পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের মুদ্রণ প্রকাশনা ও প্যাকেজিং শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক-কর নির্ধারণ করার যে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি সর্ব্বোচ্চ ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে এ শিল্প-সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো। তারা বলেছেন, হঠাৎ করে এত পরিমাণ শুল্ক-কর আরোপ করা হলে বই, পুস্তক, খাতা, প্যাকেজিং কার্টুনসহ কাগজনির্ভর সকল পন্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এসব শিল্প হুমকির মুখে পড়বে। এছাড়াও যুক্তিযুক্ত পরিমাণ শুল্ক-কর আরোপ না করলে, শুল্ক ফাাঁকি দিয়ে এসব কাঁচামালের বাজার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে সরকার অনেক পরিমাণ রাজস্ব হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে।
গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাতটি সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন; বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশন; বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতি, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অভ বাংলাদেশ যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের মুদ্রণ প্রকাশনা ও প্যাকেজিং শিল্পের প্রধান কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ডুপ্লেক্স বোর্ড, আর্ট পেপার, আর্ট কার্ড এবং ক্রাফট্ লাইনার পেপার, উন্নতমানের ছাপার কালি, মুদ্রণ প্লেট এবং বাঁধাইযোগ্য গ্লু (আঠা), ওষুধ শিল্পসহ দৈনন্দিন ব্যবহৃত সব ধরনের মোড়ক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সর্বস্তরে ব্যবহৃত হয়। এর বিপুল চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশের কোনো মিল-কারখানায় এসব পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করা হয় না।
এছাড়াও এনসিটিবির টেন্ডারে যে ১০ হাজার মেট্রিক টন ২৩০ জিএসএম আর্ট কার্ড প্রয়োজন হয়, তা-ও বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয় না। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকার থেকে প্লাস্টিক কাঁচামাল সামগ্রী আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক-কর নির্ধারণ করা আছে, যা আমাদের দেশে উৎপাদিত হয় না। অনুরূপভাবে আমাদের আমদানিকৃত উন্নত মানের কাঁচামাল (পেপার এবং পেপার বোর্ডসমূহ) দেশে উৎপাদিত হয় না বিধায় আমদানি পর্যায়ে কাঁচামালের শুল্ক-কর প্রস্তাবিত বাজেটে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা জনস্বার্থে ও রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে অপরিহার্য বলে অনুমিত হয়। এছাড়াও সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং শুল্ক ফাঁকি রোধে মুদ্রণ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল তথা দেশে অনুৎপাদিত উন্নত মানের পেপার ও পেপার বোর্ড আমদানিতে প্লাষ্টিক শিল্পের মতো এ খাতেও শুল্ক হার ২৫ শতাংশের এর পরিবর্তে ৫ শতাংশ করা হলে এসব পণ্য-সামগ্রী আমদানীর ক্ষেত্রে বিরাজমান বিশৃঙ্খল অবস্থার অবসান ঘটবে এবং বন্ডের অপব্যবহার রোধক্রমে রাজস্ব আয় বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এফবিসিসিআই-এর সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুল ইসলাম ভরসা, বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান শহীদ সেরনীয়াবাত, এফবিসিসিআই-এর পরিচালক রাব্বানী জব্বার, চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ-এর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল, দি বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি মো. জুয়েল, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল এবং বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফেকচারার্স সভাপতি বাসার পাটোয়ারি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।