পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শফিউল আলম : বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের গ্রামেগঞ্জে সর্বত্র ভোটের গুঞ্জন দিন দিনই জোরদার হয়ে উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণের মাঝে এই নির্বাচন নিয়ে চুলছেঁড়া আলোচনা-পর্যালোচনা ও হিসাব-নিকাশ চলছে। নির্বাচনী হাওয়া প্রবল হওয়ার সাথে সাথে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে আরেকটি ভোটের আমেজ। তবে বিগত সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনের মতো আগামীতে ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে ভোটারদের মধ্যে সংশয় ও শঙ্কা বেড়েই চলেছে। ইউপি চেয়ারম্যান পদে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধান দু’টি রাজনৈতিক পক্ষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য ছোট দল-সংগঠনের তৃণমূল নেতা-কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে তৃণমূল কর্মীদের কদরও বেড়ে গেছে। ইউপি নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী ও তাদের নেতা-কর্মী, সমর্থকদের দৌঁড়-ঝাঁপ চলছে সবক’টি এলাকায়। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫টি জেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংখ্যা ৩শ’৮১টি। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে ধাপে ধাপে মার্চ মাস থেকে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে নিজ নিজ পছন্দের দলীয় মনোনয়ন পেতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের কাছে প্রতিনিয়ত আগেভাগে লবিং তদবির করছেন মনোনয়ন প্রার্থীরা। আবার অনেকেই দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ‘অপসন’ বা বিকল্প প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন। সম্ভাব্য চেয়ারম্যান-মেম্বার পদপ্রার্থীরা নিজেদের এলাকার সর্দার-মাতবরসহ মান্যগণ্য, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে ছুটছেন তাদের দোয়া ও সমর্থন লাভের আশায়। অনেকেই ‘এলাকাবাসীকে শুভেচ্ছা’ জানিয়ে বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন টানিয়ে আগাম ভোটের মাঠ নিজেদের আয়ত্তে নেয়ার প্রাণান্তকর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরবে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। আর বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা, তাদের সমর্থকগণ সেই তুলনায় ‘ধীরে চলো’ নীতি অনুসরণ করে চলেছেন। অনেকে নেপথ্যে ও নীরবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সবার কাছেই নির্বাচন মানে কৌশলের লড়াই।
এদিকে বসন্ত বাতাসে ভর করে আরেকটি নির্বাচনী মওসুম তথা ইউপি নির্বাচন ভোটারদের দরজায় কড়া নাড়ছে। আগামী মার্চ মাস থেকে ধাপে ধাপে স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে তৃণমূলের বড় ইউনিট দেশের গ্রাম-গঞ্জে বিস্তৃত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আয়োজনের তোড়জোড় চলছে। বিগত পৌরসভা নির্বাচনের রেশ না কাটতেই ইউপি নির্বাচনী আয়োজনকে ঘিরে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবখানে হাট-বাজারে চায়ের কাপের আসর জমে উঠতে শুরু করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন পুরোপুরি রাজনৈতিক অর্থাৎ দলীয়ভাবে করার বিষয়টিই সর্বত্র মানুষের মুখে মুখে আলোচনা-সমালোচনা আর বিতর্কে ঘুরেফিরে উঠে আসছে। চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য কয়েকজন প্রার্থীর সাথে আলাপচারিতায় জানা গেছে, বিগত পৌরসভা নির্বাচনের মতো আসন্ন ইউপি নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন দলকে একতরফা ভোটে জিতিয়ে আনা হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ-সংশয় ও গুঞ্জন এখন প্রবল। নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে কিনা তা নিয়ে কেউই আর আস্থাশীল হতে পারেছেন না।
এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসী এমনিতেই ভোটের রাজনীতি নিয়ে অতিমাত্রায় উৎসাহী। বিশেষ করে ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন খোলামেলা দলীয় পরিচয়ে, দলীয় প্রতীকে, দলীয় ব্যানারে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছেÑ এ প্রেক্ষাপটে জনগণের মধ্যে কৌতূহলও বেড়ে গেছে। অনেকেই বলছেন, পৌরসভার মতো ইউপিসহ সমগ্র স্থানীয় সরকার তথা তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় একক আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে নিজস্ব বলয় তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ক্ষমতাসীন মহল এগুতে চাইছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের সর্বত্র গ্রামে-গঞ্জে, উপজেলাগুলোতে বিএনপিসহ বিরোধী পক্ষের সক্রিয় নেতা-কর্মী, সমর্থকদের নামে গণহারে দেয়া পুরনো মামলা-মোকদ্দমা, হুলিয়া, নতুন করে আরও মামলা দিয়ে, তাছাড়া হরেক রকম পন্থায় হয়রানিমূলক কৌশলে রীতিমতো দৌঁড়ের মধ্যে রাখা হয়েছে। এতে করে তাদের পক্ষে আসন্ন ইউপি নির্বাচনী মাঠে নামা এবং টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। এই সুবাদে সহজেই ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে যাবে বলে অনেকেরই শঙ্কা। সেই সাথে প্রধান দু’টি রাজনৈতিক পক্ষ আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র তৃণমূলের নেতা-কর্মী, সমর্থকরা আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে নানামুখী পর্যালোচনা, আগাম হিসাব-নিকাশ ও জল্পনা-কল্পনা করে চলেছেন। রাজনৈতিক ব্যানারে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে চট্টগ্রাম অঞ্চলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বেশিমাত্রায় উৎসাহ চোখে পড়ছে।
এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫টি জেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) রয়েছে মোট ৩শ’ ৮১টি। এরমধ্যে চট্টগ্রামে রয়েছে ১৯২টি ইউপি। কক্সবাজারে ৭১টি, খাগড়াছড়িতে ৩৮টি, রাঙ্গামাটিতে ৪৯টি ও বান্দরবানে ৩১টি ইউপি রয়েছে। ধাপে ধাপে এবং মেয়াদ অতিবাহিত হওয়া সাপেক্ষে এসব ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে আগামীতে ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন উপায়ে ভোটার তথা নিজ নিজ এলাকাবাসীর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করে চলেছেন। সম্ভাব্য প্রার্থী অনেকে বিয়ে-শাদিসহ সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে ঘন ঘন ছুটে যাচ্ছেন। সরকার দলীয় এমপি, নেতাদের কাছে ছুটছেন ইউপি চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। স্থানীয় জনগণের মাঝে গুঞ্জন চলছে প্রধান দু’টি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে নিজেদের এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান এবং সদস্য (মেম্বার) পদে কে কোথায় মনোনয়ন পেতে পারেন। ‘মনোনয়ন বাণিজ্য’ নিয়েও নেপথ্যে আলোচনা ও তৎপরতা চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।