Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক দিনে ১২ মৃত্যু চার মাসের সর্বোচ্চ

দেশে করোনাভাইরাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২২, ১২:০২ এএম

 

দেশে মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী ধারার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু বেড়ে দাঁড়ালো ২৯ হাজার ১৭৪ জনে। এসময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ২ হাজার ২৮৫ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৯৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এর একদিন আগে করোনায় দুজনের মৃত্যুর পাশাপাশি শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৯০২ জন। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

করোনায় হঠাৎ মৃত্যুর এই সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, যেসব ব্যক্তি মারা গেছেন, তারা গত তিন সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছেন। এ সময় শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা তাই আরও বাড়তে পারে বলে আমার আশঙ্কা। এরপর শনাক্তের সংখ্যা কমতে থাকলে তার তিন সপ্তাহের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যাও কমতে থাকবে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে যে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের আটজনই ছিলেন ঢাকা মহানগর ও জেলার বাসিন্দা। এর বাইরে কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও যাশোর জেলায় একজন করে কোভিড রোগীর মৃত্যুর খবর এসেছে। এক দিনে মৃত্যুর এই সংখ্যা গত ৫ মার্চের পর সর্বোচ্চ। সেদিন ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমার পাশাপাশি মৃত্যুও নেমে এসেছিল শূন্যের ঘরে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে শনাক্ত মোট কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৯৭৪ জন হয়েছে। মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার ১৭৪ জন। এসময় ৪৮২ জন কোভিড রোগীর সেরে ওঠার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১৯ লাখ ৮ হাজার ৭৭৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। শনাক্তের এই হার গত ১০ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সেদিনে ১৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ছিল শনাক্তের হার। নতুন শনাক্ত ২ হাজার ২৮৫ জনের মধ্যে ১ হাজার ৫৭৭ জনই ঢাকা জেলার বাসিন্দা। দেশের মোট ৫৮টি জেলায় গত এক দিনে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এসময় মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে নয়জন নারী এবং তিনজন পুরুষ। তাদের ১১ জন সরকারি হাসপাতালে এবং একজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপট কমলে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের নিচে নেমে আসে। ধারাবাহিকভাবে কমতে কমতে এক পর্যায়ে ২৬ মার্চ তা একশর নিচে নেমে যায়। কিন্তু গত ২২ মের পর থেকে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবারও বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে করোনাভাইরাস শনাক্ত রোগী ১৩ হাজার ৫১৬ জন। আগের সপ্তাহে তা ছিল ৮ হাজার ৮৪৬ জন। শনাক্ত রোগী বেড়েছে ৫২ দশমিক ৮ শনাক্ত। গত সপ্তাহে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২২ জন। আগের সপ্তাহে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এক সপ্তাহে মৃত্যু বেড়েছে ১৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সব জায়গায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। মাস্ক না পরলে শাস্তি দেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। ২০২১ সালের ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এক দিনে ১২ মৃত্যু চার মাসের সর্বোচ্চ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ