পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে ‘বিতর্ক’ আছে, দলীয় প্রধান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেই বক্তব্যকে সমর্থন করে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রাসঙ্গিকভাবে সঠিক বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু তার বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে ও হয়রানি করতেই তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গতকাল সোমবার সুপ্রিমকোর্টে শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ব্রিটিশ ল স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স’ আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, ৯ বছর গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন; রাষ্ট্রকে রক্ষা করেছেন, তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দেয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পদ্ধতি বের করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা দেশের সব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে ক্ষমতা হস্তান্তরের সঠিক পদ্ধতি বের করতে চাই। তাই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসুন।
তিনি বলেন, সরকার পরাজিত হওয়ার ভয়ে নির্বাচন দিতে চায় না। তারা জানে নির্বাচন হলে বিরোধী দলও গঠন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের পরিণতি হবে ভারতের সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের মতো। এ ভয়ে তারা নিরেপেক্ষ নির্বাচন দিতে চায় না।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র বিপন্ন। মানুষের সকল মৌলিক অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হয়েছে। মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মানুষের আজ শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, শতশত মানুষকে পঙ্গু ও নিখোঁজ করা হয়েছে। এই সরকারের আমলে ছয়শ’র ওপর মানুষ হত্যা, ৪৪০ জন গুম এবং ৪ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে কারাগারে নেয়া হয়েছে। ১৭ হাজার মামলা করা হয়েছে। ৪ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে তো দেশ চলতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে ভয়াবহ সাংবিধানিক সংকট ও গণতন্ত্রের সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুদক ও নির্বাচন কমিশন সরকারের তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সরকার বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খালেদা জিয়া দীর্ঘ নয় বছর গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যিনি রাষ্ট্রকে রক্ষা করেছেন, রাষ্ট্রকে ধারণ করেছেন তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দেয়া হয়েছে। খালেদাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য এবং হয়রানি করার জন্যই এ মামলা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সরকারের মতের বিরুদ্ধে যারা কথা বলছেন তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেয়া হচ্ছে। এই মামলা থেকে বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকরাও রেহাই পাচ্ছেন না। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আপিল বিভাগ থেকে জামিন দেয়ার পর আবার নতুন মামলায় তাকে আটকে রাখার সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।
আওয়ামী লীগ কিছু না পেলে মিথ্যা প্রচার করে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, বারবার এদেশের মানুষ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের অধিকার আদায় করে নিয়েছে। সবাই সরকারকে কর্তৃত্ববাদী বলছে। ভারতীয় এক সাংবাদিক বর্তমান সরকারকে ভারতের ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের সঙ্গে তুলনা করছে। ইন্দিরা গান্ধী একটা বিরোধী দলও তৈরি করতে পারেননি। ফলে পরবর্তী নির্বাচনে তিনি জামানত হারান। এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের অবস্থাও ইন্দিরা গান্ধীর মতো হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সারাদেশের মানুষ তো বটেই, বিশ্ববিবেক আজ বলছে বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে। এই কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহাবুব হোসেন বলেন, সরকার উন্নয়নের নামে বড় বড় কথা বলছে। কর্তৃত্ববাদী সরকারের চরিত্র নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখে না। ক্ষমতার দাপটে কথা বলে।
তিনি বলেন, আর বেশি দিন নয়, এদের বিচার হবেই। গণতন্ত্র মানবাধিকার নিশ্চিত হবে।
সংগঠনের সভাপতি সুলতানা রাজিয়া শাওনের সভাপতিত্বে সেমিনারে সুপ্রিমকোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।