Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাকালুকি হাওরে টর্নেডো

আকাশের দিকে পানির স্তম্ভ

সিলেট ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

সিলেটের এশিয়ার বৃহত্তর হাকালুকি হাওরে আবারো টর্নেডোর আঘাত হেনেছে। এর আগে গত শনিবার হাকালুকি হাওরের বড়লেখা উপজেলার অংশে চাতলাবিল এলাকায় ‘জলজ টর্নেডো’র উৎপত্তি হয়। এতে হাকালুকির তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ও চাঞ্চল্যের তৈরি হয়। অনেকে ভিডিও ধারণ করে তা ভাইরাল করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এদিকে দ্বিতীয়বারে মতো রোববার বিকেল আবারো জুড়ি উপজেলায় টর্নেডোর দেখা দেয়। জানা যায়, টর্নেডোর উৎপত্তির বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রোববার বিকেলে জাপানের কাইটো বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের প্রফেসর ড. শি থাইচি হায়াসি ও মাসাশি সাকামতো এবং আবহাওয়া অধিদফতর সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী হাকালুকি হাওর পরিদর্শনে যান। সেসময় তারা দেখতে পান আবারো টর্নেডোর সৃষ্টি হয়েছে। তবে এর পানির স্তম্ভ ছিল খুবই চিকন। আগের দিনের তুলননায় দুর্বল ছিল সেটি।

পরিদর্শন টিমের সদস্য জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী ইনকিলাবকে জানান, জাপানের দু’জন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ নিয়ে হাকালুকি হাওরে টনের্ডোস্থল পরিদর্শনে গেলে ওইদিন আবারো টর্নেডোর উৎপত্তির সৃষ্টি হয়। সেটি অবশ্য দুর্বল ছিল। তিনি বলেন, আমরা অনেকটা দূর থেকে টর্নেডোস্থল দেখেছি। সেখানে বাতাসের ইউং ছিল কম। ভ্যাপসা গরম ছিল এবং বাতাসের ঘুর্ণায়ন গতি যে পানি উপরে টেনে তোলে আবার বৃষ্টি হয়ে ঝরে যায়। বিশেষজ্ঞদের তথ্য মতে, শুধুমাত্র জলভাগে টর্নেডোর তেমন ক্ষতি করতে পারবে না। তবে এর ব্যপ্তি ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার হতে পারে। ঘুর্ণয়ন গতিসীমায় যা পড়বে, তা উপরে তুলে নেবে। ওই স্থানে আকাশে কালো মেঘ জমে বিজলী চমকায় এবং বিকট শব্দে গর্জন হয়। তবে লম্বা পিলার আকারের স্তম্ভের নীচে মাটি-পানির সংস্পর্শে থাকলে সেটি প্রলয়ঙ্করী রূপ ধারণ করে মাটিতে মিশিয়ে দেয় সব কিছু। সাধারণত প্রলয়ঙ্করী টর্নেডোর গতিসীমা ২০০ কিলোমিটার বা তারও অধিক হতে পারে। এর আগে নেত্রকোনায়ও টর্নেডোর সৃষ্টি হয়েছিল। সেটির ব্যপ্তি ছিল ১২ কিলোমিটার জুড়ে।
এদিকে আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানান, এটি শক্তিশালী টর্নেডো ছিল। আমরা সাধারণত স্থলভাগে টর্নেডোর কথা শুনে অভ্যস্ত। কিন্তু আমাদের জলাভূমিগুলোতে এ ধরনের টর্নেডো আঘাত হেনে থাকে। দেশের উপকূলীয় এলাকা, বঙ্গোপসাগর ও জলাভূমিগুলোয় প্রায় প্রতিবছর ছোট ছোট টর্নেডো আঘাত হানার তথ্য আমরা পাই। তবে অন্য টর্নেডোর তুলনায় হাকালুকির টর্নেডোটি বেশ ব্যতিক্রম। এর ফানেলটির দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ৫০০ মিটার বা আধা কিলোমিটার মনে হয়েছে। এর আগে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় ১৯৮৯ সালে ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়ংকর টর্নেডো আঘাত হানে। সে টর্নেডেতে ১ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। লক্ষাধীক মানুষের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর ২০১৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ২০১৪ সালে নেত্রকোনায় টর্নেডো আঘাত হানতে দেখেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাকালুকি হাওরে টর্নেডো
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ