পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাখাওয়াত হোসেন বাদশা : গত বছরের তুলনায় চলতি শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গায় পানি প্রাপ্তির পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, চুক্তি মোতাবেক সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার কিউসেক পানিও বাংলাদেশ পাচ্ছে না।
অপরদিকে, রোববার জাতীয় সংসদের পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদের দেয়া বক্তব্যের সাথে যৌথ নদী কমিশনের তথ্য-উপাত্তে ব্যাপক অমিল রয়েছে। মন্ত্রী সংসদকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ চুক্তি মোতাবেক সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গঙ্গার পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশ বেশি পানি পায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- চলতি বছর গঙ্গায় পানির প্রবাহ গত বছরের এই সময়ের তুলনায় অনেক কম।
এমন পরিস্থিতিতে ত্রিশ বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ার বিষয়টি ফেব্রুয়ারির শুরুতে চিঠির মাধ্যমে ভারতকে অবহিত করেছে বাংলাদেশ। গত বছর শুষ্ক মৌসুমের প্রথম ১০ দিনে (১-১০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পেয়েছে ৫৮ হাজার ৫২৮ কিউসেক পানি। আর এ বছর একই সময়ে পেয়েছে ৩১ হাজার ৩৯৪ কিউসেক পানি। এ হিসাবে পানি কম পেয়েছে ২৩ হাজার ৫১৮ কিউসেক।
গত বছর জানুয়ারির দ্বিতীয় দশ দিনে (১১-২০) বাংলাদেশ পেয়েছে ৬২ হাজার ৩৩০ কিউসেক পানি। আর এ বছর একই সময়ে পেয়েছে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি। এ হিসাবে পানি কম পেয়েছে ৩০ হাজার ৯৩৬ কিউসেক। গত বছর জানুয়ারির তৃতীয় দশ (২১-৩১) দিনে বাংলাদেশ পেয়েছে ৫৩ হাজার ১৪১ কিউসেক পানি। এ বছর একই সময়ে পেয়েছে ৩১ হাজার ১৪ কিউসেক পানি। এ হিসাবে পানি কম পেয়েছে ২২ হাজার ১২৭ কিউসেক। গত বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম দশ দিনে (১-১০) বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৫ হাজার ৭১ কিউসেক পানি। আর এ বছর একই সময়ে পেয়েছে ২৯ হাজার ৭৩৭ কিউসেক পানি। এ হিসাবে পানি কম পেয়েছে ১৫ হাজার ৩৩৪ কিউসেক।
এই পরিসংখ্যান থেকেই জানা যায়, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর একই সময়ে বাংলাদেশ কী পরিমাণ পানি কম পাচ্ছে। ত্রিশ বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তির ইন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুযায়ী এই পানি প্রাপ্তির পরিমাণ আরও কম।
গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী সর্বনিম্ন পঁয়ত্রিশ হাজার কিউসেক পানি পাওয়ার কথা থাকলেও জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার কিউসেক পানি কম দেয়া হয়েছে। আর চুক্তির ইন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুয়াযী পানি কম পাওয়া গেছে প্রায় ৯০ হাজার কিউসেক।
জেআরসির তথ্যানুযায়ী, শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে জানুয়ারির প্রথম দশ দিনে (১-১০ জানুয়ারি) গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে পানি জমেছিল ৭২ হাজার ৩৩৫ কিউসেক। এ থেকে বাংলাদেশকে ৩৫ হাজার কিউসেক দিয়ে ভারত নেয় ৩৭ হাজার কিউসেক পানি। এখানে চুক্তির ইন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুযায়ী বাংলাদেশ ৬৭ হাজার ৫২৬ কিউসেক পানি পাওয়ার কথা। ১১ থেকে ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দশ দিনে গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে পানি ছিল ৬২ হাজার ৭৮৮ কিউসেক। এ থেকে বাংলাদেশকে দেয়া হয় ৩১ হাজার ৩৯৪ কিউসেক এবং ভারত নেয় ৩১ হাজার ৩৯৫ কিউসেক পানি। এখানে চুক্তির উন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুযায়ী বাংলাদেশ ৫৭ হাজার ৬৭৩ কিউসেক পানি পাওয়ার কথা। ২১ থেকে ৩১ জানুয়ারি তৃতীয় দশ দিনে গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে পানি ছিল ৬২ হাজার ২৮ কিউসেক। এ থেকে বাংলাদেশকে দেয়া হয় ৩১ হাজার ১৪ কিউসেক এবং ভারত নেয় ৩১ হাজার ১৪ কিউসেক পানি। এখানে চুক্তির ইন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুযায়ী বাংলাদেশ ৫০ হাজার ১৫৪ কিউসেক পানি পাওয়ার কথা। ১ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে পানি ছিল ৫৯ হাজার ৪৭৪ কিউসেক। এ থেকে বাংলাদেশকে দেয়া হয় ২৯ হাজার ৭৩৭ কিউসেক এবং ভারত নেয় ২৯ হাজার ৭৩৭ কিউসেক পানি। এখানে চুক্তির ইন্ডিকেটিভ সিডিউল অনুযায়ী বাংলাদেশ ৪৬০ হাজার ৩২৩ কিউসেক পানি পাওয়ার কথা।
পরিস্থিতি যেখানে এ রকম, সেখানে রোববার পানিসম্পদমন্ত্রী জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন, ফারাক্কায় গঙ্গার পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে বাংলাদেশ বেশি পানি পায়। গত বছরের মে মাসের শুরুতে বাংলাদেশের পানির প্রবাহ ছিল ৩৬ হাজার ২৬৮ কিউসেক এবং মাসের শেষে ছিল ৫১ হাজার ৯১৮ কিউসেক।
মন্ত্রী আরও জানান, ১৯৯৬ সালের পানি চুক্তি অনুযায়ী শুষ্ক মৌসুমে (১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে) ১০ দিনওয়ারী গঙ্গার পানি বণ্টনের জন্য চুক্তি রয়েছে। সেই হিসাবে পানির প্রবাহ ৭০ হাজার কিউসেকের কম হলে উভয় দেশ অর্ধেক হারে পানি পায়। ৭০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার কিউসেক হলে বাংলাদেশ পায় ৩৫ হাজার কিউসেক এবং অবশিষ্ট প্রবাহ ভারত পায়। আর প্রবাহ ৭৫ হাজার কিউসেকের ওপরে হলে ৪০ হাজার কিউসেক ভারত পায় এবং অবশিষ্ট প্রবাহ বাংলাদেশ পায়।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জানান, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ১১ মার্চ থেকে ১০ মে উভয়দেশ ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে দশ দিনের অনুক্রমে গ্যারান্টিযুক্তভাবে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পায়। তিনটি দশ দিনের অনুক্রমে বাংলাদেশ ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পায়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে ফারাক্কায় গঙ্গার পানি বণ্টন করা হচ্ছে বলেও তিনি সংসদকে অবহিত করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।