কোটি (৭ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন) ডলার।

মূলত, বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ বাড়তে থাকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে। ওই বছরই এক লাফে অর্থছাড় ৩০০ কোটি থেকে ৬৩৭ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। তারপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আসে ৬৫৪ কোটি ডলার।
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ নিয়েও নানা কথা হচ্ছে। যদিও দুই দেশের তুলনা নাকচ করছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকেরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের জিডিপির তুলনায় বৈদেশিক ঋণ এখনও ১৩ শতাংশের নিচে; আর শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে তা ৫০ শতাংশের কাছাকাছি।

ইআরডি বৃহস্পতিবার বিদেশি ঋণসহায়তার প্রতিশ্রুতি ও ছাড়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের বাংলাদেশকে ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ৩০ হাজার (৮.২০ বিলিয়ন) ডলার ছাড় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দাতারা। পাওয়া গেছে ১ হাজার কোটি ৮৩ লাখ ডলার।
এ হিসাবে গত অর্থবছরে দাতারা বাংলাদেশকে যে ঋণ দিতে চেয়েছিল তার থেকেও ২২ শতাংশ বেশি ছাড় করেছে। বিদেশি ঋণসহায়তা প্রাপ্তিতে এমনটা বিরল।

ছাড় করা ঋণের মধ্যে ১ হাজার কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার পাওয়া গেছে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে। ১৯ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার ডলার পাওয়া গেছে অনুদান। এর মধ্যে ২৫ লাখ ৩০ হাজার ডলার খাদ্য অনুদান এবং ১৯ কোটি ৫০ লাখ ৯০ হাজার ডলার প্রকল্প অনুদান হিসেবে পাওয়া গেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের ৭৯৫ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার ছাড় করেছিল দাতারা। সে হিসাবেই গত অর্থবছরে বিদেশি ঋণসহায়তা বেড়েছে ২৬ শতাংশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ