Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের দাবি

প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৩ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তান বাংলাদেশকে অকার্যকর ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। জোটটি বলেছে, পাকিস্তানের সুরে সুর মিলিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াও একই পথে নেমেছেন। খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে পাকিস্তানের অপরাধকে আড়াল করা ও আজকের স্থিতিশীল বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু যতক্ষণ এ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ আছে ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ ষড়যন্ত্র করে টিকতে পারবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ১৪ দল নেতারা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অব্যাহত কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কর্মকা-ের জন্য ক্ষমা না চাইলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করারও দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। একই সঙ্গে জোটটি বলেছে, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চায়, যারা ৩০ লাখ শহীদ নিয়ে বিতর্ক করতে চায়, তারা রাষ্ট্রদ্রোহী, তারা দেশের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অব্যাহত ষড়যন্ত্র ও শহীদদের সংখ্যা নিয়ে খালেদার ‘বিতর্কিত’ বক্তব্যের প্রতিবাদে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানী ঢাকা বাদে দেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জোটটি। ওইদিন বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি পালন করা হবে।
গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানী ঢাকায় গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত মোট ১৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তানের অব্যাহত কটূক্তি ও শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ‘বিতর্কিত’ বক্তব্যের প্রতিবাদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি জানানো হয়। একই দাবিতে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বাদে সারাদেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে বিকাল ৪টা থেকে ৫ পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ১৪ দল।
গতকালের মানববন্ধনে রাজধানীর বিভিন্ন থানা, উপজেলা ও ওয়ার্ড ইউনিটের হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে যোগ দেন। তাদের ব্যানারে লেখা ছিল Ñ অকার্যকর, ব্যর্থ, জঙ্গি রাষ্ট্র পাকিস্তানের অব্যাহত বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত কর্মকা- ও আইএসআইর এদেশীয় দোসর স্বাধীনতাবিরোধী খালেদা জিয়ার মিলিত অপকর্মের প্রতিবাদে ব্যাপক গণজাগরণ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের সামনে নতুন করে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের প্রধান সমন্বয়কারী স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
মানববন্ধন কর্মসূচির সমন্বয়কারীর বক্তব্যে মোহাম্মদ নাসিম মানববন্ধন সফল করায় ঢাকাবাসীকে বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে, ১৪ দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে আমরা যুদ্ধাপরাধীর বিচার করছি। খুনিদের বিচার করে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছি। সারা বিশ্ব দেখছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা খুনিদের বিচার করতে পারি। তাই এ বিচার ঠেকাতে একাত্তরের পরাজিত শক্তি পাকিস্তান ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান আজ ধ্বংসপ্রায়। সারা বিশ্বে তারা ইতোমধ্যেই একটি সন্ত্রাসী, জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাই তাদের এ ষড়যন্ত্র। তাদের উদ্দেশে আমরা বলতে চাই Ñ এসব বন্ধ কর। হাত গুটিয়ে নাও। তা না হলে রেহাই পাবে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন, খালেদা জিয়াকে বলতে চাই, চক্রান্ত বন্ধ কর। পাকিস্তানি প্রেম ভুলে যাও। না হলে বাংলার মানুষ তোমাকে ছেড়ে দেবে না। বিচার করবে।
একই স্থানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া যখন ৯২ দিন আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে তথাকথিত আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে কান ধরে বাড়ি ফেরত যেতে বাধ্য হলো, তখন তাকে পাকিস্তান লাইফ জ্যাকেট দিল। তা হলো স্বাধীনতা যুদ্ধ ও তার শহীদদের নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা। আর পাকিস্তানের দোসর খালেদা জিয়া তার বিতর্কিত বক্তব্যের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে লাখ লাখ আত্মদানকে অস্বীকার করছে। কিন্তু পাকিস্তান ও তাদের এদেশীয় দোসর জঙ্গি আইএসের এজেন্ট খালেদা জিয়া পার পাবে না। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে। যেমন আজকে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা পাকিস্তান ও খালেদা জিয়ার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করলাম।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আমরা বাঙালি বীরের জাতি। আমরা বাঙালি জাতির জনকের নেতৃত্বে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে এদেশকে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাত থেকে মুক্ত করেছিলাম। সেই স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে আওয়ামী লীগ, বাংলার মানুষ ঘরে বসে থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, ব্যর্থ ও জঙ্গি রাষ্ট্র পাকিস্তান। ’৭১ সালেই তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। সেই পাকিস্তান আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলতে পারে না। বিশেষ করে পাকিস্তানের এজেন্ট বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে পাড় পেতে পারেন না।
হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া ’৭১ সালে যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আশ্রয়ে ক্যান্টনমেন্টে আরাম-আয়েশে ছিলেন। তিনি ’৭১ সালেও পাকিস্তানি ছিলেন, আজকেও তাদের ভাবাদর্শেই বিশ্বাস করেন। তার লক্ষ্য দুটি। একটি পাকিস্তানিদের অপরাধকে আড়াল করা। অন্যটি আজকের বাংলাদেশে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি করে বিশ্বের বুকে দেশকে একটি ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে পাড় পাওয়া যাবে না। জনগণ সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।
একস্থানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তোতা ও ময়না পাখির মতো বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া পাকিস্তানিদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করে কথা বলেছেন। যারা মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করতে বিতর্ক করে তাদের বিরুদ্ধে সংসদে আইন করে কঠোর বিচার করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
মানববন্ধন কর্মসূচি পরিচালনায় ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার রেহাই নেই। তিনি আইএসের এজেন্ট। আমরা জানি তিনি কোথা থেকে এত স্পর্ধা পান। কোথা থেকে কলকাঠি নাড়ানো হয়। কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্র করেই খালেদা জিয়া রেহাই পাবেন না। তার চাওয়া শেখ হাসিনার বিনাশও কোনো দিন সফল হবে না।
অপরদিকে, রাজধানীর রাসেল স্কয়ারে মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চায়, যারা ৩০ লাখ শহীদ নিয়ে বিতর্ক করতে চায় তারা রাষ্ট্রদ্রোহী, তারা দেশের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলার মানুষ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। পাকিস্তান অকার্যকর রাষ্ট্র। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে তারা (পাকিস্তান) বাধাগ্রস্ত করতে চায়। কোন বাধাই আমাদেরকে রুখতে পারবে না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়া এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা ধিক্কার জানাই।
তিনি বলেন, যতক্ষণ আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি ততক্ষণ কোন ষড়যন্ত্রই আমাদের কিছু করতে পারবে না। একাত্তরে আমরা বিজয়ী হয়েছি। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয়ী হয়েছি। আজকেও আমরা বিজয়ী হবো। যারা পরাজিত, তারা পরাজিত থাকবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যে পাকিস্তান বাংলাদেশে গণহত্যা করেছিল তারা আজও তা স্বীকার করে না। সেই পাকিস্তান আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা সঙ্গে পেয়েছে বেগম খালেদা জিয়াকে। পাকিস্তান যে ভাষায় কথা বলে, ৩০ লাখ শহীদদেও সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে বলে খালেদা জিয়াও পাকিস্তানের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়েছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিল, শেখ হাসিনার পতন না করে ঘরে ফিরবেন না। পাকিস্তান একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেছিল। খালেদা জিয়াও ৯৩ দিন অবরোধ করে আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে ঘরে ফিরে গেছেন।
রাসেল স্কয়ারের মানববন্ধন কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক ভোলা, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল হোসেন, আব্দুর রহমান প্রমুখ।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের পর্যায়ে আসেনি
১৪ দল আয়োজিত মানববন্ধনে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের দাবি উঠলেও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো পর্যায় এখনও আসেনি।
রাজধানীর আসাদগেটে মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো পর্যায় এখনও আসেনি। পর্যায় যখন আসবে তখন সবাই জানতে পারবে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, পরমাণু বোমা ছাড়া উন্নয়নে-অর্জনে সব সূচকে আমরা পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছি। জাতিসংঘের সমীক্ষায় সকল আর্থসামাজিক সূচকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে। পাকিস্তানের রাজধানীতে এই মুহূর্তেও ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং। করাচি শহরেও ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে। পাকিস্তানের এমন কোনো শহর নেই যেটা লোডশেডিং কবলিত নয়। এ ছাড়া দারিদ্র্য বিমোচনসহ সব সূচকে আমরা এগিয়ে। শুধু একটা জায়গায় আমরা পিছিয়ে, সেটা হলো পরমাণু বোমা। কিন্তু সে ধ্বংসের বোমা আমরা চাই না।
তিনি বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা পৃথিবীর সেরা রাষ্ট্রনায়কের একজন। পাকিস্তানের কোনো নেতা শেখ হাসিনার ধারের কাছেও নেই। এই দেশের মাটি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের কোনো দিন হজম করবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রাসেল স্কয়ারে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ডাক ও টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, মাহবুব আরা গিনি, শহিদুজ্জামান সরকার, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন প্রমুখ।
মানববন্ধনে নেতাকর্মীরা তাদের দাবির পক্ষে পাকিস্তান ও খালেদা জিয়াবিরোধী নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। একই সঙ্গে যুদ্ধাপরাধের দায়ে বাংলাদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা ও পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্যের জন্য খালেদা জিয়ার বিচার দাবি করেন তারা। এর আগে মানববন্ধনে অংশ নিতে ১৪ দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়।
গাবতলী থেকে শ্যামলী পর্যন্ত এলাকায় মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন, মে. জে. (অব.) আব্দুল হাফিজ মল্লিক, মিজবাউদ্দিন সিরাজ, ড. হাছান মাহমুদ, জাসদের শিরিন আকতার প্রমুখ।
শ্যামলী, কলেজ গেট, আসাদ গেট হয়ে ২৭নং সড়ক পর্যন্ত এলাকায় মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ওবায়দুল কাদের, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মির্জা আজম, ওয়ার্কার্স পার্টির আমিনুল ইসলাম গোলাপ প্রমুখ।
২৭নং সড়ক থেকে রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সতীশ চন্দ্র রায়, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা প্রমুখ।
রাসেল স্কয়ার, গ্রীণ রোড স্কয়ার হয়ে বসুন্ধরা মার্কেট পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির এনামুল হক এমরান প্রমুখ।
বসুন্ধরা সিটি শপিং মল থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক আ হ ম মোস্তফা কামাল, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল, ন্যাপের আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
সোনারগাঁও হোটেল মোড়, বাংলামোটর, রূপসী বাংলা হোটেল হয়ে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, একেএম রহমত উল্লাহ এমপি, ন্যাপের রুহুল আমিন প্রমুখ।
শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত এলাকায় মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, বীর বাহাদুর, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সাম্যবাদী দলের কমরেড প্রদ্যুত কুমার ফণি প্রমুখ।
মৎস্য ভবন থেকে প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, আবুল মাল আবদুল মুহিত, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সাম্যবাদী দলের আবু হামেদ সাহাবুদ্দিন প্রমুখ।
পল্টন মোড় থেকে নূর হোসেন স্কয়ার হয়ে গুলিস্তান মোড় পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মে. জে. (অব.) কেএম শফিউল্লাহ, ডা. দীপু মণি, আসাদুজ্জামান নূর, সাম্যবাদী দলের লুৎফর রহমান প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধু স্কয়ার থেকে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত এলাকায় নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়–য়া প্রমুখ।
ইত্তেফাক মোড় থেকে রাজধানী মার্কেট পর্যন্ত নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, ন্যাপের পার্থ মজুমদার, গণতন্ত্রী পার্টির মাহমুদুর রহমান বাবু প্রমুখ।
রাজধানী মার্কেট থেকে সায়েদাবাদ পর্যন্ত নেতৃত্ব ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচটি ইমাম, ড. মশিউর রহমান, নুরুল ইসলাম নাহিদ, জুনায়েদ আহমেদ পলক, গণতন্ত্রী পার্টির শেখ আলাউদ্দিন প্রমুখ।
সায়েদাবাদ থেকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, ফরিদুন্নাহার লাইলী, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, নসরুল হামিদ বিপু, ন্যাপের তাজুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির রফিক উদ্দিন প্রমুখ।
১৪ দলের মানববন্ধন কর্মসূচির কারণে গতকাল বিকালে রাজধানীতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলীর এই দীর্ঘ সড়কপথে মানববন্ধনকে কেন্দ্র করে ১৪ দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী রাস্তায় নেমে আসে। বিকাল ৪টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পূর্বঘোষিত সময়সূচি থাকলেও ১৪ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বিশেষ করে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতারা তাদের অনুসারী নিয়ে বেলা ২টার পর থেকেই রাস্তায় নামেন। তারা বিভিন্ন স্লোগানের মধ্য দিয়ে নিজেদের ব্যাপক শো-ডাউনও করেন। ফলে দুপুর থেকেই রাজধানী কার্যত স্থবির ও অচল হয়ে পড়ে। রাস্তায় বিভিন্ন পয়েন্টে স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে হাজারও পাবলিক পরিবহনগুলো। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় হাজার হাজার কর্মজীবী অফিস ফেরত ঘরফেরা সাধারণ মানুষকে। অবশ্য মানববন্ধন কর্মসূচির সমন্বয়কারী ১৪ দলের প্রধান সমন্বয়কারী স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে দেয়া তার বক্তব্যে তিনি কর্মসূচির জন্য সৃষ্ট সাময়িক ভোগান্তির জন্য নগরবাসীর কাছে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন।



 

Show all comments
  • Rasel ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:১১ পিএম says : 0
    ai dabir kono juktikota ami dekhsi na.
    Total Reply(0) Reply
  • ইব্রাহিম ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:১৫ পিএম says : 0
    সরকারে তো আপনারাই....... করে ফেললেই তো হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • ফারজানা শারমিন ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:২০ পিএম says : 0
    দেশের স্বার্থে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, তাহলে কো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • শরীফুল ইসলাম ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:২১ পিএম says : 0
    এতে আমাদের লাভ নয় লোকসান হবে। পাকিস্তানের কিছুই হবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের দাবি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ