পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে ৩ হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন কেনার কথা ছিলো বাংলাদেশ রেলওয়ে। দাম নির্ধারণ করা হয় ৩শ’ ২২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৯০ ভাগ অর্থ হুন্দাইকে পরিশোধও করেছে রেলওয়ে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ক্রয়কৃত ইঞ্জিনটি আসলে ২ হাজার হর্সপাওয়ারের। অর্থাৎ ১ হাজার হর্সপাওয়ারের অর্থ অতিরিক্ত পরিশোধ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)র এক ঝটিকা অভিযানে এমন দুর্নীতির সত্যতা মিলেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আব্দুল গনি রোডস্থ রেলভবনে এ অভিযান চালানো হয়। সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার, উপ-সহকারী পরিচালক মো. কামিয়াব আফতাহি-উন-নবীর নেতৃত্বে সংস্থার এনফোর্সমেন্ট টিম এই অভিযান পরিচালনা করে। পরে দুদকের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ রেলওয়েকে ইঞ্জিনগুলো সরবরাহ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি। দাম ছিল ৩২২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এরইমধ্যে ৯০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। চুক্তিতে ৩ হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন সরবরাহের কথা থাকলেও বাস্তবে ২ হাজার হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন সরবরাহ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে যুক্ত হওয়া ১০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কেনার ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালায় দুদক। দুদক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে যুক্ত হওয়া ১০টি মিটার গেজ লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কেনায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালায় দুদক টিম। অভিযান চলাকালে টিমের সদস্যরা রেলওয়ের সচিব, মহাপরিচালকসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেন। রেলের ইঞ্জিন কেনার জন্য ২০১৫ সালে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য লোকোমোটিভ রিলিফ ক্রেন ও লোকোমোটিভ সিমুলেটর সংগ্রহ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফায় বাড়িয়ে জুন, ২০২২ পর্যন্ত করা হয়।
রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ইঞ্জিনগুলোতে চুক্তি বহির্ভুতভাবে ৩টি ক্যাপিটাল কম্পোনেন্টের ভিন্নতা রয়েছে। চুক্তিতে ৩ হাজার হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিন কেনার কথা থাকলেও ২ হাজার হর্স পাওয়ারের ইঞ্জিন কেনা হয়েছে।
টিএ-১২ মডেলের অল্টারনেটরের পরিবর্তে টিএ-৯ মডেল যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ২৯০৯-৯ মডেলের পরিবর্তে ২৯০৯ মডেল দেয়া হয়েছে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে পরবর্তী কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় দুদক সূত্র।
কেনাকাটার সঙ্গে রেলওয়ের তৎকালীন তিন কর্মকর্তা জড়িত থাকারও প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুদক টিম। তারা হলেন, মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মো. মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী এবং হুন্দাই রোটেম কোম্পানির স্থানীয় ঠিকাদার আফসার বিশ্বাস।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য লোকোমোটিভ, রিলিফ ক্রেন ও লোকোমোটিভ সিমুলেটর সংগ্রহ’ নামক প্রকল্প চালু করা হয়। পুরো প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৭৩৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পে অধীনে ৩২২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকায় ১০টি মিটারগেজ ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ কেনা হয়। ইঞ্জিনগুলো প্রাক-জাহাজীকরণের দায়িত্ব দেয়া হয় চায়না সার্টিফিকেট অ্যান্ড ইন্সপেকশন কোম্পানিকে (সিসিআইসি)। ২০২০ সালের ২৫ জুলাই ইঞ্জিনগুলো প্রাক-জাহাজীকরণ সমীক্ষা (পিএসআই) সনদ ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হয়। সিসিআইসি ওই বছরের ১২ আগস্ট নিয়ম ভেঙ্গে একই দিনে দু’টি পিএসআই সনদ দেয়। ওই বছরের ৩১ আগস্ট ইঞ্জিনগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে এলে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই খালাস করতে প্রকল্প পরিচালককে বাধ্য করা হয়। ইঞ্জিনগুলোতে নিম্নমানের ক্যাপিটাল কম্পোনেন্ট সংযোগ করার বিষয়টি সিসিআইসি ও হুন্দাই রোটেম গোপন রেখেছে। আবার কমিশনিং কমিটির প্রতিবেদনে ইঞ্জিনগুলোর বিভিন্ন ত্রæটি বিষয় তুলে ধরা হলেও ‘পারফরম্যান্স সন্তোষজনক’ বলে মন্তব্য করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।