পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
আরও দরপতন হবে এমন শঙ্কায় সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবসেও দেশের পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। গত সোমবারের মতোই গতকাল মঙ্গলবার দিনের শুরু থেকে লেনদেনের শেষ সময় পর্যন্ত বিক্রেতা থাকলেও পুঁজিবাজার ছিল ক্রেতা শূন্য। ফলে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৭৫টিরই ক্রেতা ছিল না। তাতে সাড়ে ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)।
ক্রেতাহীন বাজারে শুধু লেনদেনই কমেনি, কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ৬৩ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ২১৪ পয়েন্ট। এর ফলে ঈদ পরবর্তী ছয় কর্মদিবসই দরপতন হলো পুঁজিবাজারে।
সূচক কমায় বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে ৪ হাজার ৯১৪ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এর আগের দিন কমেছিল ৫ হাজার ৮১০ কোটি ৫৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। অর্থাৎ দু’দিনে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার পুঁজি উধাও হয়েছে। চলমান দরপতনে বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে দেশের অর্থনীতি নিয়ে নানা উদ্বেগ, জ্বালানি-বিদ্যুৎ সংকট লাঘবে সরকারের নতুন নির্দেশনা ও পুঁজিবাজারে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দাবি— এসব ইস্যুকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারের নানা গুজব সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা আরও দরপতন হতে পারে এই ভয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
ডিএসইর তথ্য মতে, ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার সংখ্যা বেশি থাকার মধ্যদিয়ে দিনের লেনদেন শুরু হয়। ফলে দিনভর সূচক পতনের মধ্যদিয়ে লেনদেন হয়েছে। এদিন ডিএসইতে ৩৮২টি প্রতিষ্ঠানের ১০ কোটি ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩০টি শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ২১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৩৪৪টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির দাম।
প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ৬৩ দশমিক ৭১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে কমেছে ১১ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক কমেছে ৩৩ দশমিক ৭২ পয়েন্ট।
ডিএসইতে ৩১৯ কোটি ৩৫ লাখ ২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫১৫ কোটি ২৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকার শেয়ার। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে ২০০ কোটি টাকা কম লেনদেন হয়েছে। শুধু আগের দিনের চেয়েই নয় গত ১৫ মাস ১৪ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। এর আগের ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
বাজারে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোবাকোর শেয়ার। এরপর যথাক্রমে রয়েছে-কেডিএস এক্সেসরিজ, বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার, গ্রামীণফোন, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফরচুন সুজ, এইচ আর টেক্সটাইল, ন্যাশনাল ব্যাংক, সোনালী পেপার, স্কয়ার ফার্মা এবং ওরিয়ন ফার্মাসিটিউক্যালস লিমিটেড।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২১৪ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ বাজারে ২৮৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ২৪৬টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার ৩৫৯ টাকা। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৩ কোটি ৬১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৯৭ টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।