পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে সারাদেশে কর্মক্ষেত্রে ২৪১টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৩৩ জন শ্রমিক। এর মধ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডেই মারা গেছেন ৪৯ জন। ২০২১ সালের একই সময়ে সারাদেশে ২২০টি কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় ৩০৬ জন শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। সে হিসাবে আগের বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম ছয় মাসে কর্মক্ষেত্রে ৩৭ জন বেশি শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
১৫টি জাতীয় ও ১১টি স্থানীয় দৈনিকের প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি (এসআরএস)। সংস্থাটি বলছে, যেসব শ্রমিক কর্মক্ষেত্রের বাইরে অথবা কর্মক্ষেত্র থেকে আসা-যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় অথবা অন্য কোনো কারণে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের এই জরিপের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি।
জরিপে পাওয়া কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ১৩৮ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন পরিবহন খাতের। এরপরেই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে (যেমন-ওয়ার্কশপ, গ্যাস, বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি) প্রাণ হারিয়েছেন ১০০ জন। এছাড়া নির্মাণ খাতে ৪৮ জন, কল-কারখানা ও অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠানে এই ২৬ জন এবং কৃষি খাতে ২১ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন এই ছয় মাসে।মৃত্যুর কারণ পর্যালোচনা করে সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি বলছে, সবচেয়ে বেশি ১৫৩ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন সড়ক দুর্ঘটনায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৭ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন আগুনে পুড়ে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে।
এছাড়া ছাদ, শক্ত বা ভারী কোনো বস্তুর আঘাত বা তার নিচে চাপা পড়ে ২৩ জন; মাঁচা বা ওপর থেকে পড়ে ১৯ জন; বজ্রপাতে ১৫ জন; বয়লার বিস্ফোরণে ১৫ জন; রাসায়নিক দ্রব্য বা সেপটিক ট্যাংক বা পানির ট্যাংকের বিষাক্ত গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে ৯ জন; পাহাড় বা মাটি, ব্রিজ, ভবন বা ছাদ, দেয়াল ধসে ৯ জন এবং পানিতে ডুবে আট জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন।
জরিপের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যবস্থা, আইন প্রয়োগে বাধা, বেপোরোয়া যানচলাচল ও অদক্ষ চালক ইত্যাদি পরিবহন দুর্ঘটনার মূল কারণ। সাম্প্রতিকালে অগ্নিদুর্ঘটনায় নিহতের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে এসআরএস জানিয়েছে, কারখানায় অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা না থাকা, কেমিক্যাল সংরক্ষণে অদক্ষতা ও অবহেলা, কারখানায় ভবনে জরুরি বহির্গমন পথ না থাকা, কারখানা নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অনুমতি না নেওয়া, সুরক্ষা বিষয়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ না দেওয়া অগ্নিদুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
কোনো ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা না নিয়েই বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া, ভেজা হাতে মোটর চালু করা, মাথার ওপরে যাওয়া বিদ্যুতের লাইনের নিচে কাজ করা, ভবনের পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া বৈদ্যুতিক তারের পাশ দিয়ে লোহার রড ওঠানোকে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে এসআরএস। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার না করার কারণেও কিছু দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জরিপ তথ্য প্রকাশ করে এসআরএসের নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কাম্য নয়। সড়ক দুর্ঘটনায় শুধু চালক ও হেলপারের মৃত্যুর ঘটনাগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি। এসব প্রাণহানি এড়াতে পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও নজরদারি বাড়াতে হবে। তা না হলে দুর্ঘটনা বাড়তেই থাকবে।
দুর্ঘটনার কারণ তুলে ধরে সেকেন্দার আলী মিনা বলেন, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের নিরাপত্তা নিয়ে মালিকদের অবহেলা ও সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর যথাযথ পরিদর্শনের ঘাটতি কর্মদুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। সীতাকুন্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা আমরা দেখতে পেয়েছি। এসব দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করে তা কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।