পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ডলার সঙ্কট নিরসনে বিদেশে ব্যাংকগুলোর আটকে থাকা ডলার দ্রুত ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো যদি এসব ডলার বিদেশ থেকে না নিয়ে আসে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক আর ডলার সাপোর্ট দেবে না। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)’র সাথে এক বৈঠকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডলার সঙ্কটের কারণে এই মুহূর্তে আমরা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। এখন পর্যন্ত মার্কেট স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোর চাহিদা অনুযায়ী ৭ বিলিয়ন ডলার সাপোর্ট দেয়া হয়েছে। এখনো দেড় বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বিদেশে আটকে আছে। যেটা এখনো আনা হয়নি। এছাড়া ব্যাংকগুলোর নষ্ট অ্যাকাউন্টে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার রফতানি পুনর্গঠন হিসাবে আটকে আছে। আটকে থাকা এসব ডলার দ্রুত ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ব্যাংকগুলো যদি এসব ডলার বিদেশ থেকে না নিয়ে আসে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক আর ডলার সাপোর্ট দেবে না। ব্যাংকগুলোর সাপোর্টের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটা দেশের আয়নার মতো। ফলে রিজার্ভকে একেবারে কমিয়ে ফেলা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে আপনারা যেভাবে সহযোগিতা করবেন ঠিক একইভাবে রফতানির টাকা ফেরত আনার জন্য আপনাদের একই রকম সহযোগিতা প্রত্যাশা করি। ব্যাংকগুলোকে আরো গঠনমূলন আচরণ করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, নিয়মের মধ্যে থাকলে যে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেয়ার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ ব্যাংক। আর যদি নিয়মের মধ্যে না থাকেন তাহলে আমাদের আর কিছু করার থাকবে না। ঋণ পুনঃ তফসিলের মাস্টার্স সার্কুলার সম্পর্কে মুখপাত্র বলেন, কোন গ্রাহককে পুনঃ তফসিল সুবিধা দেয়া হবে এবং কাকে দেয়া হবে না এটার পুরোপুরি দায়িত্ব এখন ব্যাংকের ওপর। এই দায়িত্ব এখন আর বাংলাদেশ ব্যাংক নিবে না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে যদি কোনো অনিয়ম ধরা পড়ে তাহলে কোনোরকম ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। কারণ ঋণ বিতরণের অনিয়মে বাংলাদেশ ব্যাংক জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে বলে জানানো হয়। এই প্রজ্ঞাপনের ফলে এখন থেকে ঋণ বিতরণের সময় ব্যাংকের এমডি থেকে শাখা পর্যায়ের সব কর্মকর্তা সতর্ক হয়ে যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। বৈঠক শেষে অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ডলার মার্কেট স্থিতিশীল করতে এবিবি ও বাফেদার সাথে আবারো বৈঠক করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনকে যুগোপযোগী ও সময়োপযোগী বলে জানিয়েছেন এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ঋণ পুনঃ তফসিল নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে ব্যাংকারদের দায়িত্ব আরো বাড়বে। কারণ এখন থেকে ঋণ পুনঃ তফসিল এবং খেলাপি ঋণের পুরো দায় দায়িত্ব বর্তাবে ব্যাংকের ওপর। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোতে এক ধরনের সংস্কার চালু হয়েছে। যা কেবলমাত্র শুরু। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঋণ পুনঃ তফসিল প্রক্রিয়া এখন থেকে আরও সুষ্ঠু হবে বলে মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।