Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষকসহ নিহত ২ আহত ৫০

ফুলবাড়িয়া কলেজ সরকারিকরণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের পুলিশের লাঠিচার্জ

মো: শামসুল আলম খান/শহীদুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে কলেজের এক শিক্ষক নিহত এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছেন। মৃত্যুবরণকারী শিক্ষকের নাম আবুল কালাম (৫৫)। তিনি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মাঝে পড়ে অসুস্থ হয়ে সফর আলী (৬০) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা নাগাদ এ ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, ফুলবাড়িয়া ডিগ্রী কলেজ সরকারিকরণের দাবিতে গত ৪৪ দিন যাবত তারা নিয়মিতই আন্দোলন করে যাচ্ছেন। বিক্ষোভ মিছিল, অবরোধ, হরতালসহ নানা কর্মসূচি পালিত হলেও তাদের দাবি পূরণ হয়নি। ফলে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন তারা।  
এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছেলে অ্যাডভোকেট ইমদাদুল হক সেলিমের মালিকানাধীন আখালিয়া হেলথ সেন্টার, আলম এশিয়ার কাউন্টারসহ কয়েকটি পয়েন্টে গত বৃহস্পতিবার হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে অজ্ঞাতনামা ১৮০ জনকে আসামি করে ফুলবাড়িয়া থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয় এবং শিক্ষার্থীসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে রোববার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করতে চায় আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ এ মিছিলে বাধা দেয়। এ সময় কলেজ দাবি আদায় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম আবুল হাশেম অবরোধের ঘোষণা দেন।
এ সময় অনেক শিক্ষার্থী কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে। এমন সময় পুলিশ কলেজের ভেতরে গিয়ে আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা শুরু করে। এতে কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবুল কালাম (৫৫)সহ ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন।
এরই মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে পুলিশের লাঠিপেটায় সফর আলী (৬৫) নামে এক পথচারী মারা গেছেন। এতে আন্দোলনকারীরা আরো উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আবারো তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। বিকেল নাগাদ ময়মনসিংহ সদর উপজেলার কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিক্ষক আবুল কালামের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে।
তারা ফুলবাড়িয়া-ময়মনসিংহ সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রায় শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিআরশেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয়পক্ষের মাঝে আবারো ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার সৃষ্টি হয়। এতে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ জন আহত হন।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজিব জানান, লাঠিপেটায় কোন শিক্ষক বা পথচারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। আন্দোলনকারীরা বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে আমরা লাঠিপেটা করি। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রায় শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিআরশেল নিক্ষেপ করা হয়। তিনি জানান, যে শিক্ষক মারা গেছেন তার হার্টে সমস্যা ছিলো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাঠিচার্জ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ