Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শাহজালালে ইমিগ্রেশন আগের মতোই

উদ্বোধনের পরই বন্ধ ই-গেট!

খলিলুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২২, ১২:০১ এএম

উদ্বোধনের ১১ মাস ৮ দিন পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত ৭ জুন ই-গেট সেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে ই-পাসপোর্টধারী একজন যাত্রী ১৮ সেকেন্ডে ভেরিফিকেশন শেষে ই-গেট অতিক্রম করতে পারছেন। কিন্তু এ কার্যক্রম শুরু হলেও যাত্রীরা তেমন কোনো সেবা পাচ্ছেন না। যাত্রীদের অভিযোগ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ই-পাসপোর্টধারীরা আগের মতোই ইমিগ্রেশন করতে হচ্ছে। তবে বিমানবন্দরে ই-গেটের কার্যক্রম পারীক্ষমূলকভাবে চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে আগমনী ইমিগ্রেশনে তিনটি এবং বহির্গমন ইমিগ্রেশনে ১২টি ই-গেট চালু করা হয়েছে। গত ৬ জুন পরীক্ষামূলকভাবে কিছু যাত্রীকে ই-গেটের মাধ্যমে সফলভাবে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়। পরদিন যাত্রীদের জন্য পুরোপুরি ই-গেট চালু করা হয়। এ সময় পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিআইজি) মো. মনিরুল ইসলাম, ই-গেট স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তবে পুরোপুরি এ কার্যক্রম চালু হলেও দিনের বেশিরভাগ সময় যাত্রীরা আগের মতোই ইমিগ্রেশন করছেন বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি দুবাইগামী এক যাত্রী ইনকিলাবকে বলেন, আমি দীর্ঘ দিন থেকে দুবাইতে থাকি। গত চার মাস আগে আমি ছুটিতে দেশে আসি। এর মধ্যে বিমানবন্দরে ই-গেটের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানতে পারি। কিন্তু বিমানবন্দরে গত সপ্তাহে আমি ছুটি দেশে ফের দুবাই চলে আসি। কিন্তু ইমিগ্রেশন আগের মতোই করতে হয়েছে। এতে অনেক বেশি সময় লেগেছে। তিনি বলেন, প্রথমে মনে হয়েছিল ই-গেট দিয়ে ইমিগ্রেশন করব। তবে সেখানে গিয়ে দেখি সেই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। পরে আগের মতোই ইমিগ্রেশন করি।
জানতে চাইলে গত শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওসি ইমিগ্রেশন ইনকিলাবকে বলেন, কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। ১৫টি গেট নিয়ে এ কার্যক্রম চলছে। তবে যাত্রীরা তো সেবা পাচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পরীক্ষামূলকভাবে এখনো চলছে।

জানা যায়, গত বছরের ৩০ জুন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ই-গেইট উদ্বোধন করা হয়। তবে পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদফতর এবং পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) মধ্যে সমন্বয়হীনতায় এই গেইট চালুর বিষয়টি এতোদিন ঝুলে ছিল। বিমান বন্দরে ইমিগ্রেশনের কাজ সামলান এসবি পুলিশের কর্মকর্তারা।
গত ৭ জুন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশি ই-পাসপোর্টধারীদের ই-গেটের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন চালু হলো। গত ৬ জুন পরীক্ষামূলকভাবে কিছু যাত্রীকে ই-গেইটের মাধ্যমে সফলভাবে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা হয়। পরে পরদিন যাত্রীদের জন্য ই-গেইট পুরোপুরি খুলে দেয়া হয়। ই-গেইটের মাধ্যমে ১৮ সেকেন্ডে ই-পাসপোর্ট এবং ই-পাসপোর্টধারী ব্যক্তির ভেরিফিকেশন শেষ করা যাচ্ছে।
তবে ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগ (ডিআইপি) সূত্রে জানা যায়, ই-পাসপোর্ট ও অটোমেটেড বর্ডার কন্ট্রোল (এবিসি) ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে মোট ৫০টি ইলেকট্রনিক গেট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানায়, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছয়টি এবং সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছয়টি ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে এত দিন সনাতন (ম্যানুয়াল) পদ্ধতিতে পাসপোর্টের তথ্য যাচাই করতে হতো ইমিগ্রেশন পুলিশকে। অল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিক আন্তর্জাতিক গন্তব্যের ফ্লাইট সূচি থাকলে ইমিগ্রেশন কার্যক্রমে চাপ পড়ে। এসব ঝক্কি এড়াতে ই-গেট বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। শাহজালালে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২১ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করেন।

তবে একটি সূত্র জানায়, ই-গেট পার হলেই যাত্রীর ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হচ্ছে না। ই-গেট পার হওয়ার পর যাত্রীকে আগের মতোই ইমিগ্রেশন ডেস্কে গিয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের মুখোমুখি হতে হবে।
তবে ই-পাসপোর্টধারী সব যাত্রীই ই-গেট ব্যবহার করতে পারবেন না। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ একটি পরিপত্র জারি করেছিল। যেখানে নির্ধারণ করা হয়েছে কারা ই-গেট ব্যবহার করতে পারবেন। ওই পরিপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি ই-পাসপোর্টধারী কূটনীতিক, অফিসিয়াল ই-পাসপোর্টধারী সরকারি কর্মকর্তা, বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা (সিআইপি), সেরা করদাতা কার্ডপ্রাপ্ত ই-পাসপোর্টধারী ব্যক্তি, ই-পাসপোর্টধারী পাইলট ও ক্রুরা ই-গেট ব্যবহার করতে পারবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাহজালালে ইমিগ্রেশন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ